Advertisment

Explained: একই দেশে পুলিশের এক উর্দির কথা মোদীর মুখে, আদৌ কি তা প্রয়োজনীয়?

আইন-শৃঙ্খলা রাজ্যের বিষয়। উর্দির জন্য কি পুলিশ চিনতে রাজ্যবাসীর অসুবিধা হয়? এই প্রশ্নও তুলছেন অনেকে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Modi_Police

শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) বিভিন্ন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং শীর্ষ পুলিশকর্তাদের নিয়ে প্রথম চিন্তন শিবিরে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখানে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী ভারতীয় পুলিশ বাহিনীর জন্য 'এক জাতি, এক ইউনিফর্ম'-এর ধারণাটি তুলে ধরেন। ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'পুলিশের জন্য এক জাতি, এক উর্দি' একটি ধারণা মাত্র।

Advertisment

এক জাতি, এক উর্দি
আমি এটি আপনাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছি না। কিন্তু, এটি হতে পারে। সেটা পাঁচ, ৫০ বা ১০০ বছরেও ঘটতে পারে। সমস্ত রাজ্যের এব্যাপারে ভাবা উচিত। সারা দেশে পোস্ট বক্সকে অভিন্নভাবে চিহ্নিত করা যায়। দেখা উচিত যাতে ইউনিফর্মের জন্য পুলিশকেও এরকম অভিন্নভাবে চিহ্নিত করা যায়।'

মোদীর আহ্বান
প্রধানমন্ত্রী মোদির এই 'এক জাতি, অভিন্ন জাতি'র পরামর্শ তাঁর দেশজুড়ে অভিন্ন নীতি প্রবর্তনের চেষ্টার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। আগস্টে, রাসায়নিক ও সার মন্ত্রক ঘোষণা করেছে যে কেন্দ্র 'এক দেশ এক সার' প্রকল্প বাস্তবায়িত করেছে। ভারত সরকার ২০১৯ সালের আগস্টে 'এক দেশ, এক রেশন কার্ড' প্রকল্প চালু করেছিল। মোদী বারবার 'এক জাতি, এক নির্বাচন' এবং সমস্ত নির্বাচনের জন্য একটি ভোটার তালিকা গ্রহণের পক্ষে।

মোদীর কথা
তাঁর পুলিশের পোশাক প্রকল্প নিয়ে বলার সময় মোদী বলেন, 'আমাদের জাতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে। বর্তমানে আমাদের দেশে এক জাতি, এক রেশন কার্ড রয়েছে। এক জাতি, এক গতিশীলতার কার্ড রয়েছে। এক জাতি, একটি গ্রিড, এক জাতি, এক ভাষা নীতি চালুর চেষ্টা চলছে। ঠিক একইভাবে সমস্ত রাজ্যের জন্য এক জাতি, এক অভিন্ন নীতির কথা ভাবা উচিত।'

আইনশৃঙ্খলা রাজ্যের বিষয়

ভারতীয় সংবিধান পুলিশ বাহিনীকে রাজ্য সরকারের অধীনে রাখে। দেশের ২৮টি রাজ্যের প্রত্যেকটির নিজস্ব পুলিশবাহিনী রয়েছে। সরকারি নির্দেশ এবং পুলিশ উভয়কেই সংবিধানের সপ্তম তফসিলের তালিকা II (রাজ্য তালিকা)-এ স্থান দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের মধ্যে ক্ষমতার বিভাজন রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকার যদি প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করে, তা কীভাবে বাস্তবায়িত হবে, তা স্পষ্ট নয়।

বেশিরভাগ উর্দিই খাকি
ভারতে পুলিশকর্মীদের বেশিরভাগেরই উর্দির রঙ খাকি। তবে তা বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্নরকম। যেহেতু রাজ্য সরকার এবং স্থানীয় পুলিশবাহিনী তাদের কর্মীদের জন্য উর্দি ঠিক করে, তাদের পোশাকে মাঝে মধ্যেই অসঙ্গতি দেখা যায়। যেমন কলকাতা পুলিশ সাদা উর্দি পরে। পুদুচেরি পুলিশের কনস্টেবলরা তাদের খাকি উর্দির সঙ্গে একটি উজ্জ্বল লাল টুপি পরেন। দিল্লি ট্রাফিক পুলিশের কর্মীরা সাদা এবং নীল উর্দি পরেন।

পুলিশের উর্দিতে বদল

বছরের পর বছর ধরে, বিভিন্ন রাজ্যের পুলিশ তাদের কর্মীদের জন্য উর্দি সংস্কারের বিভিন্ন প্রচেষ্টা নিয়েছে। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে তাদের কর্মীদের উর্দির রঙের বৈচিত্র্য দূর করার জন্য মহারাষ্ট্র পুলিশ খাকি ফ্যাব্রিক সরবরাহের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নিজেরাই খাকি কাপড় কিনেছেন বাহিনীর যে সদস্যরা, তাদের ইউনিফর্ম অনেকটাই আলাদা ধাঁচের।

আরও পড়ুন- অনুব্রত ‘প্রভাবশালী’, ফের খারিজ জামিনের আবেদন, জেলেই থাকবেন কেষ্ট

কর্ণাটক পুলিশের ঘোষণা
২০১৮ সালের অক্টোবরে কর্ণাটক পুলিশ ঘোষণা করেছে যে মহিলা কর্মীরা ডিউটির সময় আর খাকি শাড়ি পরবেন না, বরং খাকি শার্ট এবং ট্রাউজার পরবেন। এটি নারী পুলিশদের কাজ সহজ করবে এবং অপরাধ মোকাবেলায় তাদের কার্যকারিতা বাড়াবে।

মহারাষ্ট্র পুলিশের ঘোষণা
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে, মহারাষ্ট্রের ডিজিপি পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর (পিএসআই) থেকে ডেপুটি সুপারিনটেনডেন্ট (ডিওয়াইএসপি) পদমর্যাদার অফিসারদের জন্য 'টিউনিক ইউনিফর্ম' পরার অভ্যাস বন্ধের নির্দেশ জারি করেন। এই টিউনিক ইউনিফর্ম হল ব্রিটিশ যুগের ওভারকোট। যা পুলিশ বাহিনীর ঐতিহ্যবাহী ইউনিফর্মের ওপরে পরা হয়। এটি বন্ধ করা হয়েছে, কারণ পুলিশকর্মীরা অভিযোগ করেছেন যে এটি গরম আর নোংরা আবহাওয়ায় অস্বস্তিকর। বছরে দুই থেকে তিনবার আনুষ্ঠানিক প্যারেডের মধ্যে এটা পরতে হত। বাকি সময় দরকারও ছিল না। তাই, এটি তৈরি করাও অত্যন্ত অপ্রয়োজনীয় ব্যয়।

দিল্লি পুলিশের উদ্যোগ
চলতি বছরের মার্চে, দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস রিপোর্টে জানিয়েছিল যে দিল্লি পুলিশ ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ফ্যাশন টেকনোলজি (NIFT) কে নতুন ইউনিফর্ম ডিজাইন করতে বলেছে। এই নতুন ইউনিফর্ম যেমন উজ্জ্বল হবে। তেমনই আরামদায়কও হবে। এজন্য দিল্লি পুলিশের সদর দফতর ৫০ লক্ষ টাকা ব্যয় বরাদ্দও করেছে।

Read full story in English

Modi Government Pune Police Uniform Dress Corde
Advertisment