অসমে ভয়াবহ বন্যা! প্রবল বৃষ্টি ও ভুমিধ্বসে রবিবারই মৃত্যু হয়েছে আটজনের। এই নিয়ে রাজ্যে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৭০। রাজ্যের ৩০টি জেলার প্রায় সাড়ে চার হাজারের বেশি গ্রাম বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যার কারণে প্রায় ৪০ লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গতকালই রাজ্যে ভুমিধ্বসের কারণে তিনজনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। তলিয়ে গিয়েছে আরও পাঁচ জানিয়েছে রাজ্যের দুর্যোগ মোকাবিলা দফতর।
এদিকে মৃত্যুপুরী অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার সঙ্গে বন্যার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেন প্রধান মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বন্যা মোকাবিলায় অসমকে সবরকমের সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। এবিষয়ে কেন্দ্রের তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “অসমের বন্যা পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। ইতিমধ্যেই সেখানে এনডিআরএফ দল মোতায়েন করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে’। গতকালই মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা একাধিক ত্রাণ শিবির ঘুরে পরিস্থিতি সরজমিনে খতিয়ে দেখেন।
আসামের সাতটি জেলায় টানা চার দিন ধরে বন্যায় আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধারে নামানো হয়েছে সেনা। রাজ্যের দুর্যোগ মোকাবিলা দফতর সূত্রের খবর গত কয়েকদিনে বন্যায় আটকে পড়া প্রায় সাড়ে চার হাজার মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে জাতীয়সড়ক এবং পাঁচটি রাজ্যসড়ক ক্ষতিগ্রস্ত । বিভিন্ন অঞ্চলে বিদ্যুৎ ও মোবাইল সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। লামডিং-বদরপুর এলাকায় ৫০টির বেশি স্থানে ভুমিধসের কারণে ত্রিপুরা, মণিপুর, মিজোরাম এবং দক্ষিণ আসামের বিস্তীর্ণ অংশে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা।
অসমের বন্যা নিয়ে এবার উদ্বেগ প্রকাশ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রাজ্য়ের পরিস্থিতি নিয়ে তিনি কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার সঙ্গে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিদিন জলের তলায় চলে যাচ্ছে একাধিক গ্রাম। এখনও পর্যন্ত রাজ্য়ের প্রায় ৪০ লক্ষ মানুষ বন্যা বিধ্বস্ত। বজলি, বক্সা, বরপেটা, গোয়ালপাড়া, কামরূপ, করিমগঞ্জ, লখিমপুর, মজুলি, নগাঁও, নলবাড়ি, শিবসাগরের মতো জায়গা সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে।
আরও পড়ুন: <সেরার সেরা ‘অগ্নিপথ’, মোদীর ভূয়সী প্রশংসায় দেশের শীর্ষ শিল্পপতি>
প্রশাসন সূত্রে খবর, ৩২টি জেলাই বন্যা কবলিত। ব্রহ্মপুত্র নদের জলস্ফীতির পর ৪ হাজারের বেশি গ্রাম প্লাবিত। বিপুল ক্ষতির মুখে চাষের। প্রায় ৬৬ হাজার হেক্টর চাষের জমি এখন জলে ডুবে রয়েছে। ৫১৪টি সরকারি ত্রাণশিবিরে দেড় লাখের বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। ইতিমধ্য়ে ত্রাণের কাজ করছে ভারতীয় সেনা। এছাড়ায় ত্রাণের কাজে সাহায্য করছে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। সেই সঙ্গে তৈরি রাখা হয়েছে NDRF এর বিশেষ দল।