Modi’s Austria visit: মোদীর অস্ট্রিয়া সফর, কার্যত মস্কো এবং ওয়াশিংটন তথা পশ্চিমী দুনিয়াকে বিশেষ বার্তা দিল? এমনটাই কিন্তু, মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। কারণ, অস্ট্রিয়ার সঙ্গে নেহরু জমানায় ভারত যে জোট নিরপেক্ষ বিশ্ব রাজনীতি শুরু করেছিল, সেটাকেই যেন এগিয়ে নিয়ে গেলেন ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নেহরু জমানায় আন্তর্জাতিক দুনিয়া ঠান্ডা যুদ্ধে বিভক্ত হয়ে পড়েছিল। সেখানেই জোটনিরপেক্ষ রাজনীতি যেন নতুন ধারার সূচনা করেছিল। যার অন্যতম কান্ডারি ছিল ভারত এবং অস্ট্রিয়া। বর্তমানে ইউক্রেনকে ইস্যু করে আমেরিকার নেতৃত্বাধীন ন্যাটো জোট আর রাশিয়ার মধ্যে প্রবল ছায়াযুদ্ধ চলছে। সেখানেই জোটনিরপেক্ষ বিশ্ব রাজনীতির প্রয়োজনীয়তা যেন আরও বেশি করে দেখা দিয়েছে।
ইন্দিরার পরে মোদী
নেহরু এবং পরবর্তীতে ইন্দিরা জমানার পর ভারত জোটনিরপেক্ষ রাজনীতি থেকে কিছুটা হলেও সরে এসেছিল। তার ফলে, ভারতের কাছে অস্ট্রিয়াও ব্রাত্য হয়ে গিয়েছিল। ফের, সেই জোট নিরপেক্ষ রাজনীতির প্রয়োজনীয়তা দেখা দেওয়ায় ভারতের কাছে অস্ট্রিয়াও ফের গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ১৯৮৩ সালের জুনে ইন্দিরা গান্ধী অস্ট্রিয়া সফর করেছিলেন। তারপর প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদী অস্ট্রিয়া সফর করলেন।
অস্ট্রিয়া ন্যাটোতে নেই
মস্কোতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের পরই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় সফর করেছেন। তাঁর এই সফরের সূচিটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, অস্ট্রিয়া এমন একটি ইউরোপীয় দেশ যা ন্যাটোর অংশ নয়। এই ন্যাটো হল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন রাশিয়া বিরোধী ট্রান্স-আটলান্টিক সামরিক জোট। যার ৩২ জন নেতা চলতি সপ্তাহে আমেরিকার রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে একত্রিত হয়েছিলেন জোটের বার্ষিকী পালনের জন্য।
রাশিয়াকে মোদীর বার্তা
গোটা বিশ্ব দেখেছে যে সফরে মোদী রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে বলেছেন যে, ইউক্রেনে নিষ্পাপ শিশুদের মৃত্যু 'বেদনাদায়ক'। আর, তা কেবল হৃদয়ে আঘাত করে। একইসঙ্গে মোদী বলেছেন যে, 'বোমা, বন্দুক এবং বুলেটের মধ্যে শান্তি আলোচনা সফল হয় না, কোনও সংঘাতের সমাধান যুদ্ধক্ষেত্রে পাওয়া যায় না। আলোচনার মধ্যেই সমাধান মেলে।'
কিয়েভের শিশু হাসপাতালে হামলা
কিয়েভের একটি শিশু হাসপাতালে সন্দেহভাজন রাশিয়ান ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ভারতের গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করতেই মোদী তাঁর বিবৃতি দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী যখন রাশিয়া সফরে ছিলেন, তখন এই হামলা চালানো হয়েছিল। এর আগে, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে যখন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর পুতিন এবং তাঁর বিদেশমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের সঙ্গে দেখা করতে মস্কোয় গিয়েছিলেন, তখনও রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইউক্রেনে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছিল। সেবার ইউক্রেনের ওপর রাশিয়া সবচেয়ে বড় বিমান হামলা চালায়। সেই হামলায় কমপক্ষে ৩১ জন প্রাণ হারিয়েছিলেন বলে অভিযোগ করেছিল ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে রাশিয়া ইউক্রেনে লাগাতার হামলা চালাচ্ছে।