চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে ১৬ নৃশংস হত্যাকাণ্ডের সাক্ষী কাশ্মীর উপত্যকা। গত কয়েক মাসে জঙ্গিদের রোষের বলি হয়েছেন পুলিশ আধিকারিক থেকে শুরু করে শিক্ষক, সরপঞ্চ-সহ কমপক্ষে ১৬ জন। জম্মু কাশ্মীর পুলিশের ডিজিপি দিলবাগ সিং দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন, স্থানীয় বাসিন্দারা এখন জঙ্গিদের নির্দেশে সাড়া দিচ্ছেন না। তাই সংখ্যালঘু থেকে শুরু করে সাধারণ নাগরিক ও সরকারি কর্মীদের জঙ্গিরা নিশানা করে আতঙ্কের আবহ তৈরি করে রাখতে চাইছে।
অশান্ত উপত্যকা। নিত্যদিন ভূস্বর্গের বিভিন্ন প্রান্তে জঙ্গিরা নিশানা করছে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষজনকে। এই হামলার মধ্য দিয়ে উপত্যকায় নিজেদের অস্তিত্ত্ব জানান দিতে চাইছে জঙ্গিরা, এমনই মনে করছেন জম্মু কাশ্মীরের পুলিশের ডিজিপি। তাঁর মতে, এই মুহূর্তে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলটি স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্যও আরও বেশি ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে। কারণ উপত্যকার বাইরের এলাকাগুলি এবার এই অঞ্চলের বাসিন্দাদের জন্য বিপজ্জনক হয়ে ওঠার আশঙ্কা রয়েছে।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে শ্রীনগরের কৃষ্ণ ধাবার মালিকের ছেলেকে রেস্তোরাঁর ভিতরে ঢুকে এলোপাথাড়ি গুলি করে জঙ্গিরা। দু'দিন পর হাসপাতালে মৃত্যু হয় ওই যুবকের। সেই হত্যাকাণ্ডের পর থেকে উপত্যকায় জঙ্গি হামলার ঘটনা আরও বাড়তে শুরু করে। তারও আগে ২০২১-এর ৫ অক্টোবর উপত্যকার বিশিষ্ট কেমিস্ট এম এল বিন্দ্রুকে তাঁর দোকানে ঢুকে খুন করে জঙ্গিরা। সেই হত্যাকাণ্ডের পর থেকে ভূস্বর্গে নাগরিকদের নিরাপত্তা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন উঠতে শুরু করে।
আরও পড়ুন- মাঙ্কিপক্স নিয়ে গাইডলাইন প্রকাশ কেন্দ্রের, বিশ্বজুড়ে ৩০০ আক্রান্তের হদিশ
ওই ঘটনার দু'দিন পরে সঙ্গমের সরকারি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ সুপিন্দর কৌর এবং স্কুলের শিক্ষক দীপক চন্দকে গুলি করে খুন করে জঙ্গিরা। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর উপত্যকায় জঙ্গি হামালায় ৩৫ জন সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে, নিরাপত্তাবাহিনীর গুলিতে গত বছর ১৮২ জঙ্গিও নিহত হয়েছে।
উপত্যকার পুলিশ প্রশাসন জানিয়েছে, ঠিক এমন একটি সময়ে জঙ্গিদের হামলা বাড়তে শুর করেছে, যখন বিভিন্ন জঙ্গি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অলআউট অভিযান জারি রয়েছে। প্রায় সব জঙ্গি সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের নিকেশ করেছে নিরাপত্তাবাহিনী। একইসঙ্গে জঙ্গিদের সাপোর্ট লাইনও অনেকাংশে ধ্বংস করা গিয়েছে বলে দাবি পুলিশের।
পুলিশের মতে, হতাশাগ্রস্ত হয়েই জঙ্গিরা উপত্যকায় নিরস্ত্র পুলিশ, নিরপরাধ সাধারণ নাগরিক, রাজনীতিবিদ এবং মহিলা ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নাগরিকদের নিশানা করছে। কাশ্মীরে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা ও ভয়ের পরিবেশ তৈরি করা রাখার উদ্দেশ্যেই নির্বিচারে এই হত্যালালী চালাচ্ছে জঙ্গিরা।
Read full story in English