গন্ধ বা স্বাদ পাচ্ছেন না! আপনার করোনা সংক্রমণ হয়ে থাকতে পারে
ক্লেয়ার এবং ইএনটি ইউকে সংস্থার প্রেসিডেন্ট নির্মল কুমার এক যৌথ বিবৃতিতে স্বাস্থ্যকর্মীদের কাছে আবেদন করেছেন, তাঁরা যদি স্বাদ বা গন্ধ হারিয়েছেন এমন কোনও রোগীর চিকিৎসা করেন, তাহলে যেন প্রয়োজনীয় সুরক্ষা সরঞ্জাম ব্যবহার করেন।
ক্লেয়ার এবং ইএনটি ইউকে সংস্থার প্রেসিডেন্ট নির্মল কুমার এক যৌথ বিবৃতিতে স্বাস্থ্যকর্মীদের কাছে আবেদন করেছেন, তাঁরা যদি স্বাদ বা গন্ধ হারিয়েছেন এমন কোনও রোগীর চিকিৎসা করেন, তাহলে যেন প্রয়োজনীয় সুরক্ষা সরঞ্জাম ব্যবহার করেন।
স্ক্রিনিংয়ের সময়ে স্বাদ-গন্ধ না পাবার বিষয়ে নজর রাখতে বলছেন বিশেষজ্ঞরা
গন্ধ বা স্বাদ অতি গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে করোনাভাইরাস সংক্রমিত কোভিড ১৯ রোগীদের ব্যাপারে। যদি দেখা যায় গত সাত দিন ধরে কেউ গন্ধ পাচ্ছেন না তেমন, বা স্বাদের তারতম্য তেমন ভাল করে বুঝতে পারছেন না, যেমন আগে পেতেন, তাহলে তিনি কোভিড-১৯ -এ আক্রান্ত হতে পারেন।
Advertisment
গত শুক্রবার ব্রিটিশ ইএনটি বিশেষজ্ঞরা সারা পৃথিবীর নাক কান গলা বিশেষজ্ঞদের রিপোর্ট তুলে ধরে এ কথা বলেছেন। এ সম্পর্কিত প্রকাশিত তথ্য এখনও যথেষ্ট না হলেও এই চিকিৎসকরা বলছেন সাবধান হবার সময় এসেছে।
ব্রিটিশ রাইনোলজিক্যাল সোসাইটির প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ক্লেয়ার হপকিন্স এক ইমেলে লিখেছেন, কেউ যদি গন্ধের অনুভূতি হারিয়ে ফেলে থাকেন, তাহলে তাঁর নিজেকে আইসোলেট করা উচিত কারণ এটা সংক্রমণের চিহ্ন। এ ব্যাপারে আমরা সচেতনতা তৈরি করতে চাইছি। এতে সংক্রমণ কমবে এবং প্রাণ বাঁচবে।
Advertisment
ক্লেয়ার এবং ইএনটি ইউকে সংস্থার প্রেসিডেন্ট নির্মল কুমার এক যৌথ বিবৃতিতে স্বাস্থ্যকর্মীদের কাছে আবেদন করেছেন, তাঁরা যদি স্বাদ বা গন্ধ হারিয়েছেন এমন কোনও রোগীর চিকিৎসা করেন, তাহলে যেন প্রয়োজনীয় সুরক্ষা সরঞ্জাম ব্যবহার করেন।
হপকিন্স জানিয়েছেন, ব্রিটেনের দুজন নাক কান গলা বিশেষজ্ঞ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এবং তাঁদের অবস্থা ভাল নয়। হপকিন্স আরও বলেছেন, চিনের উহান থেকে আগে যেসব রিপোর্ট এসেছিল তাতেও বলা হয়েছিল চোখ কান গলার বিশেষজ্ঞ ও চোখের চিকিৎসকরা বিশাল সংখ্যায় সংক্রমিত হচ্ছেন ও মারা যাচ্ছেন।
ব্রিটিশ চিকিৎসকরা অন্য দেশের রিপোর্টও উদ্ধৃত করেছেন। দেখা যাচ্ছে বড়সংখ্যক করোনাভাইরাস রোগীদের মধ্যে গন্ধ পাবার ক্ষমতাহীনতা দেখা দিয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ায়, যেখানে ২০০০ রোগীর মধ্যে ৩০ শতাংশের বর্তমান উপসর্গ হল গন্ধ পাবার ক্ষমতা হারানো।
আমেরিকান অ্যাকাডেমি অফ ওটোল্যারিঞ্জোলজি রবিবার তাদের ওয়েবসাইটে জানিয়েছে গন্ধ বা স্বাদ পাবার অনুভূতি হ্রাসের ঘটনা কোভিড-১৯-এর সঙ্গে যুক্ত তাৎপর্যপূর্ণ উপসর্গ হতে পারে এবং দেখা গিয়েছে, অন্য কোনও উপসর্গহীন এ ধরনের ব্যক্তিদের পরীক্ষায় সংক্রমণের ইতিবাচক ফল মিলছে।
অ্যালার্জি বা সাইনুসাইটিসের অনুপস্থিতিতে এ ধরনের উপসর্গের ক্ষেত্রে স্ক্রিনিংয়ের সময়ে চিকিৎসকদের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।
নিউ ইয়র্কের নিউ রচেলের ডক্টর কায়ে প্রথমবার করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রে গন্ধের অনুভূতিহীনতার যোগের কথা বলেন। তিনি বলেছিলেন যেসব রোগীরা এ ব্যাপারে অভিযোগ করেছিলেন, তাঁদের পরে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ইতিবাচক ফল পাওয়া গিয়েছে।
ইতালির চিকিৎসকরাও একই রকমের অভিজ্ঞতার কথা বলেছেন। ব্রেসিয়ার মূল হাসপাতালে ৭০০ থেকে ১২০০ রোগী করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে ভর্তি। সেথানকার হৃদরোগ বিভাগের প্রধান ডক্টক মার্কো মেত্রা বলেছেন, "হাসপাতালে ভর্তি সকলেরই প্রায় এক অবস্থা। কারও স্ত্রী বা স্বামীকে জিজ্ঞাসা করুন। রোগী বলবেন, 'আমার স্ত্রী গন্ধ বা স্বাদ পাচ্ছেন না, আর কোনও সমস্যা নেই।' এর মানে হল, তিনি সম্ভবত সংক্রমিত, এবং সামান্য হলেও তিনি সংক্রমণ ছড়াচ্ছেন। "
জার্মানির বন বিশ্ববিদ্যালয়ের হেনড্রিক স্ট্রিক সে দেশের হেইনসবার্গ জেলার বাড়ি বাড়ি গিয়ে করোনাভাইরাস রোগীদের তথ্য সংগ্রহ করছেন। তিনি বলেন, তাঁকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ১০০ জনের মধ্যে দুই তৃতীয়াংশ গন্ধ ও স্বাদের অনুভূতিহীনতার কথা বলেছেন।
৩০ বছরের অ্যান্ড্রু বেরির ১০ দিন আগে জ্বর ও গায়ে ব্যথা হয়। চারদিন আগে তাঁকে পরীক্ষা করে করোনাভাইরাস সংক্রমণের চিহ্ন না পাওয়া গেলেও তাঁর চিকিৎসকের মনে হয়েছিল তিনি সংক্রমিত। এখন বেরি বলছেন তিনি কফির গন্ধও পাচ্ছেন না।
ওজনও কমেছে বেরির, কারণ তিনি খিদের অনুভূতিও হারিয়েছেন। তিনি বলছেন "আশা করি এটা দীর্ঘস্থায়ী হবে না।"