বেঙ্গালুরুর প্রতিষ্ঠাতা নাদপ্রভু কেম্পেগৌড়ার ১০৮ ফুট দীর্ঘ ব্রোঞ্জ মূর্তি উন্মোচন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মোদী এদিন কেম্পেগৌড়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দ্বিতীয় টার্মিনালের উদ্বোধন করেন। ৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত অত্যাধুনিক এই টার্মিনাল নিয়ে রীতিমতো শোরগোল দক্ষিণের রাজ্যে। এদিন দুটি ট্রেনের সূচনা করেন তিনি। একটি বন্দে ভারত এক্সপ্রেস এবং আরেকটি ভারত গৌরব কাশী দর্শন ট্রেন।
চলতি বছর জুনেই মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাই ঘোষণা করেন, কেম্পেগৌড়ার মূর্তি রাজ্যের বিধান সৌধাতেও বসানো হবে আগামী এক বছরের মধ্যে। মূর্তিটিকে সমৃদ্ধির মূর্তি বলে অভিহিত করেছেন বোম্মাই। ওয়ার্ল্ড বুক অফ রেকর্ডস নাম তুলেছে এই মূর্তি। কোনও শহরের প্রতিষ্ঠাতার প্রথম সুবিশাল ব্রোঞ্জ মূর্তি হিসাবে রেকর্ড হয়েছে।
এবার আসুন জানা যাক, কে এই কেম্পেগৌড়া, আর তার মূর্তি নির্মাণের নেপথ্যে বিজেপির কোন রাজনৈতিক অঙ্ক কাজ করছে।
কে এই নাদপ্রভু কেম্পেগৌড়া?
নাদপ্রভু কেম্পেগৌড়া ষোড়শ শতাব্দীর বিজয়নগর সাম্রাজ্যের প্রধান ছিলেন। তিনিই বেঙ্গালুরু শহরের পত্তন করেন। নিজের মন্ত্রীর সঙ্গে শিকারে বেরিয়ে নয়া শহর পত্তনের ভাবনা তাঁর মাথায় আসে। এর পর শহরের সীমানা ঘেরার জন্য চার দিকে চারটি স্তম্ভ তৈরি করেন তিনি। শহরে হাজার খানেক হ্রদ তৈরি করেন তিনি। যাতে চাষাবাদ এবং পানীয় জলের অভাব না হয়। তিনি কর্ণাটকের কৃষক সম্প্রদায় ভোক্কালিগাদের প্রতিনিধি ছিলেন।
আরও পড়ুন Explained: কুনোর জঙ্গলে প্রথম শিকার নামিবিয়ার চিতাদের, খুশি মোদী, কিন্তু কেন?
শহরের যেদিকেই দেখবেন, সেখানেই তাঁর নাম। বিমানবন্দর, বাস স্ট্যান্ড, এমনকী মেট্রো স্টেশনের নামেও তিনি বিরাজমান। রাস্তা তো আছেই।
বিমানবন্দরে কেম্পেগৌড়ার মূর্তির ভাবনা কবে হয়?
১০৮ ফুট দীর্ঘ ব্রোঞ্জ মূর্তি এয়ারপোর্ট চত্বরে ২৩ একর হেরিটেজ পার্কে নির্মিত হয়েছে। এই মূর্তির হাতে রয়েছে ৪ হাজার কেজি ওজনের তলোয়ার। সেটি আবার দিল্লি থেকে গত মাসে ট্রাকে করে আসে বেঙ্গালুরুতে। গত ২০১৯ সালে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরাপ্পা এই মূর্তি তৈরির পরিকল্পনা নেন। তখন ব্যয় ধরা হয়েছিল ১০০ কোটি টাকা। তার আগে ভোক্কালিগা সম্প্রদায়ের সতৎে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখানো হয়েছিল। বেছে বেছে তাঁদের সম্প্রদায়ের লোকদের নিশানা করছে সরকার। কংগ্রেস নেতা ডি কে শিবকুমার, ক্যাফে কফি ডে প্রতিষ্ঠাতা ভি জি সিদ্ধার্থ এবং প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামীকে কেন্দ্রীয় এজেন্সি দিয়ে হেনস্তা করা হয়েছিল বলে অভিযোগ।
তার পরের দিনই এই মূর্তি তৈরির ঘোষণা করা হয়। ভোক্কালিগাদের ক্ষতে মলম দিতেই এই ঘোষণা বলে মনে করে রাজনৈতিক মহল। ভোক্কালিগাদের শক্ত ঘাঁটি মাইসুরু অঞ্চলে সংগঠন শক্তিশালী করার জন্যই তাঁদের কাছে টানার ছক কষে বিজেপি। ইয়েদুরাপ্পার ঘোষিত প্রকল্প বাস্তবায়িত হল বোম্মাই জমানায়।