Kerala-Amoeba: কেরলে বিরল মস্তিষ্কখেকো অ্যামিবার দাপট বেড়েছে। সেখানকার স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জ কেরল বিধানসভায় জানিয়েছেন, ২০১৬ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত বিরল মস্তিষ্কখেকো অ্যামিবায় মাত্র আট জন আক্রান্ত হয়েছিলেন। কিন্তু, এবছর এখনও পর্যন্ত দক্ষিণের এই প্রান্তিক রাজ্যে সংখ্যাটা বেড়ে হয়েছে ২৯।
একনজরে:
- ২০১৬ থেকে ২০২৩, কেরলে বিরল মস্তিষ্কখেকো অ্যামিবায় আক্রান্ত মাত্র আট জন।
- এবছর কেরলে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২৯। মৃতের সংখ্যা পাঁচ জন।
- ১৯৬২ থেকে ২০০৩ অবধি আমেরিকায় আক্রান্তের সংখ্যা ১৬৪, যার মধ্যে চার জন জীবিত।
মোট ছয় জেলা থেকে আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে। যার মধ্যে তিরুবনন্তপুরমে সংখ্যাটা সবচেয়ে বেশি, ১৫ জন। বীণা জর্জের দাবি, আক্রান্ত ২৯ জনের মধ্যে ২৪ জন বেঁচে আছেন। বেঁচে যাওয়ার সংখ্যা আমেরিকার থেকে অনেক বেশি। কারণ, আমেরিকার ইউএস সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন সেন্টার জানিয়েছে, ১৯৬২ থেকে ২০০৩ সালের মধ্যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১৬৪ জন মস্তিষ্কখেকো অ্যামিবার দ্বারা আক্রান্ত হয়েছিলেন। যার মধ্যে মাত্র চার জন বেঁচে আছেন।
প্রাইমারি অ্যামিবিক মেনিনগোয়েনসেফালাইটিস (পিএএম/PAM)-কে মস্তিষ্কখেকো বা 'ব্রেন ইটিং অ্যামিবা' বলা হয়। এই অ্যামিবা আবার জীবিত অ্যামিবা নেগলেরিয়া ফাউলেরি দ্বারা সৃষ্টি হয়। নেগলেরিয়া ফাউলেরি উষ্ণ, মিঠে জল এবং মাটিতে থাকে। যা নাক দিয়ে শরীরে ঢুকলে মানুষকে সংক্রমিত করে।
সে যাই হোক, আমেরিকা যেখানে সাফল্য পাচ্ছে না, সেখানে মস্তিষ্কখেকো অ্যামিবার বিরুদ্ধে কেরল কীভাবে সাফল্য পাচ্ছে? এই প্রশ্নেরও উত্তর দিয়েছেন কেরলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন, জনসচেতনতা বৃদ্ধি, খবর পাওয়া মাত্রই প্রতিটি অ্যামিবা আক্রমণের ঘটনা খতিয়ে দেখা, পরিস্থিতি যাতে খারাপ না হয় সেজন্য যথাযোগ্য ব্যবস্থা গ্রহণ, মস্তিষ্কখেকো অ্যামিবার আক্রমণ থেকে কেরলের আক্রান্তদের রক্ষা করছে।
ভারতে মস্তিষ্কখেকো অ্যামিবার ইতিহাস
ভারতে মস্তিষ্কখেকো অ্যামিবার প্রথম হদিশ মিলেছিল ১৯৭১ সালে। সেই সময় থেকে গত বছর পর্যন্ত ভারতে মস্তিষ্কখেকো অ্যামিবা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১২-র কাছাকাছি। কেরলে প্রথমবার এই অ্যামিবা আক্রান্তের খোঁজ মেলে ২০১৬ সালে। কেরলের যে বাসিন্দা প্রথমবার মস্তিষ্কখেকো অ্যামিবার আক্রমণ থেকে রক্ষা পেয়েছে, তার নাম আফানান জসিম। বয়স ১৪ বছর। এই কিশোর বিশ্বের ১১তম মানুষ, যে মস্তিষ্কখেকো অ্যামিবার হাত থেকে রক্ষা পেল।
আরও পড়ুন- দক্ষিণ কোরিয়া থেকে প্রথমবার সাহিত্যে নোবেল, পুরস্কার পাওয়ার কথা শুনে চমকে গেলেন কাং
এবছর কেরলে মস্তিষ্কখেকো অ্যামিবা হামলার সংখ্যা বাড়ার কারণ কী? এই প্রশ্ন অনেকেরই। এর পিছনে তিনটি কারণ আছে বলে মনে করছে কেরলের স্বাস্থ্য দফতর। কারণগুলো হল- ১) অ্যাকিউট এনসেফালাইটিস সিন্ড্রোম (AES)-এর পরীক্ষার সংখ্যা বৃদ্ধি। এই সিনড্রোম মস্তিষ্কখেকো অ্যামিবা থেকেও হয়। ফলে, তেমনটা হওয়ার সঙ্গেই পরীক্ষায় ধরা পড়ে যাচ্ছে। ২) জলবায়ু পরিবর্তন, ৩) পরিবেশ দূষণ। জুলাইয়ে কেরল অ্যামিবিক মেনিনগোয়েনসেফালাইটিস রোখার জন্য একটি বিশেষ চিকিত্সা প্রোটোকল এবং একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং পদ্ধতি চালু করেছে। যা কাজে দিচ্ছে বলেই কেরলের স্বাস্থ্য দফতরের দাবি। মস্তিষ্কখেকো অ্যামিবা রুখতে এমন স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং পদ্ধতি ভারতে প্রথম কেরলেই চালু হল বলেই সেখানকার স্বাস্থ্য দফতরের দাবি।