১৯৪৫ সালে বিজয় দিবস নাৎসি জার্মানির বিরুদ্ধে সোভিয়েত রাশিয়ার বিজয়ের দিন হিসেবে পালিত হয়। কিন্তু, এবছর ৯ মে, এই বিজয় দিবসকে ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার হামলার সমর্থনের জন্য ব্যবহার করেছেন প্রেসিডেন্ট পুতিন। ইউক্রেনে হামলার জন্য মস্কো লাগাতার সমালোচনার মুখে পড়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হিটলার সোভিয়েত রাশিয়া আক্রমণ করেন। সেই ঘটনার কথা মাথায় রেখে ইউক্রেনীয়দের নাৎসি বলে কটাক্ষ করেন পুতিন। তাঁর সরকারের হানাদারিকে তিনি সেই নাৎসিদের বিরুদ্ধে লড়াই হিসেবে দাবি করেছেন। এই প্রসঙ্গে পুতিন বলেন, 'তাঁর সরকারের এখন প্রধান লক্ষ্য নাৎসিদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা।' পুতিন তাঁর বার্তায় জানিয়েছেন, ইউক্রেন এবং জর্জিয়া-সহ সোভিয়েত রাশিয়ার পুরনো ১২টি রাজ্য বর্তমানে নাৎসিপন্থী হয়ে পড়েছে। আর, তাঁর সরকার রাশিয়াকে বাঁচাতে লড়াই করছে।
পুতিন ঠিক কী বলেছেন
এবারের বিজয় দিবসে বাধ সেধেছে আবহাওয়াও। মস্কোয় বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে ৭৭টি যুদ্ধবিমানের বিশেষ খেলা দেখানোর কথা ছিল। কিন্তু, মস্কোর রেড স্কোয়ারের সেসব অনুষ্ঠান বাতিল হয়েছে আবহাওয়ার কারণে। যদিও বিভিন্ন মহলের দাবি, আবহাওয়ার কারণে নয়। মস্কোর ওই অনুষ্ঠান বাতিল হয়েছে, কারণ সেই সব যুদ্ধবিমানকে পুতিন ইউক্রেনের বিরুদ্ধে কাজে লাগিয়েছেন। সেগুলো ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ ব্যস্ত। তাই আর বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে ওই যুদ্ধবিমানগুলোকে প্রদর্শন করা সম্ভব হয়নি। যার মধ্যে রয়েছে আটটি মিগ-২৯ যুদ্ধবিমানও। এই পরিস্থিতিতে পুতিন ঠিক কী বার্তা দেন, সেদিকে তাকিয়ে ছিল বিভিন্ন মহল। সেখানে রাশিয়ার বর্তমান সর্বাধিনায়ক বলেছেন, 'আমরা ওডেসার শহিদদের প্রতি মাথানত করছি। তাঁরা জীবন্ত দগ্ধ হয়েছিলেন। আমরা ডনবাসের শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। এই শহিদরা ফ্যাস্টিস্টদের রুখতে প্রাণ দিয়েছেন। রাশিয়াকে রক্ষা করা সর্বদা পবিত্র কাজ। কারণ, আপনি আমাদের মাতৃভূমির নিরাপত্তার জন্য লড়াই করছেন। ডোনবাসে আমাদের জনগণের জন্য লড়াই করছেন।'
আরও পড়ুন- বিস্ফোরক উদ্ধার করে বাঁচিয়েছে অসংখ্য প্রাণ, সেনার সারমেয়কে রাষ্ট্রীয় পুরস্কার জেলেনস্কির
পুতিনের বার্তা সম্পর্কে বিশেষজ্ঞরা কী বলছেন
যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে রাশিয়াকে দেখছেন, তাঁদের ধারণা পুতিন নিজেও যথেষ্ট চাপে আছেন। কারণ, তাঁর সেনাবাহিনী এখনও এখনও ইউক্রেনে বড় কোনও সাফল্য দেখাতে পারেনি। শুধু তাই নয়, ইউক্রেনে হামলা চালাতে গিয়ে রাশিয়ার বেশ ক্ষতি হয়েছে। এই সব কারণে রাশিয়াতেও পুতিনের বিরুদ্ধে যথেষ্ট ক্ষোভ জন্মেছে। সেই সব ক্ষোভ সামাল দিতেই রুশ প্রেসিডেন্ট এই বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানকে বেছে নিয়েছিলেন। তবে, সেটা কতদূর কার্যকরী হয়, তা স্রেফ আগামীই বলতে পারবে।
Read story in English