দুই মহিলার নরবলির ঘটনায় উত্তপ্ত কেরল। তদন্তকারীদের ধারণা, ওই দুই মহিলা ডাইনি প্রথার বলি হয়েছেন। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন ওই দুই মহিলাকে অপহরণ করা হয়েছে। এরপর তাঁদের মুণ্ডচ্ছেদ করে কবর দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার, ১১ অক্টোবর ঘটনাটি ঘটেছে পাঠানমথিত্তা জেলার এলানথুর গ্রামে। ধৃতরা কি নরখাদক? এই অভিযোগও উড়িয়ে দিচ্ছেন না তদন্তকারীরা। ধৃত তিন জনের মধ্যে একজন সিপিআই (এম)-এর সদস্য। তবে, পরিস্থিতি গুরুতর হয়ে পড়ায় সেই সদস্যর পাশেও দাঁড়ায়নি দল।
কেন্দ্রীয় আইন নেই
উলটে বলেছে, গোটা ঘটনাটি কুসংস্কারের ফল। এই ধরনের কুসংস্কার রুখতে কড়া আইন তৈরি করা দরকার। আর, সেই আইন কডা় ভাবে প্রয়োগের প্রয়োজন। ভারতে ডাইনি প্রথা রোখার কোনও কেন্দ্রীয় আইন নেই। তবে, রাজ্যভিত্তিক আইন আছে। যেমন, মহারাষ্ট্র এবং কর্ণাটকে ব্ল্যাক ম্যাজিক এবং কুসংস্কার রোখার আইন আছে। কিন্তু, সেই আইনেও ডাইনি প্রথার বিরুদ্ধে কিছু বলা নেই।
কেন 'ডাইনি' তকমা
কুসংস্কার বিরোধী আইনগুলো মহিলাদের রক্ষা করার জন্য তৈরি করা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা অনেককেই 'ডাইনি' তকমা দিয়ে সেই সব মহিলাদের ওপর অত্যাচার চালায় বলে অভিযোগ। অতীতে এমন ধরনের বহু অভিযোগ উঠেছে। এই ধরনের ঘটনার পর সমাজে একটা আতঙ্ক তৈরি হয়।
আরও পড়ুন- হিন্দুদের দাবি খারিজ, জ্ঞানবাপীর ‘শিবলিঙ্গ’-এর বয়স জানতে পরীক্ষায় ‘না’ আদালতের
গতবছরের হিসেব
২০২১ সালের ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর হিসেব অনুযায়ী, ছত্তিশগড়ে ২০টি, মধ্যপ্রদেশে ১৮টি এবং তেলেঙ্গানায় ১১ জনের ওপর ডাইনি তকমা দিয়ে অত্যাচার চালানো হয়েছে। সব মিলিয়ে গতবছর দেশে এমন ধরনের ৬৮টি ঘটনার অভিযোগ উঠেছে। যার মধ্যে ৪৯টিতে মামলা দায়ের হয়েছে।
বিহারে ডাইনিচর্চা রুখতে আইন
দেশের মধ্যে নানা ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকলেও বিহারই প্রথম রাজ্য, যারা ডাইনি তকমা দিয়ে মহিলাদের ওপর অত্যাচারের বিরুদ্ধে ১৯৯৯ সালে আইন করেছে। বিহারের এই আইন অনুযায়ী, 'ডাইনি বিদ্যাচর্চা এবং একজন মহিলাকে ডাইনি তকমা দিয়ে চিহ্নিত করা, তাঁর ওপর নিপীড়ন চালানো, উপজাতি অঞ্চলে এই কায়দায় নারী নির্যাতন, অপমান ও হত্যা প্রতিরোধ করবে এই আইন।'
Read full story in English