Advertisment

Explained: ঋণে বাড়ছে সুদ, চাপ বাড়বে পকেটে, ব্যাংকগুলি থেকে বেরিয়ে যাবে বিশাল টাকাও, কেন?

কিছু দিন আগে আমেরিকার কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার বাড়িয়েছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
bazar

আরবিআই তাদের সুদের হার বাড়িয়ে দিয়েছে বুধবার। যা ঘটেছে অকস্মাৎ, নির্দিষ্ট সময় অন্তর যে বৈঠকে এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে থাকে, তার বাইরে হেঁটে। অফ-সাইকেল মিটিং যাকে বলা হচ্ছে। আরবিআই যে টাকা ব্যাংকগুলিকে ধার দেয়, তার উপর ধার্য থাকে যে সুদ, তাকে রেপো রেট বলে, সেই রেপো কেন্দ্রীয় এই ব্যাংক এই বৈঠকে বাড়িয়েছে দশমিক ৪০ শতাংশ। আগে যা ছিল ৪ শতাংশ। বেড়ে হচ্ছে এর ফলে ৪.৪০ শতাংশ।

Advertisment

ক্যাশ রিজার্ভ রেশিও, মানে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলিকে ডিপোজিট থাকা অর্থের যে অংশটি আরবিআইয়ের কাছে জমা রাখতে হয় বাধ্যতামূলক ভাবে, সেটা বেড়েছে দশমিক ৫০ শতাংশ। যা আগে ছিল ৪ শতাংশ। মুদ্রাস্ফীতি চড়চড়িয়ে বেড়ে চলেছে, বাজারে গেলে ছেঁকা লাগছে হাতে। তাতে লাগাম পরাতেই এই দুই বৃদ্ধি। রেপো চার বছরে এই প্রথম বাড়ল। মোটামুটি গত দু'বছর এর স্থিতাবস্থার কারণ ছিল মহামারির ধাক্কার রুগ্ণ অর্থনীতি। আরবিআই সুদের হার বাড়ালে ব্যাংকগুলিও সুদের হার বাড়াবে। ফলে ঋণ পরিশোধে বেশি সুদ গুনতে হবে, এতে করে আম জনতার পকেটে চাপ লাগবে। কিন্তু এখন মুদ্রাস্ফীতির বাড়বাড়ন্তকে লাগাম না-দিলেই চলছে না আর, রেপো রেট বাড়ানো ছাড়া উপায় ছিল না কিছু, বলা যেতে পারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গিয়েছিল।

এই প্রসঙ্গে বলে নিতে হবে যে, কিছু দিন আগে আমেরিকার কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার বাড়িয়েছে, আরও বাড়াচ্ছে বুধবার। ঠিক তার আগে এই সিদ্ধান্তে স্থিতাবস্থা ভেঙেছে আরবিআই। না হলে ওই আর্থিক চাপ আরও বাড়ত। শেয়ার বাজার বিশাল ধাক্কা খেত। যদিও মহামারি পরবর্তী অর্থনীতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার পথে যে পদক্ষেপ পরের-পর করছিল আরবিআই, তা ধাক্কা খেল কিনা, সেই প্রশ্ন উঠেছে। মনিটারি পলিসি কমিটি বা এমপিসি-র বৈঠকে অবশ্য মহামারির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার নীতি বা অ্যাকোমোডেটিভ পলিসিতেই তারা থাকবে বলে স্থির করেছে রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া।

আরও পড়ুন- মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পদক্ষেপ রিজার্ভ ব্যাংকের, বাড়ানো হল রেপো রেট

সুদ বৃদ্ধির প্রভাব ঠিক কী?
বাড়ি গাড়ি কিংবা ব্যক্তিগত যে ঋণ রয়েছে, তার সুদ বাড়বে। ইএমআই বেশি দিতে হবে। কারণ বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলিকে তো আরবিআইয়ের থেকে নেওয়া অর্থে সুদ বেশি দিতে হচ্ছে, ফলে আপনার থেকে সেইটি তারা উসুল করবে। এতে আমার আপনার হাতে যে টাকাপয়সা রয়েছে, যাকে লিকুইডিটি বা নগদের পরিমাণ বলে, সেটা কমবে। এখানে লক্ষ্য করতে হবে, রিভার্স রেপো রেট বাড়ায়নি আরবিআই। যা এখন ৩.৩৫ শতাংশ।

রিভার্স রেপো রেট অর্থাৎ বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলি থেকে যে টাকা আরবিআই নিচ্ছে, তার উপরে যে সুদ দিতে হয়। রিভার্স রেপোর চেয়ে রেপো এখন আগের চেয়ে দশমিক ৪০ শতাংশ বেশি। ফলে ব্যাংকগুলি চাইবে না আরবিআইয়ের কাছে বেশি টাকা রাখতে, বরং সুদের হার বাড়িয়ে ঋণ দিতে তারা বেশি আগ্রহী হবে। কিন্তু ক্যাশ রিজার্ভ রেশিও বা সিআরআর বাড়ানো হয়েছে, বাড়তি ঋণের পথও তাই অনেকটা বন্ধ হচ্ছে। আগে ব্যাংকগুলি তাদের ডিপোজিট অর্থের যে পরিমাণ আরবিআইয়ের কাছে রাখত, সিআরআর বাড়ানোয় এখন তার চেয়ে বেশি রাখতে তারা বাধ্য থাকবে।

সিআরআর দশমিক ৫০ শতাংশ বাড়ানোর ফলে দেখা যাচ্ছে ৮৭ হাজার কোটি টাকা ব্যাংকিং ব্যাবস্থা থেকে বেরিয়ে গিয়ে জমা হচ্ছে আরবিআইয়ের ঘরে। ধার দেওয়ার জন্য অর্থের ভাঁড়ার কমবে ব্যাংকগুলির তহবিলে এর ফলে। এক দিকে ঋণে সুদ বাড়িয়ে বেশি টাকা পাবে ব্যাংকগুলি, আর তাদের হাতের টাকা আগের চেয়ে বেশি আরবিআইয়ের ঘরে তাদের দিয়ে দিতে হবে। দু'পথেই বাজারের নগদের পরিমাণ কমবে, যা এখন আরবিআইয়ের টার্গেট।

Read story in English

Advertisment