৬ মাসে আগেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উপর ভরসা রেখেছিলেন। শতায়ু বৃদ্ধ ছেলের মোবাইলে মোদীর বক্তব্য শুনতে শুনতে বলেছিলেন, "মোদী আমার ভগবান। নাগরিকত্ব আইন এসেছে। আবার আর ভারতের নাগরিকত্ব পাওয়া আটকাবে না।" কিন্তু আশা পূরণ হল না ১০৪ বছরের চন্দ্রধর দাসের। বিদেশি তকমা নিয়েই মৃত্যু হল আসামের বাসিন্দারা। বছর দুয়েক আগে নাগরিকত্বের তালিকা থেকে বাদ পড়েছিলেন। যেতে হয়েছিল ডিটেনশন ক্যাম্পে। মেয়ে বলেছেন, "বাবার শেষ ইচ্ছে ছিল, নাগরিকত্ব পেয়ে বিদেশি তকমা মুছে দেবেন। কিন্তু কিছুই হল না। বিদেশি হয়েই মরতে হল তাঁকে।"
গত রবিবার শতায়ু বৃদ্ধ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তিন মাস ডিটেনশন ক্যাম্পে ছিলেন তিনি। কাছাড় জেলার বরাইবস্তিতে ছেলের ছোট কুড়েঘরে মৃত্যু হল বিদেশি এই বৃদ্ধের। শিলচর থেকে প্রায় ৩০ কিমি দূরে হিন্দু অধ্যুষিত বরাক উপত্যকায় মেয়ে নিয়তি দাসের স্মৃতিতে উঠে এল বাবার কথা। রাস্তায় মোদীর পোস্টার দেখলেই হাতজোড়ে প্রণাম করতেন তিনি। কিন্তু নিয়তির কথায়, "এক বছর হয়ে গেল নাগরিকত্ব আইন কার্যকর হল না। কিন্তু বাবার সেই 'ভগবান' কী করল?" কান্নায় ভেঙে পড়ে তাঁর আকুতি, "বাবা শুধু ভারতীয় হিসাবে মরতে চেয়েছিলেন। তিনি চেষ্টাও করলেন। এক আদালত থেকে আরেক আদালতে ছুটে। আইনজীবী থেকে সমাজকর্মী, সবার কাছে কাগজ জমা দিলেন। আর তারপর একদিন তিনি মারা গেলেন। আইনের চোখে আমরা এখনও বিদেশি। নয়া আইনে আমাদের জন্য কিছু হয়নি।"
আরও পড়ুন তবলিঘি জামাতকাণ্ডে খালাস ৩৬ বিদেশি, নির্দেশ দিল্লির আদালতের
শিলচরের প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ সুস্মিতা দেব সোমবার চন্দ্রধরবাবুর বাড়িতে যান। পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতের পর তিনি বলেন, এই আইন একটা হাতিয়ার মাত্র। কিন্তু এবার এটা শেষ করার সময় এসেছে। হিন্দু বাঙালি ভোটের মেরুকরণ বন্ধ করতে হবে। যদিও নাগরিকত্ব আইন কার্যকর হয়নি। এই আইন কাউকেই এখনও নাগরিকত্ব দেয়নি। তাহলে কেন বিজেপি এখনও ডিটেনশন ক্যাম্পে থাকা হিন্দু বাঙালিদের সাহায্য করছে না? বিজেপি সাংসদ ড. রাজদীপ রায়ের দাবি, করোনা অতিমারীর জন্য এই আইন কার্যকর হয়নি।
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন