State changes in rape law: পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা 'অপরাজিতা' বিল পাশ করেছে। এই বিলে ধর্ষণের জন্য মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে। বিরোধীরা বলেছেন, ভারতীয় ন্যায় সুরক্ষা সংহিতা, ২০২৩ আইন করেছে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার। তারপরও অপরাজিত বিল পাশের কী দরকার ছিল? শুধু বিরোধীরাই নন। এই প্রশ্নটি কিন্তু অনেকেরই।
যা হয়েছে
কলকাতায় আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে একজন তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং হত্যার পর রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে গণবিক্ষোভ শুরু হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে এই ক্ষোভ অব্যাহত থাকায়, মঙ্গলবার বিধানসভা সর্বসম্মতিক্রমে বিলটি পাস করেছে। যাতে নির্যাতিতা মারা গেলে ধর্ষণের ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে।
অপরাজিতা বিল
'দ্য অপরাজিতা উইমেন অ্যান্ড চাইল্ড (ওয়েস্ট বেঙ্গল ক্রিমিনাল ল অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল ২০২৪', নামে, এই বিলের লক্ষ্য ধর্ষণ এবং যৌন অপরাধ সম্পর্কিত বিধান সংশোধন ও প্রবর্তন। যার মাধ্যমে নারী ও শিশুদের সুরক্ষা জোরদার হবে বলেই সরকারের দাবি। আর, এখানেই প্রশ্ন যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন সরকারের নতুন ধর্ষণ-বিরোধী বিল এবং সদ্য বাস্তবায়িত ভারতীয় ন্যায় সংহিতা, ২০২৩ এবং ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা, ২০২৩ আইনে ধর্ষণ-বিরোধী আইনগুলোর মধ্যে ঠিক কী পার্থক্য রয়েছে?
ধর্ষণের শাস্তি
বিএনএস: জরিমানা, অনূর্ধ্ব ১০ বছরের কারাদণ্ড যা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পর্যন্ত প্রসারিত হতে পারে।
অপরাজিতা বিল: দোষীর আজীবন কারাদণ্ড/সশ্রম কারাদণ্ড এবং জরিমানা।
সেই ধর্ষণের জন্য শাস্তি, যা নির্যাতিতাকে মৃত্যু দেয় বা তাঁকে কোমায় ফেলে দেয়
বিএনএস: সর্বনিম্ন ২০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, যা মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
অপরাজিতা বিল: মৃত্যু এবং জরিমানা।
গণধর্ষণের শাস্তি
বিএনএস: জরিমানা এবং সর্বনিম্ন ২০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, যাবজ্জীবন কারাদণ্ডও হতে পারে।
অপরাজিতা বিল: আসামিকে জরিমানা এবং যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা মৃত্যুদণ্ড।
তদন্তের জন্য সময়সীমা
বিএনএসএস (BNSS): এফআইআর (FIR)-এর তারিখ থেকে দু'মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে হবে।
অপরাজিতা বিল: এফআইআরের তারিখ থেকে ২১ দিনের মধ্যে শেষ করতে হবে তদন্ত।
বিচারের সময়সীমা
বিএনএসএস (BNSS): দুই মাসের মধ্যে বিচার শেষ করতে হবে।
অপরাজিতা বিল: বিচার শেষ করতে হবে ৩০ দিনের মধ্যে।
আরও পড়ুন- তীব্র ক্ষোভপ্রকাশ রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর! পশ্চিমবঙ্গে কি রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হতে পারে?
ফৌজদারি আইন সংশোধন
পশ্চিমবঙ্গের আগে অন্ধ্রপ্রদেশ এবং মহারাষ্ট্র বিধানসভাগুলোও তৎকালীন কার্যকর ফৌজদারি আইন সংশোধন করে ধর্ষণের জন্য মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে আইন পাস করেছে। কোনও বিলই এখনও রাষ্ট্রপতির বাধ্যতামূলক সম্মতি, পায়নি। মধ্যপ্রদেশ এবং অরুণাচল প্রদেশ বিধানসভাও যথাক্রমে ২০১৭ এবং ২০১৮ সালে 'বারো বছর বয়স পর্যন্ত কোনও মেয়ের ধর্ষণ বা গণধর্ষণে (ভারতীয় দণ্ডবিধির ধারা ৩৭৬এএ এবং ৩৭৬ডিএ, ১৮৬০)-এর আওতায় মৃত্যুদণ্ড অন্তর্ভুক্ত করেছে।