Advertisment

Nobel Peace Prize 2024: নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়া জাপানের সংগঠন কী করেছে জানেন? শুনলে চমকে উঠবেন

Nobel Peace Prize 2024: নোবেল শান্তি পুরস্কার ১৯০১ সাল থেকে দেওয়া হচ্ছে। নিরস্ত্রীকরণের চেষ্টার জন্য বহুবার এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। জাপানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইসাকু সাতোও ১৯৭৪ সালে এই পুরস্কার পেয়েছিলেন।

author-image
IE Bangla Web Desk
আপডেট করা হয়েছে
New Update
Nobel Peace Prize 2024: নোবেল শান্তি পুরস্কার।

Nobel Peace Prize 2024: শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য জাপানের সংগঠনটি দীর্ঘদিন ধরেই কাজ করে চলেছে। (ছবি- টুইটার)

Nobel Peace Prize 2024: হিরোশিমা-নাগাসাকি বোমা হামলায় বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের সংগঠন নিহন হিডানকিওকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। নোবেল কমিটি তাঁদের সামনে রেখে নিরস্ত্রীকরণের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরতে চায়। সেই জন্য এই পুরস্কার দিয়েছে। শুক্রবার, ১১ অক্টোবর পুরস্কারটি দেওয়া হয়েছে। লক্ষ্য হিসেবে বলা হয়েছে, 'পরমাণু অস্ত্রমুক্ত বিশ্ব গঠনের চেষ্টা'। নিহন হিডানকিওর সদস্যরা ১৯৪৫ সালে হিরোশিমা এবং নাগাসাকিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরমাণু বোমা হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের সামনে রেখে গড়ে উঠেছে। এই বেঁচে যাওয়া ব্যক্তি বা 'হিবাকুশা' যাকে বাংলায় বলা যেতে পারে, 'বোমা হামলার শিকার হওয়া মানুষ'- তাঁরা পরমাণু অস্ত্রের প্রসার রোধে বিশ্বব্যাপী আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

Advertisment

নিহন হিডানকিও কী?
বিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছিলেন, একটি পরমাণুর নিউক্লিয়াসকে একত্রিত করে শক্তিশালী ধ্বংসাত্মক বোমা তৈরি সম্ভব। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এনিয়ে গবেষণা চূড়ান্ত আকার নেয়। শুধুমাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রই নয়। এই গবেষণা চালাচ্ছিল ব্রিটেন, জার্মানি, সোভিয়েত রাশিয়া এবং জাপানও। ১৯৪৫ সালের জুলাইয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ওই বোমা ফেলার আগে জার্মানি যুদ্ধে পরাজিত হয়েছিল। জাপানিদেরকে তাদের নিজেদের দ্বীপে ফিরে যেতে বাধ্য করা হয়েছিল। হ্যারি ট্রুম্যানের নেতৃত্বাধীন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জাপানের সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী স্থলযুদ্ধ এড়াতে চাইছিল। আবার জাপানের পূর্বদিকে সোভিয়েত সেনা যাতে প্রবেশ করতে না পারে, সেই ব্যাপারেও সতর্ক ছিল আমেরিকা।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরমাণু বোমা

