US Stocks, Indian Stocks & Understanding of the Bear Market: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজার ফের পতনের মুখে পড়েছে। গত সোমবার (৭ এপ্রিল ২০২৫) মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নতুন করে চাপিয়ে দেওয়া শুল্কনীতি থেকে সরে আসার কোনও ইঙ্গিত না দেওয়ায়, বিশ্বজুড়ে শেয়ারবাজারে বড় ধরনের ধস নেমেছে। এই পরিস্থিতিতে S&P 500 সূচক সাময়িকভাবে ‘বিয়ার মার্কেট’-এর সীমা ছুঁয়েছে। যা ২০২২ সালের পর এই প্রথম।
বিয়ার মার্কেট কী?
বিয়ার মার্কেট বলতে বোঝায় যখন একটি শেয়ার সূচক তার সাম্প্রতিক সর্বোচ্চ অবস্থান থেকে অন্তত ২০% পড়ে যায়। এটি কোনও সংজ্ঞা নয়। বরং বোঝার জন্য এই কথাগুলো মনে রাখা ভালো। বিয়ার মার্কেট-এর বিপরীতে যে শব্দগুলো ব্যবহার হয়, সেটা হল 'বুল মার্কেট'। যার অর্থ, সূচকের অন্তত ২০% বৃদ্ধি।
কেন হয় বিয়ার মার্কেট?
বিয়ার মার্কেট পরিস্থিতি তখনই তৈরি হয়, যখন বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রিতে বেশি আগ্রহী হন। এর পিছনে থাকতে পারে অর্থনৈতিক দুর্বলতা, মন্দার আশঙ্কা, বা বাজারের অতিরিক্ত মূল্যায়নও। যুদ্ধ, তেল সংকটের মত অ-অর্থনৈতিক কারণও বিয়ার মার্কেট পরিস্থিতির জন্য দায়ী হতে পারে।
ইতিহাস ও প্রভাব:
গত ১৫০ বছরে মার্কিন বাজার প্রায় প্রতি ৬ বছরে একবার করে বিয়ার মার্কেটে প্রবেশ করে চলেছে। এই সময়ে বিয়ার মার্কেট স্থায়ী হয়েছে গড়ে ১৮ মাসেরও বেশি (১৮.৯ মাস)। তবে সব বিয়ার মার্কেটের জন্য যে আর্থিক মন্দা নেমে আসবেই, তার কোনও মানে নেই। ভারতের বাজারও ২০০৮ সালে আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সংকটে একটি বড় বিয়ার মার্কেটের পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিল।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজারে সাম্প্রতিক বড় ধসের প্রভাব ভারতীয় শেয়ারবাজারেও স্পষ্টভাবে ধরা পড়েছে। ৭ এপ্রিল, ২০২৫ তারিখে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্ক নীতির ঘোষণার পর বিশ্বব্যাপী বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ বৃদ্ধি পেয়েছে। যার ফলে ভারতের শেয়ারবাজারের সূচকেরও উল্লেখযোগ্য পতন ঘটেছে।
ভারতীয় শেয়ারবাজারে প্রভাব:
-
সূচকের পতন: সোমবার, নিফটি ৫০ সূচক ৩.২৪% কমে ২২,১৬১.১ পয়েন্টে এবং বিএসই সেনসেক্স ২.৯৫% হ্রাস পেয়ে ৭৩,১৩৭.৯ পয়েন্টে বন্ধ হয়েছে। যা গত ১০ মাসের মধ্যে একদিনে সবচেয়ে বড় পতন।
-
ক্ষতি হয়েছে যেসব শেয়ারের: তথ্যপ্রযুক্তি, ধাতু এবং আর্থিক ক্ষেত্রের শেয়ারের দাম এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষ করে, টাটা মোটরসের শেয়ার ৫.৬% এবং ট্রেন্টের শেয়ারের দাম ১৫% কমে গিয়েছে।
-
বৈদেশিক বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাহার: বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ভারতীয় বাজার থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে মূলধন তুলে নিয়েছেন। যা বাজারে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করেছে।
মুদ্রাবাজারে প্রভাব:
মার্কিন শুল্কের ফলে এশীয় ইক্যুইটি বাজারে মন্দাভাব দেখা দেওয়ায় ভারতীয় টাকার দাম মার্কিন ডলারের তুলনায় কমেছে। এক মাসের নন-ডেলিভারেবল ফরওয়ার্ডস ইঙ্গিত দিয়েছে যে প্রতি মার্কিন ডলারের মূল্য হিসেবে টাকা ৮৫.৭৫-৮৫.৮০-এর চেয়েও কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যা আগে ছিল ৮৫.২৩৫০। অর্থাৎ, টাকার দাম পড়েছে।
বাজারের পুনরুদ্ধার:
তবে, পরে বাজারের কিছুটা অগ্রগতিও ঘটেছে। ৮ এপ্রিল, ২০২৫ তারিখে, সেনসেক্স কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। যা বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
আরও পড়ুন- কেকেআর-এলএসজি ম্যাচে বদলাচ্ছে উইকেট? গরম কাহিল হবেন নাইটরা?
ভবিষ্যৎ দৃষ্টিভঙ্গি:
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন যে বাজারের বর্তমান অস্থিরতা অব্যাহত থাকতে পারে। তবে ভারতের শক্তিশালী অর্থনীতি এবং অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগকারীদের সমর্থন দীর্ঘমেয়াদে বাজারকে স্থিতিশীল করতে সাহায্য করতে পারে।