মাছে ভাতে বাঙালির জন্য এর চেয়ে সুখবর আর কী বা হতে পারে? ২৫ দিন পর বাংলাদেশ থেকে মাছ আমদানি করল ত্রিপুরা। আগরতলা-আখাউড়া সীমান্তে স্থানীয় তোলাবাজদের সঙ্গে রপ্তানিকারকদের ঝামেলার জেরে তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে বন্ধ ছিল মাছ রপ্তানি। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় শেষ কয়েক দিনে মাছের দাম বেড়ে হয়েছিল আগুন। শনিবার সকাল থেকে সেই অচলাবস্থা কাটল। স্বাভাবিক হল আমদানি রপ্তানির হালচাল। শুক্রবার রাতে দু'দেশের আমদানি-রপ্তানিকারকদের মধ্যে আলাপ-আলোচনার পর কাটে অচলাবস্থা।
আগরতলা-আখাউড়া সীমান্তের আমদানি রপ্তানি সঙ্ঘের সেক্রেটারি খোকন ভৌমিক ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন, শনিবার সকালেই ওপার বাংলা থেকে ত্রিপুরায় রুই, কাতলা, পাবদা, চিংড়ি, ভেটকি আমদানি করা হয়েছে। "পর্যাপ্ত মাছ এসেছে বাংলাদেশ থেকে। মনে হয় না ত্রিপুরার বাজারে এখন আর মাছের সংকট হবে," জানালেন খোকনবাবু।
গত ৫ সেপ্টেম্বর ২২ লাখ টাকার ১০,০০০ কেজি মাছ নষ্ট হয়ে যায়। তার জেরে ত্রিপুরায় মাছ রপ্তানি বন্ধ করেছিল বাংলাদেশ। আগরতলা-আখাউড়া সীমান্তে কিছু লোক ব্যবসায়ীদের থেকে বেআইনী ভাবে মোটা অঙ্কের তোলা চায়। ব্যবসায়ীরা তোলা দিতে নারাজ থাকলে বিবাদ বাঁধে। নষ্ট হয় ২৬ হাজার মার্কিন ডলারের মাছ। ২৫ দিন ধরে মাছের আমদানি বন্ধ থাকায় আনুমানিক ৮ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। ত্রিপুরা বিজেপির ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রতিমা ভৌমিক জানিয়েছেন, শুক্রবারের বৈঠকে দু'দেশের মৎস্য আমদানি-রপ্তানিকারক সাত ব্যবসায়ী উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন, ত্রিপুরায় মাছের আকাল, বাংলাদেশ থেকে আমদানি পুরোপুরি বন্ধ
চাহিদার সাথে সমানুপাতিক হারে শেষ তিন সপ্তাহে ত্রিপুরায় বেড়েছে মাছের দাম। এক মাস আগেও আগরতলার বাজারে রুই মাছের দাম ছিল ১৫০ টাকা/কেজি। এখন দাম ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা/কেজির মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। কেজি প্রতি কাতলা মাছের দাম ২০০ থেকে এখন দাঁড়িয়েছে ৩০০ তে। পাবদায় হাত ছোঁয়ানই দায়। এক মাস আগে ছিল ২০০ টাকা/কেজি। এখন দাম ৫০০ টাকা/কেজি। চিংড়ি-কুচো চিংড়ির দামও কেজি প্রতি ৫০০ থেকে বেড়ে ৬০০ হয়েছে।
জনৈক মাছ বিক্রেতা অধীর দাস ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন, “সেপ্টেম্বরের ৫তারিখ থেকে বটতলা বাজারে এক নাগাড়ে বেড়েই চলেছে মাছ আর চিংড়ির দাম। ত্রিপুরায় মাছের স্থানীয় উৎপাদন যথেষ্ট নয়। স্বাভাবিক ভাবেই মাছের দাম বেড়ে গেলে ক্রেতা পেতে আমাদের খুব সমস্যা হয়”। সমীরণ দাস নামে তুলসিবাটি বাজারের আরেক মৎস্য ব্যবসায়ী জানালেন, “ভেটকি পাওয়াই যাচ্ছে না বাজারে। রুই, কাতলার স্থানীয় চাষ যতটুকু হয়, তা দিয়েই চলছে। অন্ধ্রপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ থেকে কিছু মাছ আসছে”।