Advertisment

বিশ্লেষণ: মোদী-জিনপিং বৈঠক - কাকে বলে ঘরোয়া সম্মেলন?

ঘরোয়া সম্মেলনে যেহেতু বহু রকম বিষয়ে আলোচনার সুযোগ থাকে, সে কারণে কখনও কখনও এই আলোচনা আনুষ্ঠানিক আলোচনার থেকে বেশি ফলপ্রদ হয়।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Informal Summit, PM Narendra Modi

ছবি- টুইটার

তামিলানাড়ুর প্রাচীন শহর মামাল্লাপুরমে প্রধানমন্ত্রী মোদী ও চিনা প্রসেডেন্ট জি জিনপিংয়ের মধ্যে বৈঠক হচ্ছে। এ বৈঠক দ্বিতীয় ঘরোয়া সম্মেলন। এই দু দেশের মধ্যে প্রথম ঘরোয়া সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে, মধ্য চিনের উহানে। সেথানে সারা পৃথিবীর ও দ্বিপাক্ষিক তাৎপর্যের বিষয়গুলি নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গির আদানপ্রদান হয়।

Advertisment

মোদী ও জিনপিংয়ের ঘরোয়া সম্মেলন

এ ধরনের ঘরোয়া সম্মেলনগুলিতে সংশ্লিষ্ট দেশগুলির মধ্যে সরাসরি, মুক্ত ও অকপট আলোচনা হয়ে থাকে, যা দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক পূর্ব নির্ধারিত বিষয় স্থিরীকৃত বৈঠকে সম্ভব নয়। সে ধরনের বৈঠকে নির্দিষ্ট বিষয়ে আলোচনা হয় এবং তার ফলাফলও হয় অনেক বেশি নির্দিষ্ট।

আরও পড়ুন, বিশ্লেষণ: সাহিত্যে নোবেল, গত বছরের কেলেংকারি এবং এ বছরের বিজয়ীরা

ঘরোয়া সম্মেলনের কোনও বার্ষিক বা দ্বিবার্ষিক নির্দিষ্টতা থাকে না, এগুলি চরিত্রগতভাবে হয় তাৎক্ষণিক। সংশ্লিষ্ট দেশগুলি প্রয়োজন অনুভব করলেই এ ধরনের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে পারে। যেমন আন্তঃসরকারি সংস্থা এসিয়ান ১৯৯৬, ১৯৯৭, ১৯৯৯ এবং ২০০১ সালে চারটি ঘরোয়া সম্মলেন আয়োজন করেছিল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে সিঙ্গাপুরে আয়োজিত এসিয়ান-ইন্ডিয়ান ঘরোয়া সম্মেলনে যোগদান করেছিলেন।

ঘরোয়া সম্মেলনে যেহেতু বহু রকম বিষয়ে আলোচনার সুযোগ থাকে, সে কারণে কখনও কখনও এই আলোচনা আনুষ্ঠানিক আলোচনার থেকে বেশি ফলপ্রদ হয়। তার কারণ হল এখানে আলোচনার সুযোগ অনেক গভীরে গিয়ে, উদ্দেশ্যও অনেক নমনীয় এবং আলোচনার সুযোগও বেশি।

উদাহরণ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং প্রেসিডেন্ট জিনপিং উহানে বহু বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। এর মধ্যে ছিল ভারত-চিন সীমান্ত প্রশ্ন, দ্বিপাশ্রিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, সন্ত্রাসবাদ, আর্থিক উন্নতি এবং বিশ্বশান্তি। তাঁরা বৃহত্তর সহমতে পৌঁছেওছিলেন।

চিনই একমাত্র দেশ নয় যাদের সঙ্গে ভারতের ঘরোয়া সম্মেলন হয়ে থাকে। ২০১৮ সালের মে মাসে, মোদী রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিনের সঙ্গে রাশিয়ার সোচিতে ঘরোয়া সম্মলনে মিলিত হন এবং সেথানে বৃহত্তর ও দীর্ঘমেয়াদি প্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক বিষয়ে আলোচনা করেন।

আরও পড়ুন, বিশ্লেষণ: ১১ তালিবান জঙ্গির বিনিময়ে ৩ ভারতীয়ের মুক্তি

সেখানে এই দুই নেতা বিশ্ব শান্তি ও স্থিতি বজায় রাখার ব্যাপারে, সামরিক ও পারমাণবিক সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা করেন।

২০১৯ সালের জুন মাসে জি ২০ সম্মেলনের পাশাপাশি রাশিয়া, চিন ও ভারত একযোগে ঘরোয়া সম্মেলন আহ্বান করে এবং সেখানে দেশের আর্থিক, নিরাপত্তাজনিত এবং রাজনৈতিক বিষয়ে আলোচনা করে।

উহানের ঘরোয়া সম্মেলনে কী হয়েছিল?

ভারত ও চিনের মধ্যে প্রথম ঘরোয়া সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ২৭ ও ২৮ এপ্রিল উহানে। মোদী ও জিনপিং সেখানে দ্বিপাক্ষিক ও বৈশ্বিক বিষয়ে দৃষ্টিভঙ্গি আদানপ্রদান করেন এবং বর্তমান ও ভবিষ্যৎ আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে জাতীয় উন্নতি প্রসঙ্গে নিজের নিজের দৃষ্টিভঙ্গি ও অগ্রাধিকারের বিষয়গুলি সবিস্তারে আলোচনা করেন।

ডোকালামে ভারত-ভূটান-চিন সীমান্তে দু মাসের অচলাবস্থা চলবার পর উহান সম্মলেন ভারত-চিন সম্পর্ককে নতুন ভাবে তৈরি করে। উল্লেখযোগ্য, উহানে দুই নেতাই তাঁদের সামরিক বাহিনীতে কৌশলগত সাহায্য দেবার কথা স্থির করেন, যাতে ডোকালামের অচলাবস্থা না বেড়ে ওঠে।

সে সময়েই বিশেষজ্ঞ ও বিশ্লেষকরা স্বীকার করেন যে উহানের মত কূটনৈতিক স্তরে আদানপ্রদান যদি নিয়মিত করে তোলা যায় তাহলে তা ভালই হবে। এ ধরনের সম্মেলনের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ দুদেশের মধ্যে যে কৌশলগত যোগাযোগ শক্তপোক্ত করবে বলেও মনে করা হয়েছে।

আরও পড়ুন, বিশ্লেষণ: কীভাবে পাকিস্তানের হাত এড়িয়ে ভারতের কাছে এল সাড়ে তিন কোটি পাউন্ড

চিন ছাড়া জাপান ও রাশিয়ার সঙ্গে ভারত বর্তমানে বার্ষিক সম্মেলন করে থাকে।

উহান সম্মেলনের পর ভারতের চিনা দূতাবাস থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় চিন ও ভারত ভাল প্রতিবেশী ও ভাল বন্ধু। ওই বিজ্ঞপ্তিতে দু দেশের মধ্যে ব্যবহারিক যোগাযোগের উন্নতি ঘটানোর কথাও বলা হয়েছিল।

ভারত-চিন অন্য সাম্প্রতিক বৈঠক

গত কয়েক বছরে প্রধানমন্ত্রী মোদী ও প্রেসিডেন্ট জিনপিং পরপর বৈঠক করে চলেছেন। ২০১৯ সালে ১৩ জুন তাঁদের যে বৈঠক হয়, সেটি ছিল ২০১৪ সালে মোদী প্রধানমন্ত্রী হবার পর দু জনের মধ্যে পঞ্চদশ বৈঠক।

Read the Full Story in English

PM Narendra Modi china
Advertisment