ইন্ডিয়ান রেভিনিউ সার্ভিস অফিসার সমীর ওয়াংখেড়ের বিরুদ্ধে দায়ের হল এফআইআর। বয়স ভাঁড়িয়ে হোটেলের জন্য মদের লাইসেন্স নিয়েছিলেন তিনি। সেই অভিযোগেই মুম্বই নারকোটিকস কন্ট্রোল ব্যুরো বা প্রাক্তন এনসিবি প্রধানের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হল। থানের কোপারি থানায় এই এফআইআর দায়ের হয়েছে। এফআইআরটি দায়ের করেছে মহারাষ্ট্র আবগারি দফতর। আধিকারিকদের অভিযোগ, বার কাম রেস্তোরাঁয় মদ বিক্রির লাইসেন্স পাওয়ার জন্য তাঁদের কাছে নথি জমা পড়েছিল। ওয়াংখেড়ের নামে জমা পড়া সেই নথিতে বয়স নিয়ে জালিয়াতি করা হয়েছিল।
যখন লাইসেন্স নেওয়া হয়, সেই সময় ওয়াংখেড়ে নাবালক ছিলেন। কিন্তু, মদের লাইসেন্স পেতে আবেদনকারীরা বয়স অন্তত ২১ বছর হওয়া দরকার। তেমনই নথি দেখিয়ে জমা পড়েছিল আবেদন। তার ভিত্তিতে ১৯৯৭ সালের ২৭ অক্টোবর, ভাসি এলাকার ওই বার কাম রেস্তোরাঁকে মদ বিক্রির লাইসেন্স দেয় মহারাষ্ট্র আবগারি দফতর। কিন্তু, পরে তদন্ত চালিয়ে দেখা যাচ্ছে, লাইসেন্সের আবেদনের সময় ওয়াংখেড়ের বয়স ২১ নয়, ছিল ১৭ বছর। ওয়াংখেড়ের বাবা দানদেব ওয়াংখেড়ে আবগারি দফতরের আধিকারিক ছিলেন। তাঁর প্রভাবেই লাইসেন্সটি ইস্যু হয়েছিল। তদন্তে আবেদনের সময় মিথ্যে তথ্য দেওয়ার অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায়, চলতি মাসের গোড়ার দিকে, থানের জেলাশাসক রাজেশ নারভেকর এক নির্দেশে ভাসির ওই 'সদগুরু' বার কাম রেস্তোরাঁর লালসেন্স বাতিল করেন।
আরও পড়ুন- Explained: এফআইআর বা প্রাথমিক তথ্য বিবরণী কী?
প্রাক্তন পুলিশ অফিসার তথা আইনজীবী ওয়াই পি সিং এই প্রসঙ্গে বলেন, '১৯৬৮ সালের অল-ইন্ডিয়া সার্ভিস কন্ডাক্ট আইনের ১৩ নম্বর ধারা অনুযায়ী, একজন সরকারি চাকুরিজীবী নিজের নামে ব্যবসা চালাতে পারেন না। যদি তিনি সেটা চালান, তবে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে বিভাগীয় তদন্তের মুখে পড়বেন।' মুম্বইয়ের প্রাক্তন অ্যাসিস্ট্যান্ট পুলিশ কমিশনার এবং আইনজীবী ইকবাল শেখ জানিয়েছেন, 'সরকারি কর্মচারী ব্যবসা করতে পারবেন না। এই আইনটা মহারাষ্ট্র্ সরকারের কর্মীদের জন্যও যেমন প্রযোজ্য। তেমনই, প্রযোজ্য সিভিল সার্ভিস আধিকারিকদের জন্যও।'
আরও পড়ুন- গাড়ি চোর ধরতে গিয়ে হদিশ মিলল নতুন জঙ্গি সংগঠনের
ওয়াংখেড়ে অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। সাফাইয়ের জানিয়েছেন, 'আমি সিভিল সার্ভিস আধিকারিক পদে যোগ দেওয়ার সময়ই ২০০৬ সালে এই বার কাম রেস্তোরাঁর লাইসেন্স মায়ের নামে হস্তান্তরিত করেছি। যদিও এই বার কাম রেস্তোরাঁ এখন আমাদের পরিবার চালাচ্ছে না। এটা ভাড়া দেওয়া আছে। আমি ফের বলব, না-আমি, না-আমার মা, কেউ কোনও জালি নথিপত্র জমা দিইনি। একজন নাবালক কি আদৌ সরকারি ব্যবস্থাপনাকে নিজের স্বার্থে ব্যবহার করতে পারে? এটা কখনও সম্ভব? আমরা নিশ্চিতভাবেই আইনি ব্যবস্থা নেব। কারণ, বিষয়টি ইতিমধ্যে বিচারাধীন। এটা অত্যন্ত বিস্ময়কর এবং বেদনাদায়ক যে এই অভিযোগ ২৫ বছর পর তোলা হল। এটা আসলে সততা এবং নিষ্ঠার সঙ্গে কর্তব্য করার ফল। একজন অক্ষম মানুষও বুঝতে পারবেন, কী কারণে কী ঘটছে।'
Read story in English