নভেল করোনাভাইরাস অতিমারী মোকাবিলায় অনেক দেশই এবার ভাইরাস নির্মূল করতে সুপার কম্পিউটার কাজে লাগাতে শুরু করেছে।
বিজ্ঞানীরা এই সুপারকম্পিউটার কাজে লাগিয়ে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জিং কাজ হাতে নিয়েছেন, এর মধ্যে রয়েছে গোষ্ঠীর মধ্যে কীভাবে সংক্রমণ ছড়ায় তা বোঝা, কী করে মানবশরীরে ভাইরাস ছড়ায় তা জানা এবং সম্ভাব্য চিকিৎসা ও ভ্যাকসিন আবিষ্কার করা। এর আগে ২০১৫য় জিকা মহামারী ও ২০১৪-১৬-য় ইবোলা মহামারীর সময়েও সুপার কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়েছে।
এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে সুপারকম্পিউটার কীভাবে লড়াই করতে পারে?
কোভিড ১৯ সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ায় বহু তথ্য এখন লভ্য এবং গবেষকরা সুপারকম্পিউটার ব্যবহার করে সেগুলি মডেলিং ও বিশ্লেষণ করছেন।
এই সুপার কম্পিউটারের প্রসেসিং ক্ষমতা অত্যুচ্চ হবার ফলে এগুলি সাধারণ কম্পিউটারের চেয়ে অনেক মাস দ্রুত, এবং হাতের কাজের থেকে কয়েক বছর আগেভাগে কাজ নিষ্পন্ন করতে পারে।
নভেল করোনাভাইরাসের ওষুধ খুঁজে বার করতে সুপারকম্পিউটার কাজে লাগিয়ে বর্তমান ওষুধের কম্পাউন্ডগুলির ডেটাবেস নিরীক্ষা করা হচ্ছে।
নভেল করোনাভাইরাসের বাইরের দিক কাঁটা জাতীয় এবং সেগুলি কাজে লাগিয়ে ভাইরাস মানবদেহে প্রবেশ করছে। সুপারকম্পিউটার এমন অ্যান্টিভাইরাল ওষুধের হদিশ করছে যা ওই কাঁটাকে অকার্যকর করে ফেলতে পারে।
আমেরিকায় এই মেশিনগুলি ৭৭টি মলিকিউল খুঁজে বার করে ফেলেছে যা এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে কার্যকর হতে পারে। পরের ধাপ হল তালিকাকে আরও নিখুঁত করা এবং ভাইরাসের পক্ষে সবচেয়ে কার্যকর ওষুধকে চিহ্নিত করা।
এই সুপারকম্পিউটার নভেল করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরিতেও সাহা্য্য করছে।
এ ছাড়া সুপারকম্পিউটার নভেল করোনাভাইরাসের গঠন ও উৎপত্তি খুঁজে বের করার, জনসমষ্টির মধ্যে ছড়ানোর গতি বিশ্লেষণ করবার এবং মানবশরীরের কোষে কীভাবে তা কাজ করে, তা বোঝার ব্যবস্থা করছে।
সুপার কম্পিউটার কোথায় ব্যবহার করা হচ্ছে?
আমেরিকায় বিশাল আকারে সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যাতে আইবিএম, গুগল, আমাজন, এমআইটি এবং কার্নেগি মেলনের মত অ্যাকাডেমিক প্রতিষ্ঠান ও সরকারি ল্যাবরেটরি ও নাসার মত সংস্থা একযোগে কাজ করছে।
জাপানে সরকার এবং দেশের শীর্ষ গবেষণা কেন্দ্র ফুগাকু সুপারকম্পিউটার ব্যবহার করবে। এটি কে কম্পিউটারের উত্তরসূরী। কে কম্পিউটার আগে পৃথিবীর দ্রুততম হিসেব সক্ষম কম্পিউটার হিসেবে পরিচিত ছিল।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের রিপোর্ট অনুসারে চিনে কোভিড ১৯ রোগীর বুকের স্ক্যান পরীক্ষায় আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহারের জন্য Tianhe-1 সুপার কম্পিউটার ব্যবহার করা হচ্ছে।
ভারতে সরকারি সংস্থা সি ডাক ঘোষণা করেছে তারা কোভিড ১৯-এর নতুন ওষুধ আবিষ্কারের জন্য ন্যাশনাল ইনস্টিট্যুট অফ ভাইরোলজি, বিভিন্ন আইআইটি, ইন্ডিয়ান ইনস্টিট্যুস অফ সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ, কাউন্সিল অফ সায়েন্টিফিক অ্যান্ড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চের অধীনস্থ ল্যাবরেটরি, ডিপার্টমেন্ট অফ বায়োটেকনোলজি ও বিভিন্ন সংস্থা স্টার্ট আপকে সহযোগিতা করবে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন