Advertisment

বিহারে ১৭৫ জন পুলিশ কনস্টেবল ডিসমিস, অধিকাংশই মহিলা

শরীর খারাপ হওয়া সত্ত্বেও সবিতা পাঠককে ডিউটি দেওয়ার অভিযোগ তুলে ট্রেনি কনস্টেবলরা ভাঙচুর শুরু করেন, পুরো পুলিশ লাইন তছনছ করা হয়, পুলিশ অফিসারদের গাড়ি রাস্তার ওপর উল্টে দেওয়া হয়।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

প্রতীকী ছবি

বিহারে ১৭৫ জন পুলিশ কনস্টেবলের চাকরি গেল। এঁদের অধিকাংশই মহিলা। এই পুলিশ কর্মীদের বিরুদ্ধে হিংসা ও ভাঙচুরের ঘটনার উস্কানির অভিযোগ আনা হয়েছে. গত শুক্রবার এক মহিলা সহকর্মীর মৃত্যুর পর তাঁরা এ ঘটনা ঘটান বলে পুলিশের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানিয়েছেন।

Advertisment

পাটনা বিভাগের আইজিপি নাইয়ার হাসনান খান রবিবার জানিয়েছেন, যাঁদের ডিসমিস করা হয়েছে তাঁদের মধ্যে ১৬৭ জন শিক্ষানবিশ রয়েছেন।

আরও পড়ুন, যৌন হেনস্থায় অভিযুক্ত উত্তরাখণ্ড বিজেপি-র সাধারণ সম্পাদক অপসারিত

হাসনান খানের উপরেই এ ঘটনার তদন্তভার দেওয়া হয়েছে। বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দায়িত্বও তাঁর উপরেই। তিনি জানিয়েছেন, ‘‘শিক্ষানবিশ যে সব কনস্টেবলদের ডিসমিস করা হয়েছে তাঁদের অর্ধেকেরও বেশি মহিলা। ট্রেনি কনস্টেবলদের দায়িত্ব বিতরণের ভার যাঁদের উপর ছিল সেরকম এক হেড কনস্টেবল ও আরও দুজনকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।’’

গত শুক্রবার সকালে এক বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় পুলিশকর্মী সবিতা পাঠকের। তার একদিন আগে পেটের যন্ত্রণার কারণে তাঁকে ডিউটি থেকে সরিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

শরীর খারাপ হওয়া সত্ত্বেও সবিতা পাঠককে ডিউটি দেওয়ার অভিযোগ তুলে ট্রেনি কনস্টেবলরা ভাঙচুর শুরু করেন, পুরো পুলিশ লাইন তছনছ করা হয়, পুলিশ অফিসারদের গাড়ি রাস্তার ওপর উল্টে দেওয়া হয়। দাঙ্গা নিয়ন্ত্রক পরিস্থিতি বলবৎ করিয়ে অবস্থা নিয়ন্ত্রণে আনতে দীর্ঘ সময় লাগে উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিকদের।

পুলিশ কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে জানানো হয়েছে ডেঙ্গুর কারণেই মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পরে জানিয়েছে, যে রোগীর ডেঙ্গু পরীক্ষা করা হয়নি, তবে একাধিক ভাইরাল সংক্রমণে ভুগছিলেন তিনি।

আইজি খান বলেছেন, ‘‘তদন্তের সময়ে আমরা জেনেছি যে সবিতা পাঠক সত্যিই অসুস্থ ছিলেন এবং অক্টোবর মাসে তিনি তিনদিনের মেডিক্যাল লিভও নিয়েছিলেন। এই পরিস্থিতিতে তাঁকে কাজে যোগ দিতে বলা উচিত হয়নি।’’

আইজি আরও জানিয়েছেন যে তিনি পুলিশ হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন। তাঁর মতে, চিকিৎসক যদি মৃত কনস্টেবলের স্বাস্থ্যের পুরো খোঁজ রাখতেন এবং তাঁকে যথাযথ পরামর্শ ও চিকিৎসা দিতেন তাহলে হয়ত সবিতা পাঠক বেঁচেও যেতে পারতেন। তিনি বলেন, ‘’আমি দেখলাম ৯০ শতাংশ পুলিশ কর্মী ৪ বছরেরও বেশি সময় ধরেএই পুলিশ লাইনেই পোস্টেড রয়েছেন। এটা হতে পারে না, খুব তাড়াতাড়িই এঁদের পাটনা জোনের বাইরে বদলি করা হবে।’’

বিভাগীয় তদন্ত ছাড়াও যাঁরা বিশৃঙ্খলায় মদত দিয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইজি। এ ঘটনায় মোট চারটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি এফআইআর করেছেন, পুলিশ লাইনের দায়িত্বে থাকা ডিএসপি মহম্মদ মাসালউদ্দিন। এ ঘটনায় তাঁকে শুধু মারধরই করা হয়নি, তাঁর বাড়ি পর্যন্ত ধাওয়া করে বাড়ি ভাঙচুর করা হয় এবং পরিবারে সদস্যদের সঙ্গে অভব্য ব্যবহার করা হয়।

আন্দোলনকারীদের অভিযোগ ছিল, সবিতা পাঠকের মৃত্যুর জন্য দায়ী ডিএসপি নিজে। সে অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন আইজি।

আইজি বলেছেন, ‘‘আমাদের সন্দেহ আন্দোলনকারীদের খেপিয়ে দিয়েছিল এমন কিছু কর্মী, যাদের বিরুদ্ধে আগে ওই অফিসার বিভিন্ন কারণে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিলেন।’’

বিহার পুলিশের ডিজি কে এস দ্বিবেদীর কাছে  বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার গোটা ঘটনার রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন।

police bihar
Advertisment