রাশিয়ায় মস্কো বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণের পর রানওয়েতে যাত্রীবাহী প্লেনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অন্তত ৪১ জনের প্রাণহানি হয়েছে।তাদের মধ্যে দু'জন শিশুও ছিল। উড়ানের কিছুক্ষণের মধ্যেই আগুন লেগে যায় বিমানটিতে। আগুন লাগার জেরেই মস্কো বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করেন বিমানটি। ৭৩জন যাত্রী এবং পাঁচ জন ক্রু মেম্বারকে নিয়ে মস্কো থেকে রাশিয়ার উত্তর পশ্চিমের শহর মারমান্সকে যাচ্ছিল বিমানটি। একটি টেলিভিশন চ্যানেল সূত্রে পাওয়া খবর অনুযায়ী, মস্কোর শেরেমেতেভো শুখোই সুপারজেট ১০০টি বিমানটি ওড়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই বিমানের সামনের অংশে আগুন ধরে যায়। তবে আগুন লাগার কারণ এখনও জানা যায়নি।
রাশিয়ার তদন্ত কমিটির এক মুখপাত্র জানান, ৭৮ জনের মধ্যে ৩৭ জনকে নিরাপদে বের করে আনা সম্ভব হয়েছে, অর্থাৎ এই ঘটনায় ৪১ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। তৎক্ষণাৎ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে রুশ সরকারের পক্ষ থেকে। বিমানচালকরা কোনও রকম নিরাপত্তা নিয়ম বিধি লঙ্ঘন করেছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে তদন্ত কমিটি।
আরও পড়ুন ভোটের শুরুতেই রক্তপাত, ব্যারাকপুরে ঠোঁট ফাটল অর্জুনের
কোনওরকমে প্রাণ বাঁচিয়ে ফিরতে পেরেছিলেন ওই বিমানেরই যাত্রী প্যয়োত্র এগোরোভ। সেই ভয়ংকর অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, ' বিমানটি আকাশে ওরার কিছু সময়ের মধ্যেই বাজ পরে বিমানটিতে'। এই ঘটনার জন্য খারাপ আবহাওয়াকেই দায়ি করেছে প্যয়োত্র। তিনি আর বলেন, 'ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে বিমানচালক জরুরি অবতরণ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু সঠিক ভাবে নামতে না পারায় বিমানটিতে আগুন ধরে যায়। উপস্থিত সকলেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।'
আরও পড়ুন চাঁদের দক্ষিণ মেরুর রহস্য উদঘাটনে ভারত
সমগ্র দুর্ঘটনাটির একটি মোবাইল ফুটেজ পাওয়া যায় যেখানে আতঙ্কিত যাত্রীদের চিৎকারের আওয়াজ স্পষ্ট শোনা যায়।
Посадка пылающего Sukhoi Superjet 100 в Шереметьево. Пилоты - стальные люди pic.twitter.com/ETlzOHbUKw
— Дмитрий Смирнов (@dimsmirnov175) 5 May 2019
অবতরণের পরই কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায় বিমানবন্দর চত্বর।
Ад в Шереметьево: Sukhoi Superjet 100, вылетевший из Москвы в Мурманск, вернулся из-за пожара на борту. Горит как факел, а в это время из передних дверей полным ходом идет эвакуация pic.twitter.com/oRWI6npPCu
— Дмитрий Смирнов (@dimsmirnov175) 5 May 2019
এই ঘটনায় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং প্রধানমন্ত্রী দামিত্রি মেডভেদেভ শোকপ্রকাশ করেছেন এবং তদন্তের জন্য বিশেষ কমিটি গঠনের কথা জানিয়েছেন।
সংবাদসংস্থা ইন্টারফেক্স থেকে পাওয়া খবর অনুযায়ী, যাত্রীদের মালপত্রজনিত কিছু সমস্যার কারণে উড়ানটি ছাড়তে বেশ কিছুটা দেরি হয়। রুশ সংবাদসংস্থা জানায়, আহত যাত্রীদের তৎক্ষণাৎ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এই মুহূর্তে উঠে আসছে আর বেশ কিছু তথ্য। তার কিছু সূত্র মারফত জানা যায়, বিমানটি জরুরি অবতরণের আগে দু'বার চক্কর কাটে মস্কোর আকাশে। যদিও সমস্ত বিষয়টি এখন তদন্তের আওতায় রয়েছে।
সংবাদসংস্থা ইন্টারফ্যাক্স একটি সূত্র উদ্ধৃত করে বলেছে যে, বিমানটি দ্বিতীয় প্রচেষ্টাতে জরুরি অবতরণ করতে সফল হয়েছিল কিন্তু ততক্ষণে বিমানের অনেক সিস্টেম ব্যর্থ হয়ে গিয়েছিল। অবতরণের পর বিমানের কিছু ধ্বংসাবশেষ ইঞ্জিনে ঢুকে পরে এবং বিস্ফোরণ ঘটে। রুশ সংবাদ সংস্থা জানায় যে এই বিমানটি ২০১৭ সালে তৈরি হওয়া এই বিমানটিকে এই বছরের এপ্রিলেই উড়ান সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। প্রসঙ্গত, ২০১২ সালে বিমানচালকের ত্রুটির জন্য ইন্দোনেশিয়ায় একটি শুখোই সুপারজেট ভেঙ্গে পড়ে।
এই দুর্ঘটনার জেরে রাশিয়ায় আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সমস্ত উড়ানের সময়সীমার বদল ঘটে, দেরি করে ছেড়েছে প্রতিটি বিমান।
Read the full story in English