Worship of Lord Ganesh: প্রতিবছরই গণেশ চতুর্থী উপলক্ষে উৎসবে মেতে ওঠে গোটা মহারাষ্ট্র। আগেও হত। কিন্তু, এতটা বড় করে নয়। এই বড় করে গণেশ উৎসব পালনের শুরুটা হয়েছিল ১৮৯৩ সালে। এক মহান দেশপ্রেমিকের হাত ধরে। তিনি ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে হিন্দু সমাজকে ঐক্যবদ্ধ ও সংঘবদ্ধ করার উপায় খুঁজছিলেন। এজন্য ভারতীয় সংস্কৃতিতে নিহিত এবং হিন্দু প্রতীকবাদের সঙ্গে মিশে থাকা অনুষ্ঠানকেই তিনি কাজে লাগাতে চেয়েছিলেন। যদিও এজন্য কিছু মহল থেকে তিনি সমালোচিতও হন। তবুও নিজের ভূমিকায় অটুট থাকেন ওই দেশপ্রেমিক।
Advertisment
আসলে ১৯ শতকের শেষের দিক থেকেই, ভারত এবং ব্রিটেনে জাতীয়তাবাদী ভাবনা মাথাচাড়া দিতে শুরু করে। এই সময়ই নাগরিক, তাঁর অধিকার, সরকারের প্রতি নাগরিকের ভাবনা- এসব চিন্তার বিকাশ ঘটে। ১৮৫৭ সালে সিপাহি বিদ্রোহের মাধ্যমে ব্রিটিশ শাসনকে উৎখাতের চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু, সেটা ছিল ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসন। তার পরপরই ভারতের চালু হয়ে গিয়েছিল ব্রিটিশরাজের শাসন। সেই শাসনেই নতুনভাবে গড়ে ওঠার চেষ্টা শুরু করে ভারত। আর, তখনই ভারতে জাতীয়তাবাদের বিকাশ ঘটতে শুরু করে। সেই বিকাশের লক্ষ্য, ব্রিটিশ শাসনকে পুরোপুরি উৎখাত নয়। বরং, তার লক্ষ্য ছিল ব্রিটিশের কাছ থেকে দাবি আদায়।
এই পরিস্থিতিতে তিলক স্বরাজের ডাক দিয়েছিলেন। যিনি সেই ডাক দিয়েছিলেন, সেই দেশপ্রেমিকের নাম বাল গঙ্গাধর তিলক। তিনি ছিলেন আইনজীবী, সাংবাদিক, সমাজকর্মী, স্বাধীনতা সংগ্রামী। জনগণ তাঁকে বলতেন 'লোকমান্য' বা জননেতা। আর, ব্রিটিশ সরকারের চোখে তিনি ছিলেন ভারতে অস্থিরতার জনক। হোমরুল আন্দোলনের জনক তিলক, 'মারাঠা' এবং 'কেশরী' নামে দুটি পত্রিকা সম্পাদনা করতেন। পাশাপাশি, তিনি 'গীতা রহস্য' নামে একটি বইও লেখেন। তিলক বুঝতে পেরেছিলেন, ধর্মপ্রধান দেশ ভারতবর্ষে দেশবাসীকে একত্রিত করতে হলে ধর্মের মাধ্যমেই করতে হবে। আর, এই একত্রিত করেই জাতীয়তাবাদ জাগিয়ে তুলতে হবে দেশবাসীর মনে। আর সেই কারণেই, মহারাষ্ট্রের ঘরে ঘরে প্রচলিত গণেশ পূজাকে তিনি বড় আকারে আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেন। যা বর্তমানে গণেশ উৎসবের চেহারা নিয়েছে।