Kamala Harris US presidential candidate: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের বাবা-মা কে? বৃহস্পতিবার রাতে শিকাগোতে ডেমোক্র্যাটিক ন্যাশনাল কনভেনশনে কমলা হ্যারিস মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদে তাঁর দলের টিকিট পাওয়ার পরে গুগলের সার্চিংয়ে শীর্ষে স্থান পেয়েছেন। প্রাক্তন ফার্স্ট লেডি হিলারি ক্লিনটনের পর কমলা হ্যারিস দ্বিতীয় মহিলা হিসেবে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির হয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
কমলা হ্যারিসের দাবি
হ্যারিস তাঁর উত্থানের পিছনে তাঁর মা শ্যামলা গোপালনের অবদান সবচেয়ে বেশি বলেই জানিয়েছন। তিনি দাবি করেছেন, তাঁর মা তাঁর মধ্যে যে মূল্যবোধগুলো গড়ে দিয়েছেন, সেটা তিনি প্রতিদিন মনে রাখেন। আর, তাঁর মাকে প্রতিদিন মিস করেন। বিশেষ করে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হওয়ার পর আরও বেশি করে তাঁর মাকে মিস করছেন বলেই কমলা হ্যারিস জানিয়েছেন। কমলা হ্যারিস এই দাবি করার পরপরই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে লোকজন গুগলে গিয়ে হ্যারিসের মা-বাবার সম্পর্কে অনুসন্ধান শুরু করেছেন। গুগল ট্রেন্ডস অনুসারে, কমলা হ্যারিসের বাবা-মায়ের ওপর ২০০,০০০-এরও বেশি সার্চিং করা হয়েছে। যা, কমলা হ্যারিসের মা-বাবার সম্পর্কে আগে যা অনুসন্ধান করা হত, তার চেয়ে ১,০০০ শতাংশ বেশি।
পিটিআই রিপোর্টে জানিয়েছে যে জুলাইয়ে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদের দৌড় থেকে সরে আসার পর, ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থীর প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী পদে তাঁর নাম 'অপ্রত্যাশিতভাবে' উঠে আসার বর্ণনা দিতে গিয়ে ৫৯ বছর বয়সি মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস বলেছিলেন যে তিনি এই, 'যাত্রাপথের সঙ্গে অপরিচিত নন। আমেরিকা, সাম্প্রতিক সময়ে যে পথে আমাকে এখানে নিয়ে এসেছে, তা নিঃসন্দেহে অপ্রত্যাশিত ছিল। তবে আমি সেই অসম্ভাব্য যাত্রার সঙ্গে এখন আর অপরিচিত নই।'
কমলা হ্যারিস তাঁর মায়ের কাছে বেড়ে ওঠার গল্প শুনিয়েছেন। তাঁকে তিনি 'একজন ৫ ফুট উচ্চতার বাদামি বর্ণের মহিলা' বলে বর্ণনা করেছেন। কমলা হ্যারিসের কথায়, 'আমার মা শ্যামলা গোপালানের একটা নিজস্বতা ছিল। আমি তাঁকে প্রতিদিন মিস করি। বিশেষ করে এখন। কারণ, আমি জানি যে তিনি আজ রাতে নীচের দিকে তাকিয়ে আছেন এবং হাসছেন।'
কমলা হ্যারিস বলেছেন যে তাঁর মা মাত্র ১৯ বছর বয়সে স্তন ক্যান্সার নিরাময়ের ওষুধ আবিষ্কারক বিজ্ঞানী হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে ভারত থেকে একাই ক্যালিফোর্নিয়া চলে এসেছিলেন। কমলা হ্যারিসের কথায়, 'তিনি বেশ শক্তসমর্থ মানুষ ছিলেন। কখনও নিজেকে প্রকাশ করতেন না। কিন্তু, তিনি আমাদের শিখিয়েছেন কখনও অন্যায়ের বিরুদ্ধে আপস না করতে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে কিছু না কিছু একটা করতে! তিনি আমাদের শিখিয়েছিলেন, কখনও অর্ধেক জেনে কিছু করবে না। যা বলার, সরাসরি বলবে।'
কমলা জানিয়েছেন, তাঁর মা বিয়ের জন্য দেশেই ফিরছিলেন। কিন্তু, সেই সময় তাঁর বাবা জামাইকার একজন ছাত্র ডোনাল্ড হ্যারিসের সঙ্গে তাঁর দেখা হয়। আর, তিনি তাঁর প্রেমে পড়েন। কমলা হ্যারিসের মা শ্যামলা গোপালন বিখ্যাত স্তনক্যানসার বিজ্ঞানী ছিলেন। তিনি ১৯৬৪ সালে ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া, বার্কলে থেকে পিএইডি করেন। কমলা হ্যারিসের বাবা ডোনাল্ড হ্যারিস স্নাতকস্তরের ছাত্র ছিলেন। তিনি নাগরিক অধিকার আন্দোলনের কর্মীও ছিলেন। ১৯৬৩ সালে শ্যামলা গোপালন এবং ডোনাল্ড হ্যারিসের বিয়ে হয়। তাঁদের দুই মেয়ে। কিন্তু, কমলা হ্যারিসের যখন সাত বছর বয়স, তখন তাঁর মা-বাবার ডিভোর্স হয়ে যায়। শ্যামলা গোপালন ৭০ বছর বয়সে ২০০৯ সালে মারা যান।
আরও পড়ুন- আরজি কর-কাণ্ড! 'মমতা' নামে ব্যাপক সার্চ গুগলে
ডোনাল্ড হ্যারিস পরবর্তীতে একজন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ হন। তিনি ১৯৭২ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক ছিলেন। ৮৫ বছর বয়সি ডোনাল্ড হ্যারিস বর্তমানে একজন ইমেরিটাস অধ্যাপক। তিনি জ্যামাইকা সরকার এবং এর সেদেশের বেশ কয়েকজন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক পরামর্শদাতা ছিলেন।