Manipur conflict: কাউতরুক গ্রামে বোমা বৃষ্টির দুই সপ্তাহ পর, বারুদ এবং ছাইয়ের গন্ধ এখনও মণিপুরের বাতাসে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কিছু বাড়ির টিনের ছাদে ফাঁকা গর্ত, একটি বাড়ির দেওয়ালে বুলেটের গর্ত। প্রায় ছাই হয়ে যাওয়া বেশ কয়েকটি বাড়ি, পোড়া ধাতব জিনিসপত্রের স্তূপ। সব এখনও বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে পার্বত্য রাজ্যে। প্রশাসন যখন দাবি করেছে পরিস্থিতি শান্ত হয়ে এসেছে, সেই সময় মণিপুরের প্রান্তিক জেলাগুলোয় সংঘর্ষ ঘটেই চলেছে। এমনটাই দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের। তাঁদের অভিযোগ, এই শান্তির সময়টায় অন্ততপক্ষে ৩০টা অশান্তির ঘটনায় পার্বত্য রাজ্যে রক্ত ঝরেছে। যা লাগাতার সংঘর্ষেরই অংশ।
'প্রান্ত এলাকা'য় সংঘর্ষ অব্যাহত
কুকি-জোমি-সংখ্যাগরিষ্ঠ কাংপোকপি জেলার পাহাড় শুরু হওয়ার আগে ইম্ফল পশ্চিমের মেইতি-সংখ্যাগরিষ্ঠ উপত্যকা জেলার শেষ গ্রাম কাউতরুক। গ্রামের একপাশে কানপোকপির পাহাড়ে ঢালু হয়ে গেছে একটি জঙ্গল। উপত্যকা এবং পার্বত্য জেলার মধ্যবর্তী সীমান্তে এই ধরনের গ্রামগুলো 'প্রান্ত এলাকা' বলে পরিচিত। বাসিন্দাদের অভিযোগ, সংঘর্ষে এই গ্রামগুলোই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কার্যত দুটি সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষে স্যান্ডউইচের অবস্থা হয়েছে এই গ্রামগুলোর। এখানে নিয়মিত গুলি চলেছে। বোমাবাজি হয়েছে। খুন-জখম হয়েছে।
কাউতরুকে হামলায় ড্রোন ব্যবহৃত হয়েছিল
কাউতরুক ১ সেপ্টেম্বর কয়েক ঘণ্টার গুলিবর্ষণ এবং বোমা হামলা দেখেছে। এই সময় বেশ কয়েকটি বাড়ি-ঘরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ওই দিন দুই ব্যক্তি বুলেটবিদ্ধ হন। যার মধ্যে রয়েছেন ৩১ বছর বয়সি এনগানবাম সুরবালা। এছাড়াও বুলেটবিদ্ধ হন একজন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি। তাঁরা শেষ পর্যন্ত গুলির আঘাতে মারা যান। সেই দিন গ্রামে বোমা ফেলার জন্য ড্রোনের ব্যবহার করা হয়েছিল বলেও অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। যা এই সংঘাতে একটি নতুন মোড় এনেছে। হিংসা ছড়ানোয় প্রযুক্তির ক্রমবর্ধমান ব্যবহার ইতিমধ্যেই তদন্তকারীদের স্ক্যানারে রয়েছে।
আরও পড়ুন- বামপন্থী দিসানায়েকের শ্রীলঙ্কা জয়! পিছনে চিনের হাত?
গ্রামের বাসিন্দার দাবি
কাউতরুক গ্রামের বাসিন্দা ৩৪ বছরের মহিলা থাংজাম নুংশিতোম্বি। তিনি জানিয়েছেন, বাঁচার জন্য শয্যাশায়ী ছাড়া গ্রামের প্রতিটি মানুষ কোনও না কোনও সশস্ত্র হামলাকারীদের সঙ্গ দিয়েছিল। অনেকে পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন প্রায় চার কিলোমিটার দূরে ফুমলোর ত্রাণশিবিরে। নুংশিতোম্বি জানিয়েছেন, তাঁর বাড়িও একদল হামলাকারী পুড়িয়ে দিয়েছে। তিনি তারপর বাধ্য হয়ে ফুমলো প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৈরি ত্রাণশিবিরে আশ্রয় নেন।