Advertisment

বর্ষায় কি বাড়বে মিউকরমাইকোসিসের দাপট? সতর্ক করছেন চিকিৎসকেরা

Mucormycosis fungus Treatment: বর্ষার মধ্যে এই রোগের দাপট বৃদ্ধি পাওয়ার মূল কারণ হিসেবে ছত্রাকের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যকেই দায়ী করেছেন চিকিৎসকেরা।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
মিউকরমাইকোসিস, করোনা, কোভিড-১৯, covid-19 prevention, कोरोना समाचार / coronavirus news, ব্ল্যাক ফাঙ্গাস, corona vaccine registration, patanjali corona medicine, russia corona vaccine, corona cases in india in last 24 hours, symptoms of covid-19, coronavirus vaccine latest update, Strain, Preventive healthcare, Fever, Coronavirus, Cowin, Vaccination, Co Win App, Vaccine, delhi, Bengal, mucormycosis symptoms, mucormycosis treatment, mucormycosis covid, mucormycosis diagnosis, mucormycosis fungus, mucormycosis after covid, mucormycosis ayurvedic treatment, মিউকরমাইকোসিস হলে কী করতে হবে, mucormycosis amphotericin b dose, mucormycosis black fungus, mucormycosis black fungus symptoms, amphotericin b, liposomal amphotericin b mucormycosis, mucormycosis cases, mucormycosis causes, mucormycosis diabetes

মাস্কের ভুল ব্যবহার এবং অপরিস্কার স্থান থেকে অজান্তে মিউকরমাইকোসিসের শিকার হচ্ছেন অনেকে।

অতিমারির শেষ হতে না হতেই মহামারির রূপ নিয়ে দেশে এসেছে 'মিউকরমাইকোসিস' (Mucormycosis) নামক ছত্রাক ঘটিত রোগ। প্রাথমিকভাবে একে 'ব্ল্যাক ফাঙ্গাস' (Black Fungus) নামে দেগে ভয়াবহতাকে বৃদ্ধি করলেও, চিকিৎসক থেকে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেছেন এই নামের রোগের সঙ্গে মিউকরমাইকোসিসের কোনও যোগ নেই। ছত্রাকঘটিত এই রোগটি অতিমারি আবহে 'প্রাদুর্ভাব'-এ পরিণত হলেও চিকিৎসা ক্ষেত্রে 'বিরল' নয়। অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিক, ফুসফুসের সমস্যা কিংবা ক্যানসার আক্রান্ত এমন রোগীদের ক্ষেত্রে মিউকরমাইকোসিসের ভয়াবহতা আগেও ছিল, এখনও আছে বলেই জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। তবে বর্ষায় কিন্তু কিছুটা হলেও বাড়তে পারে এই রোগের দাপট। কেন এমনটা বলা হচ্ছে?

Advertisment

ছত্রাক ঘটিত রোগ বলেই স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়ায় এই রোগের প্রাদুর্ভাব বজায় থাকতে পারে বলেই মত চিকিৎসকদের একাংশের। যদিও দেশে এবং রাজ্যে এখন করোনা গ্রাফ নিম্মমুখী। কোভিডের সংক্রমণ কমলে মিউকরমাইকোসিসও কমতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছিল। এ প্রসঙ্গে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে সংক্রমক রোগ বিশেষজ্ঞ এবং ক্যালকাটা স্কুল অফ ট্রপিকাল মেডিসিনের প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান ডা: অমিতাভ নন্দী বলেন, "এখন দু'ধরনের ঘটনা ঘটছে কোভিড পরবর্তী পর্যায়ে। এক, কোভিড থেকে সেরে ওঠার পরও জ্বর ও অন্যান্য উপসর্গ থাকছে। কেন হচ্ছে এখনও তা জানা নেই। দুই, অন্য ইনফেকশন হচ্ছে এবং রোগীর দেহে জ্বর থাকছে। এটা এ বছরই হয়েছে, আগের বছর ছিল না। আসলে কোভিডের জেরে শরীরে কমে যাচ্ছে CD4+ কোষ, যা দেহে অনাক্রমতা তৈরিতে সাহায্য করে। এই কোষগুলি কমে যাওয়ার ফলে দেহে মিউকর কিংবা অ্যাসপারজিলাসের (Aspergillus) মতো ছত্রাক আক্রমণ হচ্ছে অনায়াসে। চিকিৎসা পরিভাষায় একে বলা হয়- opportunistic infections।"

আরও পড়ুন, ক্রমশ কেন দাম বাড়ছে রান্নার তেলের?

