প্রতিদিন দেশে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। শনিবার ভারতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে ৬১ হাজারেরও বেশি। এই পরিস্থিতিতে যত দ্রুত ভারতের হাতে আসবে করোনা ভ্যাকসিন, ততই মঙ্গল। যদিও ভ্যাকসিন বিশেষজ্ঞদের মত আগামী বছরের আগে ভ্যাকসিন আসার সম্ভাবনা নেই। কিন্তু ভ্যাকসিনের দাম নিয়ে একাধিক মহলে উঠেছে নানা প্রশ্ন। প্রথম যে ভ্যাকসিন আসবে তার দাম কেমন হবে? সাধারণ মানুষের জন্য তা ক্রয়যোগ্য হবে ইত্যাদি ইত্যাদি।
শুক্রবার বিশ্বের বৃহত্তম ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া জানিয়ে দেয় যে ১০০০ কোটি ডোজের ভ্যাকসিন আনতে চলেছে তাঁরা। শুধু তাই নয় ভ্যাকসিনের দাম রাখা হবে একেবারে ন্যূনতম। ভারতে যেমন এই ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে ২৪০ টাকা কিংবা তার চেয়েও কম। বিশ্ববাজারে এই ভ্যাকসিনের দাম হবে ৩ ডলার। এখনও পর্যন্ত বিশ্ব বাজারে যে সমস্ত ভ্যাকসিন এসেছে তার মধ্য থেকে সেরামের এই ভ্যাকসিনের দামই সবচেয়ে কম।
এর কারণ কী?
সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া (এসআইআই) জানিয়েছে যে ভ্যাকসিন তৈরির খরচ অনেকটাই। এর উপর রয়েছে একের পর এক ট্রায়াল পর্ব। সব মিলিয়ে ঝুঁকি এবং ঝক্কি কোনটাই কম নয়। কিন্তু সম্প্রতি করোনা ভ্যাকসিন প্রস্তুত করতে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন বিল এবং মিলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন। সেরামের ভ্যাকসিন উৎপাদনে তাঁরা দিয়েছে ১৫ কোটি ডলার। আর ইতিমধ্যেই অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি-অ্যাস্ট্রাজেনেকা এবং নোভাভ্যাক্স-এর সঙ্গে ভ্যাকসিন উৎপাদনে গাঁটছড়া বেঁধেছে সেরাম। পর্যবেক্ষকদের মত সেই কারণেই ভারতের বাজারে ভ্যাকসিনের দাম কম রাখা সম্ভব হতে পারে এই সংস্থার কাছে।
অন্যান্য ভ্যাকসিনের দাম কীরকম হতে পারে?
* মডার্না এই ভ্যাকসিন প্রস্তুতের দৌড়ে অক্সফোর্ডের পরেই রয়েছে। এখনও পর্যন্ত যা জানা গিয়েছে তা হল মডার্না ভ্যাকসিনের এক একটির দাম হতে পারে ৫০ থেকে ৬০ মার্কিন ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৩৭০০ থেকে ৪৫০০ টাকা।
* ফিজার সংস্থার ভ্যাকসিনের দাম হতে পারে ৩০০০ টাকার কিছু বেশি।
* অন্যদিকে গাঁটছড়া বাঁধার আগে সেরাম জানিয়েছিল অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির আবিষ্কৃত ভ্যাকসিনের দাম হতে পারে ১০০০ টাকা বা তার কিছুটা কম।
যদিও এর কোনওটিই স্ট্যান্ডার্ড দাম নয়। বিভিন্ন দেশে এর দামে তারতম্য থাকবে। যদিও অ্যাস্ট্রাজেনেকা, জনসন অ্যান্ড জনসন, ফিজার সংস্থারা জানিয়েছে তাঁরা এই ভ্যাকসিনের দামের মধ্যে লাভের অংশ রাখতে চায় না। ভ্যাকসিন তৈরি করতে যে দাম লেগেছে সেই দামেই বিক্রি করতে চায় তারা। যদিও মডার্না জানিয়েছে তারা লাভ রেখেই বিক্রি করবে করোনা ভ্যাকসিন।
কিন্তু প্রথম যে ভ্যাকসিনই আসুক না কেন তার কার্যকারীতা কম হবে, এমনটাই জানালেন মাইক্রোসফটের সৃষ্টিকর্তা এবং বিশ্বব্যাপী স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে সাহায্য করা বিল গেটস। তিনি সাফ জানান যে প্রথম যে ভ্যাকসিন আসতে চলেছে তার গুণাগুণ সর্বোচ্চ পর্যায়ের হবে না। সংবাদসংস্থা ব্লুমবার্গ এজেন্সিকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে বিল গেটস বলেন করোনা রুখতে কার্যকরী হবে এমন ভ্যাকসিন তৈরি হতে আরও বেশ কিছুটা সময় লাগবে। আর সেই কারণে এখন যে ভ্যাকসিন বেরোবে তা উৎকর্ষ হবে না।
Read the story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন