ফের বড় পর্দায় 'মর্দানি' রানি মুখার্জি। এবার অবশ্য তিনি সাগরিকা চ্যাটার্জি। দুই সন্তানের মা। যাঁর সন্তানদের কেড়ে নিয়েছে নরওয়ের চাইল্ড ওয়েলফেয়ার সার্ভিস। ভারতে যা আকছার ঘটে, মায়ের শাসন-বকাবকি-মারধর। নরওয়েতে সেসব নেই। সেখানে শিশুসুরক্ষা বিধি অত্যন্ত কঠোর। তার সঙ্গে খাপ খায়নি সাগরিকা আচরণ। তাই দুটি শিশুকে তাদের ভারতীয় মায়ের থেকে বাঁচাতে ছিনিয়ে নিয়েছে নরওয়ের শিশু উন্নয়ন পরিষেবা বিভাগ। আর, এসব নিয়েই রানি মুখার্জির নতুন সিনেমা, 'মিসেস চ্যাটার্জি ভার্সেস নরওয়ে।'
আর, মাত্র কয়েক দিন
আগামী মাসে, ১৭ মার্চ মুক্তির আলো দেখবে এই ছবি। ট্রেলার ইতিমধ্যেই, ২৩ ফেব্রুয়ারিই লঞ্চ করেছে। আর, তা রীতিমতো আগ্রহ জাগিয়েছে দর্শককুলের মধ্যে। এক বাস্তব ঘটনা অবলম্বনে তৈরি এই ছবি। যেখানে এক ভারতীয় মহিলার সঙ্গে তাঁর সন্তানদের মিলনে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে নরওয়ে সরকার। এক দশক পুরোনো এক ঘটনা। সেই ঘটনা এই সিনেমার কাহিনি। ঠিক কী ঘটেছিল ওই ভারতীয় মহিলার সঙ্গে?
নরওয়ের জীবনটা শুরুতেই বিস্বাদ
সাগরিকা চক্রবর্তী ভূ-পদার্থবিদ অনুরূপ ভট্টাচার্যকে বিয়ে করেন। এই দম্পতি ২০০৭ সালে নরওয়েতে চলে যান। একবছর পরে, সাগরিকা অভিজ্ঞানের জন্ম দেন। এই দম্পতির প্রথম সন্তান, যার মধ্যে শীঘ্রই অটিজমের লক্ষণ দেখা দেয়। এই সময় ২০১০ সালে, অভিজ্ঞানকে একটি পারিবারিক কিন্ডারগার্টেনে রাখা হয়। সেখানে সে প্রয়োজনীয় সাহচর্য পায়। এই সময় সাগরিকা ফের গর্ভবতী হন। জন্ম নেয় কন্যা ঐশ্বর্যা।
সন্তান কেড়ে নেওয়া
২০১১ সালে ঘটে সেই মর্মান্তিক ঘটনা। নরওয়ের চাইল্ড ওয়েলফেয়ার সার্ভিসেস, যা বার্নেভারনেট নামে পরিচিত (আক্ষরিক অর্থ, 'শিশু সুরক্ষা') ঐশ্বর্যা ও অভিজ্ঞান, দু'জনকেই মা-বাবার থেকে দূরে নিয়ে চলে যায়। তাদের ১৮ বছর না-হওয়া পর্যন্ত একটি পালক বাড়িতে রাখা হয়। বারনেভারনেট বেশ কয়েক মাস ধরে 'পর্যবেক্ষণের পর' সাগরিকা ও অনুরূপের অভিভাবকত্বকে 'অনুপযুক্ত অভিভাবকত্ব' বলে মনে করেছিল।
আরও পড়ুন- সনিয়া গান্ধী, এক অনিচ্ছুক রাজনীতিবিদ যেভাবে হয়ে উঠলেন কংগ্রেসের ভরকেন্দ্র
নরওয়ে প্রশাসনের অভিযোগ
এই দম্পতির বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁরা সন্তানদের তাঁদের সঙ্গে একই বিছানায় ঘুমোতে বাধ্য করেছেন। শিশুদের হাত দিয়ে খাইয়েছেন (যা নরওয়ে কর্তৃপক্ষ জোর করে খাওয়ানো হিসেবে দেখেছিল) এবং শারীরিক শাস্তি (সাগরিকা একবার বাচ্চাদের চড় মেরেছিল বলে অভিযোগ) দিয়েছেন। যদিও ভারতীয় অভিভাবকদের কাছে এই ব্যাপারগুলো বেশ 'স্বাভাবিক'। কিন্তু, নরওয়েতে ব্যাপারটা একদমই আলাদা। নরওয়েতে শিশুদের এবং তাদের লালন-পালনের বিষয়ে অত্যন্ত কঠোর আইন রয়েছে। এই আইনগুলো সাংস্কৃতিক পার্থক্য নির্বিশেষে সর্বজনীনভাবে প্রয়োগ করা হয়।