বুধবার (১৯ জুলাই) সুপ্রিম কোর্ট বলেছে যে আদালত বৈবাহিক ধর্ষণ সম্পর্কিত আবেদনগুলোর একটি তালিকা তৈরি করবে। 'বৈবাহিক ধর্ষণ' বলতে বোঝায় একজন পুরুষের দ্বারা তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে সম্মতিহীন যৌন মিলন। ভারতে ধর্ষণ একটি গুরুতর অপরাধ হলেও বৈবাহিক ধর্ষণ বেআইনি নয়। চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি, আদালত বৈবাহিক ধর্ষণকে অপরাধীকরণ করা সংক্রান্ত আবেদনের বিষয়ে কেন্দ্রের প্রতিক্রিয়া চেয়েছিল। আর, ২২ মার্চ শুনানির তারিখ হিসেবে ৯ মার্চকে ধার্য করেছিল।
আবেদনের বিষয়গুলো কী?
এবিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের সামনে চারটি ভিন্ন বিষয় রয়েছে। ১) ভারতীয় দণ্ডবিধিতে 'বৈবাহিক ধর্ষণ'-এর সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে দিল্লি হাইকোর্টের দুই বিচারকের বেঞ্চের বিভক্ত রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন। ২) কর্ণাটক হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে একটি আবেদন। সেই রায়ে, এক মহিলাকে ধর্ষণের জন্য তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে বিচারের অনুমতি দিয়েছিল আদালত। আইপিসি ধারা ৩৭৫-এর অধীনে অনুমোদিত 'বৈবাহিক ধর্ষণ'। তাকে চ্যালেঞ্জ করে বৈবাহিক ধর্ষণকেও ধর্ষণের আওতায় ফেলতে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে। ৩) এই ইস্যুতে হস্তক্ষেপ চেয়ে দায়ের হওয়া বিভিন্ন পিটিশন।
কী ছিল দিল্লি হাইকোর্টের মামলা?
২০২২ সালের ১১ মে, দুই বিচারপতি রাজীব শাকধের ও সি হরিশংকর-এর বেঞ্চ ভারতীয় দণ্ডবিধিতে বৈবাহিক ধর্ষণের ক্ষেত্রে প্রদত্ত ব্যতিক্রমকে চ্যালেঞ্জ করে পিটিশন দায়ের করেছিল। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালতের দুই বিচারপতি ভিন্ন রায় দিয়েছিলেন। বিচারপতি শাকধের মনে করেছিলেন, যে বৈবাহিক ধর্ষণকে ধর্ষণ নয়, ব্যতিক্রম বলাটা অসাংবিধানিক। অন্যদিকে বিচারপতি হরিশংকর বৈবাহিক ধর্ষণের বৈধতা বহাল রেখে বলেছিলেন যে এই ব্যতিক্রম, 'একটি বোধগম্য পার্থক্যের ওপর ভিত্তি করে' মনে করা হচ্ছে। যেহেতু এই ব্যাপারে আইনের উল্লেখযোগ্য প্রশ্ন জড়িত ছিল, বিচারপতিরা সেই কারণে সুপ্রিম কোর্টে আবেদনের আর্জি মঞ্জুর করেছিলেন।
আরও পড়ুন- এনডিএ, যা জেগে উঠল নতুন করে, কারা আছে এই জোটে?
ধর্ষণ আইনের এই ‘ব্যতিক্রম’ ঠিক কী?
আইপিসি ধারা ৩৭৫ ধর্ষণকে সংজ্ঞায়িত করে। একইসঙ্গে সম্মতির সাতটি ধারণাকেও তালিকাভুক্ত করে। এই ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ছাড়টি হল, 'কোনও পুরুষ তাঁর নিজের স্ত্রীর সঙ্গে যৌন মিলন বা যৌন ক্রিয়াকলাপ করলে আর তাঁর স্ত্রীর বয়স ১৮ বছরের কম না-হলে, তা ধর্ষণ নয়।'