চিকিৎসক অমিতাভ নন্দীর মতে, "করোনা কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই রোগ কমে যাওয়ার কথা। সাধারণ হিসেব বলে ৪ লক্ষ কোভিড রোগীদের মধ্যে যদি ৪ হাজার জন মিউকরমাইকোসিসে আক্রান্ত হয় তাহলে পরবর্তীতে আক্রান্ত কমে ২ লক্ষ হলে এই রোগও ২ হাজার হওয়ার কথা। তবে কম বেশি হতেই পারে। শুধু তো কোভিড নয়। দেখা যাচ্ছে মিউকরমাইকোসিস রোগীরা যেখানে রয়েছে সেই ওয়ার্ডে লিউকেমিয়া, HIV রোগীরাও রয়েছে। তাদের দেহেও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম। যেহেতু এটি বায়ুবাহিত ফলে অনায়াসে কোভিড আক্রান্ত নয় এমন রোগীর দেহেও ছড়িয়ে পড়ছে এই ছত্রাকটি।"

মিউকরমাইকোসিস নিয়ে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে শিশুবিশেষজ্ঞ এবং ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথের মলিকিউলার বায়োলজির সংক্রমক ব্যাধির ইনচার্জ ডা: সুমন পোদ্দার জানান যে, এই রোগটি আগেও ছিল। ভবিষ্যতেও থাকবে। মিউকরমাইকোসিস নতুন কোনও রোগ হয়। চিকিৎসক বলেন, "রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়াতেই এই ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। কোভিডের জেরে এমনিতেই ফুসফুস দুর্বল হয়ে পড়ছে। তাই রোগও সেখানে বাসা বাঁধছে অনায়াসে। নিউমোনিয়া হচ্ছে অনেকের। আর বর্ষায় কিংবা ভেজা স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়ায় এমনিতেই ফাঙ্গাল গ্রোথ বেশি হয়ে থাকে। এগুলিই মিউকরমাইকোসিসের বাড়বাড়ন্তের এবারের সম্ভাব্য কারণ হতে পারে।" তবে বারবার গরম জলের ভেপার নেওয়া এবং মাস্ক না শুকিয়ে (Air Dry) কিংবা না ধুয়ে পরা নিয়েও সতর্ক করেছেন চিকিৎসক। তিনি জানিয়েছেন যে অজান্তেই এই সাধারণ ভুল থেকে মিউকরমাইকোসিসের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

আরও পড়ুন, করোনার কবলে বয়স্ক প্রাণ! কীভাবে ঝুঁকির মধ্যেও জীবন বাঁচাচ্ছেন প্রবীণেরা?

অর্থাৎ বর্ষার মধ্যে এই রোগের দাপট বৃদ্ধি পাওয়ার মূল কারণ হিসেবে ছত্রাকের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যকেই দায়ী করেছেন চিকিৎসকেরা। ডা: অমিতাভ নন্দীর কথায়, "বর্ষাকালে যদি চামড়ার ব্যাগ, জুতো দীর্ঘদিন অব্যবহৃত অবস্থায় রেখে দেওয়া হয় তাহলে দেখা যায় সেখানে ছত্রাক জন্মেছে। এই ঋতুতে যেকোনও ছত্রাকই বৃদ্ধি পায়। এবার যেহেতু কোভিড রয়েছে সেই কারণে মিউকর কিংবা অ্যাসপারজিলোসিস আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।"

মিউকরমাইকোসিস হলে কী করা উচিত, বুঝবেন কী করে যে রোগী আক্রান্ত?

ডা: সুমন পোদ্দার বলেন, "কোভিড থেকে সুস্থ হয়ে উঠলেও পরবর্তী দুই থেকে তিন মাস অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে রোগীকে। কারণ তাঁদের দেহে সুরক্ষার শক্তি কিন্তু একেবারে তলানিতে। কোভিডের অ্যান্টিবডি তৈরি হলেও আনুসাঙ্গিক প্রতিরোধ কমে যাচ্ছে শরীরে। সেক্ষেত্রে কোনও রোগী যদি দেখেন মাথার একদিন ব্যথা করছে, কিংবা চোখের পিছনে কিংবা নাকের দুই পাশ যেখানে সাইনাস থাকে সেখানে ব্যথা, সর্দিতে রক্ত এরকম উপসর্গ দেখলে সঙ্গে সঙ্গেই চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত। মিউকরমাইকোসিস প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়ে চিকিৎসা করলেও ৫০ শতাংশ মর্টালিটি কিন্তু থাকে। একাধিক ইনফেকশন থেকে এই রোগ হতে পারে।"

এই রোগ থেকে মুক্ত হলেও কী কী করণীয়?

দুই বিশিষ্ট চিকিৎসক জানিয়েছেন-

  • হাই প্রোটিনযুক্ত এবং পুষ্টিকর খাওয়ার খাওয়া,
  • দুর্বলতা কাটলে শুয়ে বসে না থেকে নিজেকে কাজের মধ্যে সচল রাখা। স্বাভাবিক জীবনে ফেরা গুরুত্বপূর্ণ।
  • Deep Breathing Exercise করা। ফুসফুস যথাযথভাবে সচল না রাখলে সেখানে ফাইব্রোসিস হতে পারে।
  • ধূমপান এবং মদ্যপান ছেড়ে দেওয়া,
  • বারবার ভ্যাপার নেওয়া উচিত নয়,
  • মাস্ক ব্যবহারে যত্নশীল হওয়া এবং তা পরিছন্ন রাখা,
  • বাড়ি, ঘর পরিস্কার পরিছন্ন রাখা এবং থাকা।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

Mucormycosis coronavirus health COVID-19 Black Fungus
Advertisment