পর্তুগালের অধিনায়ক ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো আড়াই বছরের চুক্তিতে সৌদি আরবের ক্লাব আল নাসেরে যোগ দিয়েছেন। ৩৭ বছরের খেলোয়াড়ের সঙ্গে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের চুক্তি মাসখানেক আগেই বাতিল হয়েছে। তারপর থেকেই রোনাল্ডো ছিলেন ফ্রি এজেন্ট। দেখে নেওয়া যাক রোনাল্ডোর নতুন ক্লাবটা কেমন?
আল নাসের
১৯৫৫ সালে গড়ে উঠেছিল আল নাসের ক্লাব। সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে এই ক্লাব। সৌদি প্রফেশনাল লিগ (এসপিএল)-এর শীর্ষ ডিভিশনে খেলে। এই ডিভিশনে মোট ১৮টি দল আছে। গত মরশুমে লিগে তৃতীয় হয়েছিল। চ্যাম্পিয়ন আল হিলাল-এর চেয়ে ৬ পয়েন্ট কম পেয়েছিল আল নাসের।
গতবার তৃতীয় হলেও অবশ্য লিগ খেতাব ৯ বার তাদের ঝুলিতে রয়েছে। ২০১৮-১৯ সালে তারা শেষবার খেতাব জিতেছিল। তাই বলে আল হিলাল-এর সঙ্গে অবশ্য আল নাসের ক্লাবের তুলনাই চলে না। কারণ, আল হিলাল ইতিমধ্যেই ১৮ বার লিগের খেতাব জিতেছে।
শুধু লিগই না। সৌদির নকআউট টুর্নামেন্ট কিংস কাপেও, আল নাসের ক্লাবের বিরাট সাফল্য। তারা ৬ বার কিংস কাপ জিতেছে। শেষবার জিতেছে ১৯৯০ সালে। লিগের সর্বকালের সর্বোচ্চ স্কোরার মাজেদ আবদুল্লাহ খেলেছেন আল নাসরের হয়ে। প্রাক্তন সৌদি স্ট্রাইকার মাজেদ ১৮৯ গোল করেছেন সৌদির লিগে। তাঁর প্রতিটি ম্যাচেই গড়ে প্রায় একটি গোল আছে।
আল নাসেরের ঘরের মাঠ মরসুল পার্ক। এই মাঠে ২৫ হাজার দর্শক ধরে। এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগেও আল নাসের ক্লাবের দারুণ সাফল্য আছে। ১৯৯৫ সালে তারা এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে রানার্স হয়েছিল। এমনিতে এএফসি কাপে সৌদির ক্লাবগুলোর দুর্দান্ত পারফরম্যান্স। তার মধ্যে আল হিলাল রেকর্ড সংখ্যক চারবার খেতাব জিতেছে। আল ইত্তিহাদ এএফসি কাপ জিতেছে দু'বার।
আল নাসেরের কোচ কে, কারা আছেন লাইনে?
আল নাসেরের বর্তমান কোচ রুডি গার্সিয়া। গত জুন থেকে তিনি দায়িত্বে। এর আগে লিলি, এএস রোমা, অলিম্পিক মার্সেই এবং অলিম্পিক লিওনাইসের মত দলকে কোচিং করিয়েছেন গার্সিয়া।
সৌদির লিগে নিয়ম হল, আট জন বিদেশি খেলোয়াড়ের নাম নথিভুক্ত করানো যায়। তার মধ্যে কেবল সাত জন ম্যাচের দিন দলে থাকতে পারে। আল নাসেরে অন্যান্য নামী বিদেশি খেলোয়াড়দের মধ্যে রয়েছেন ক্যামেরুনের বিশ্বকাপার ভিনসেন্ট আবুবাকার। তিনি কাতার বিশ্বকাপে সার্বিয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচে ক্যামেরুনের হয়ে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছিলেন। পাশাপাশি, গ্রুপের শেষ খেলায় ব্রাজিলের বিরুদ্ধে গোল করে ক্যামেরুনকে জয়ী করেছিলেন। এছাড়াও দলে আছেন কলম্বিয়ার গোলকিপার নাপোলি এবং আর্সেনালে খেলা ডেভিড ওসপিনা। এছাড়াও দলে আছেন ব্রাজিলের প্রাক্তন জাতীয় খেলোয়াড় তথা মিডফিল্ডার লুই গুস্তাভো।
চলতি মরশুমে আল নাসেরের ফল কেমন?
সৌদির লিগে ১০ রাউন্ড খেলার পর দ্বিতীয় স্থানে আছে। তাদের চেয়ে দুই পয়েন্ট এগিয়ে আছে আল শাবাব। ২০২৩-২৪ এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে হলে আল নাসেরকে লিগ জিততেই হবে।
আরও পড়ুন- বিশ্বকাপে এমবাপের হাত ধরে মাঠে প্রবেশ এই ভারতীয়র! কে এই বালক, চমকে দেবে পরিচয়
কেন রোনাল্ডোকে আল নাসের নিল?
ক্লাব ফুটবলে রোনাল্ডোর ৭০০-র বেশি গোল আছে। আন্তর্জাতিক ফুটবলে আছে ১০০-র বেশি গোল। সব মিলিয়ে ৮১৯ গোল করে তালিকায় সর্বকালের সেরার স্থানে আছেন তিনি। গত মরশুমে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের প্রথম একাদশে জায়গা পাওয়ার জন্য তাঁকে রীতিমতো ঘাম ঝরাতে হয়েছে। তারপরও ব্রিটিশ প্রিমিয়ার লিগে ১৮টি-সহ মোট ২৪টি গোল করে তিনি সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছেন। তবে, ম্যান ইউ ছাড়ার আগে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে মাত্র তিনটি গোল করেছেন।
কাতারে, তিনি পাঁচটি বিশ্বকাপে গোল করা প্রথম খেলোয়াড়ের যোগ্যতা অর্জন করেন। কিন্তু পর্তুগাল নকআউট পর্বে পৌঁছতেই প্রথম একাদশ থেকে বাদ যান রোনাল্ডো। চলতি মরশুমে আল নাসের যে স্ট্রাইকারের সমস্যায় ভুগছে, তা কিন্তু নয়। তবে, প্রথম স্থানে থাকা আল শাবাবের মতই তারা সৌদির লিগে ১০টি ম্যাচ শেষে ২৪টি গোল করেছে। এই অবস্থায় শাবাবকে টেক্কা দিতেই রোনাল্ডোকে নিল আল নাসের।
Read full story in English