Advertisment

Explain: ইউক্রেন ইস্যুতে ভারতের অবস্থানকে কুর্নিশ করছে দুনিয়া, কেন?

ইন্দিরা গান্ধী কিন্তু আফগানিস্তানে সোভিয়েত হস্তক্ষেপের নিন্দা করেননি।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
putin

মোদী-পুতিন বৈঠক

আজ থেকে প্রায় ৪০ বছর আগে, ১৯৮২ সালের ২১ সেপ্টেম্বর, ভারত এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন একমত হয়েছিল যে বিশ্বের প্রথম কাজই হল পরমাণু যুদ্ধ এড়ানো। ক্রেমলিনের বৈঠকে, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী এবং সোভিয়েত প্রেসিডেন্ট লিওনিড ব্রেজনেভ পরস্পরের ঐক্যকে শক্তিশালী করে আস্থা বৃদ্ধির মাধ্যমে উত্তেজনা কমানোর ব্যাপারে একমত হন।

Advertisment

ইন্দিরার আহ্বান
সেই সময় ইন্দিরা মহাশক্তিধর দেশগুলোকে অস্ত্র মজুদ করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছিলেন। ব্রেজনেভ প্রস্তাব দিয়েছিলেন যে ন্যাটো এবং ওয়ারশ চুক্তি ঘোষণা করুক যে তারা তাদের কার্যকলাপের ক্ষেত্র এশিয়া, আফ্রিকা এবং লাতিন আমেরিকায় প্রসারিত করবে না।

ভারত-সোভিয়েত সম্পর্ক
রাশিয়ার সরকারি সংস্থা TASS এই আলোচনাকে 'উষ্ণ এবং বন্ধুত্বপূর্ণ' বলে বর্ণনা করেছিল। সঙ্গে বলেছিল যে দুই নেতা, 'এশীয় রাষ্ট্রগুলির ভূখণ্ডে বিদেশী সামরিক ঘাঁটি স্থাপনের বিরুদ্ধে, সার্বভৌম রাষ্ট্রগুলির উপর সামরিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক চাপের বিরুদ্ধে।' এসব বললেও ইন্দিরা গান্ধী আফগানিস্তানে সোভিয়েত হস্তক্ষেপের নিন্দা করেননি।

জোটনিরপেক্ষ অবস্থান
তবে তিনি ঘোষণা করেছিলেন যে ভারত একটি জোটনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। সেই বৈঠকে, ইন্দিরা গান্ধী ঘোষণা করেছিলেন যে ১৯৮৪ সালের ইন্দো-সোভিয়েত মহাকাশ অভিযানের জন্য ভারতীয় বায়ুসেনার দু'জন পাইলট পরীক্ষামূলকভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁরা হলেন স্কোয়াড্রন লিডার রাকেশ শর্মা ও উইং কমান্ডার রবীশ মালহোত্রা।

মোদি-পুতিন বৈঠক, ২০২২
চলতি বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী উজবেকিস্তানের সমরকন্দে সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দেখা করেন। বৈঠকের শুরুতে মোদি পুতিনকে বলেছিলেন, 'আমি জানি যে আজকের যুগ যুদ্ধের নয়। আমি আপনার সঙ্গে ফোনে বহুবার কথা বলেছি। সেসময় বহুবার বলেছি যে গণতন্ত্র, কূটনীতি এবং সংলাপ বর্তমান বিশ্বের মুখ্য বিষয়। আগামী দিনে আমরা কীভাবে শান্তির পথে এগোতে পারি, তা নিয়ে আলোচনার সুযোগ এখন দরকার। আমিও এই ব্যাপারে আপনার দৃষ্টিভঙ্গি বুঝতে চাই।' জবাবে মোদীকে পুতিন বলেছিলেন যে, 'ইউক্রেনের সংঘাত নিয়ে আপনার সংঘাত, আপনার অবস্থানের কথা আমি জানি। অতীতেও এই উদ্বেগ আপনি বহুবার প্রকাশ করেছেন।'

মোদীর সুরই বিশ্বের সুর
যুদ্ধের সাত মাস পর মোদীর সেই মন্তব্য বিশ্ববাসীর নজর কেড়েছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী, যিনি পুতিনের সমালোচনা করা থেকে দূরে ছিলেন, তাঁর কথাগুলোই যেন এখন পশ্চিমের রাষ্ট্রনেতাদের কানে সংগীতের সুরে বাজছে। ইতিমধ্যেই ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ও মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান মোদীর মন্তব্যের প্রশংসা করেছেন। তাঁরাও রুশ প্রেসিডেন্টকে অবিলম্বে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শেষ করতে বলেছেন। এই প্রসঙ্গে ম্যাক্রোঁ বলেন, যেসব দেশ 'নিরপেক্ষ', তাদেরও কথা বলার ঐতিহাসিক দায়িত্ব রয়েছে।

আরও পড়ুন- বিনামূল্যে গ্যাস সংযোগের লক্ষ্যপূরণ হয়নি কেন? আধিকারিককে মঞ্চেই সাসপেন্ড করলেন মুখ্যমন্ত্রী

ভারতের প্রশংসায় ফ্রান্স
ম্যাক্রোঁ, মঙ্গলবার নিউইয়র্কে রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদের সভায় তাঁর বক্তৃতার সময় বলেন, 'ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যখন বলেছিলেন যে এই সময় যুদ্ধের নয়, তখন তিনি ঠিকই বলেছিলেন। এটা পশ্চিমের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য বা প্রাচ্যের বিরুদ্ধে পশ্চিমের বিরোধিতার সময় নয়। আমাদের সার্বভৌম রাষ্ট্রগুলোর এখন একসঙ্গে চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করার সময়।'

আমেরিকাও প্রশংসা করছে ভারতের
পাশাপাশি, ওয়াশিংটন ডিসিতে সুলিভান বলেন, 'আমি মনে করি যে প্রধানমন্ত্রী মোদী যেটাই বলেছেন, তা তিনি সঠিক এবং ন্যায্য বলেই মনে করেন। নৈতিকতার পক্ষে তাঁর এই বিবৃতিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র স্বাগত জানায়।' এই প্রসঙ্গে সুলিভান বলেন, 'সব দেশেরই এই নীতি অনুসরণ করা উচিত। যেখানে কেউ তার প্রতিবেশীর ভূখণ্ডকে বলপ্রয়োগ করে জয় করতে পারবে না।'

Read full story in English

modi Putin Meeting
Advertisment