এ সপ্তাহেই সুপ্রিম কোর্ট ২০১৮ সালের মার্চ মাসে দেওয়া এসসি এসটি আইন সম্পর্কিত রায় প্রত্যাহার করে নিয়েছে। মার্চ মাসের রায়ের ফলে এসসি এসটি আইনের আওতায় গ্রেফতারের সংস্থান কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। কেন্দ্র ওই রায় পর্যালোচনার আবেদন করে।
বিচারের পর্যালোচনা বলতে কী বোঝায়?
সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর্যালোচনা করে সুপ্রিম কোর্টেরই বেঞ্চ। রায় খারিজ বা ওভাররুল করে দেওয়ার অর্থ হল একটি মামলায় কোনও একটি আইন কার্যকর হওয়ার পর অন্য মামলায় সে আইন ওভাররুল করে দেওয়া। আবার যদি কোনও উচ্চ আদালত নিম্ন আদালতের রায় পাল্টে দেয়, তাকে বলে প্রতিবর্তন (রিভার্সাল)।
আরও পড়ুন, বিশ্লেষণ: ত্রিপুরায় মন্দিরে বলি নিষিদ্ধ, কী যুক্তি আদালতের
সাধারণ ভাবে রিভিউ হয় কোনও একজন বিচারপতির চেম্বারে, তবে গুরুত্বপূর্ণ মামলায় (যেমন সবরিমালা বা রাফাল মামলা) শুনানি প্রকাশ্য আদালতে হতে পারে। এসসি এসটি মামলায় বিচারপতি আদর্শ গোয়েল এবং ইউইউ ললিত সুভাষকান্তি মহাজন বনাম মহারাষ্ট্র সরকার মামলার রিভিউয়ের আবেদন গ্রহণ করেন ২০১৮ সালের ২০ মার্চ। বিচারপতি গোয়েল অবসরগ্রহণ করবার পর নতুন বেঞ্চ গঠিত হয় যার নেতৃত্বে ছিলেন বিচারপতি অরুণ মিশ্র। এ ছাড়া বেঞ্চে ছিলেন বিচারপতি এম আর শাহ এবং বি আর গভাই।
তফশিলি জাতি উপজাতি (এসসি এসটি) আইন চালু হয়েছিল কেন?
তফশিলি জাতি ও উপজাতিদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধ দমনের জন্য ১৯৮৯ সালে রাজীব গান্ধী সরকার এই আইন লাগু করে যাতে অস্পৃশ্যতা রোধ করা যায় এবং সমতা লাগু করা যায়।
সুভাষকান্তি মহাজনের মামলা কী ছিল?
মহারাষ্ট্রের টেকনিক্যাল শিক্ষার ডিরেক্টর ছিলেন সুভাষ মহাজন। দুজন তফশিলি অফিসার এক দলিত কর্মীর চরিত্র ও বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার পর, ২০১১ সালে ওই দুই অফিসারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাগ্রহণের অনুমতি দিতে অস্বীকার করেন সুভাষ। তাঁর এই অস্বীকারকে চ্যালেঞ্জ করা হয় এই যুক্তিতে যে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবার অধিকারী তিনি নন, রাজ্য সরকার।
আরও পড়ুন, বিশ্লেষণ: উন্নাও ধর্ষণ মামলার সঙ্গে কীভাবে যুক্ত অ্যাপেল সংস্থার নীতি?
তফশিলি জাতি ও উপজাতিরা কীভাবে নৃশংসতার শিকার হন?
প্রতি ১৫ মিনিটে একজন তফশিলি জাতি উপজাতি ভুক্তের বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটিত হয়। প্রতিদিন গড়ে ৬জন তফশিলি মহিলা ধর্ষিতা হন। ২০০৭ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে তফশিলিদের বিরুদ্ধে অপরাধের মাত্রা মেড়েছে ৬৬ শতাংশ। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো দেখাচ্ছে তফশিলি মহিলদের ধর্ষণের ঘটনা ১০ বছরে দ্বিগুণ হয়েছে।
মঙ্গলবার আদালত মেনে নিয়েছে যে দলিতরা দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত ও লাঞ্ছিত এবং গত বছরের রায়ে যে এই আইনের সুযোগ নিয়ে মিথ্যা মামলা করা হচ্ছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে, তাও নাকচ করে দেওয়া হয়েছে।
(ফৈজান মু্স্তাফা সাংবিধানিক আইন বিশেষজ্ঞ)
Read the Full Story in English