আমেরিকা ৬ অগাস্ট হিরোশিমায় যে পরমাণু বোমা ফেলেছিল, তার নাম ছিল ‘লিটল বয়’। মার্কিন সরকারের ম্যানহাটন প্রকল্পের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, 'যাঁরা বিস্ফোরণস্থলের সবচেয়ে কাছে ছিলেন, তাঁরা তৎক্ষণাৎ মারা যান। তাঁদের দেহ কালো ছাইয়ে পরিণত হয়। গ্রাউন্ড জিরোর এক মাইলের মধ্যে প্রায় প্রতিটি ঘরবাড়ি থেকে যা কিছু ছিল, সব ধ্বংস হয়ে যায়। ৭০ হাজারেরও বেশি মানুষ তৎক্ষণাৎ মারা যায়। পরে, মৃতের সংখ্যা ১ লক্ষ ছাড়িয়ে যায়।' সেই ধ্বংসের মাত্রা বোঝার আগেই ৯ অগাস্ট, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নাগাসাকিতে 'ফ্যাট ম্যান' নামে একটি বোমা নিক্ষেপ করে। যাতে কমপক্ষে ৪০ হাজার লোক নিহত হন। পরবর্তী দিনগুলোতে ওই বোমার প্রভাবে আরও কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। জাপানের সম্রাট হিরোহিতো ১৫ অগাস্ট তাঁর দেশের আত্মসমর্পণের কথা ঘোষণা করেন। তাঁর বক্তৃতায় তিনি এই পরমাণু বোমাকে, 'নতুন এবং সবচেয়ে নিষ্ঠুর বোমা' বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেছিলেন, 'আমরা যুদ্ধ চালিয়ে গেলে তা কেবল জাপানি জাতির চূড়ান্ত পতন এবং বিলুপ্তির কারণই হবে না, বরং তা মানব সভ্যতাকে সম্পূর্ণ বিলুপ্তির দিকে পরিচালিত করবে।'

হিবাকুশা কীভাবে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের চেষ্টা চালায়?
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পরমাণু বোমা ফেলার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্ত, কৌশলগত এবং নৈতিক উভয় দৃষ্টিকোণ থেকেই সমালোচিত হয়। কিন্তু, এই বিস্ফোরণ বিশ্বকে চিরতরে বদলে দেয়। যে বড় শক্তিগুলো আমেরিকার বিরুদ্ধে প্রয়োগের জন্য পরমাণু অস্ত্র তৈরির দৌড়ে নেমেছিল, তারা উলটে পরমাণু অস্ত্র নিরস্ত্রীকরণের জন্য বিশ্বব্যাপী আন্দোলন গড়ে তোলে। হিবাকুশা এই আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নিউ ইয়র্ক টাইমস হিরোশিমা বোমা হামলার বার্ষিকীতে উল্লেখ করেছে, 'হিবাকুশা এবং তাঁদের বংশধররা পরমাণু হামলার স্মৃতি হয়ে রয়েছেন।' ১৯৫৬ সালের ১০ অগাস্ট প্রতিষ্ঠিত নিহন হিডানকিও নিজেকে 'হিরোশিমা এবং নাগাসাকির বোমা থেকে বেঁচে যাওয়া একমাত্র দেশব্যাপী সংগঠন' বলে দাবি করে।

আরও পড়ুন- এখনই সাবধান হোন! কেরলে বেড়েছে বিরল মস্তিষ্কখেকো অ্যামিবার দাপট, ডেকে আনছে চরম বিপর্যয

এই সংগঠনের প্রধান উদ্দেশ্য হল হিবাকুশার কল্যাণ, পরমাণু অস্ত্র নির্মূল করা এবং পরমাণু হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ। নোবেল কমিটি জানিয়েছে, 'সংগঠনটি হিবাকুশার গল্প বলে জনগণকে সচেতন করে। পরমাণু বোমা হামলার অভিজ্ঞতা, ক্ষয়ক্ষতি, জাপানের অভ্যন্তরে এবং বাইরে বোমা হামলার প্রভাব সম্পর্কে তথ্য দিয়ে নাগরিকদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টা করে। এছাড়া রাষ্ট্রসংঘ এবং অন্যান্য সংস্থার মাধ্যমে পরমাণু অস্ত্রের প্রসার রোধ করতে চেষ্টা চালায়।' নোবেল কমিটি মনে করছে, নিহন হিডানকিওর মত সংগঠনগুলোর জন্যই বিশ্বে পরমাণু অস্ত্রপ্রসার রোধ করা সম্ভব হয়েছে। আমেরিকা এবং রাশিয়ার মত দেশ তাদের পরমাণু অস্ত্রের ভাণ্ডারের পরিমাণ কমিয়েছে।

nobel prize Japan Nobel Peace Prize Norway
Advertisment