পাক মদতপুষ্ট সন্ত্রাসের কবলে পড়ে ১৯৯০-এর গোড়ার দিকে ৬৪ হাজার ৮২৭ কাশ্মীরি পণ্ডিত পরিবার উপত্যকা ছেড়েছিলেন। ভূস্বর্গের বিভিন্ন প্রান্তে নিজেদের বাড়ি-ঘর ছেড়ে বাধ্য হয়েই হাজার-হাজার কাশ্মীরি পণ্ডিত পরিবার প্রাণ বাঁচাতে জম্মু, দিল্লি এবং দেশের বিভিন্ন অংশে চলে গিয়েছিলেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের একটি রিপোর্টে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের বার্ষিক ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, নব্বইয়ের দশকেই প্রথম জম্মু কাশ্মীরে মাথাচাড়া দেয় সন্ত্রাসবাদ। ওই সময় থেকে উপত্যকায় জঙ্গিদের হাতে নিহত হয়েছেন ১৪ হাজার ৯১ জন নিরীহ নাগরিক। জঙ্গি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন নিরাপত্তা বাহিনীর ৫ হাজার ৩৫৬ কর্মী। ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, "জম্মু ও কাশ্মীরের জঙ্গিবাদ এবং সীমান্তের ওপার থেকে সন্ত্রাসবাদীদের অনুপ্রবেশ, দুটি বিষয় জটিলভাবে জড়িত।" একই সঙ্গে রিপোর্টে উল্লেখ, কাশ্মীরি পণ্ডিতদের পাশাপাশি নব্বইয়ের দশকের গোড়ার দিকে উপত্যকার বিভিন্ন প্রান্তে থাকা বহু শিখ এমনকী মুসলিম পরিবারও বাধ্য হয়ে কাশ্মীর ছেড়েছিলেন।
উপত্যকা ছেড়ে হাজার-হাজার পরিবার জম্মু, দিল্লি ও দেশের অন্যন্য রাজ্যে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন। ১০৫৪টি পরিবার সেই সময় জম্মুর পাহাড়ি এলাকাগুলি থেকে নীচে নেমে এসে সমতলে বসবাস করতে শুরু করেছিল। সরকারি তথ্য বলছে, বর্তমানে ৪৩ হাজার ৬১৮ কাশ্মীরি উদ্বাস্তু পরিবার জম্মুতে বসবাস করছেন। এরই পাশাপাশি ১৯ হাজার ৩৩৮ পরিবার রয়েছে দিল্লি এবং এনসিআর এলাকায়। এছাড়াও ১ হাজার ৯৯৫টি কাশ্মীরি পণ্ডিত পরিবার দেশের বিভিন্ন প্রান্ত ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতে বসবাস করছেন।
আরও পড়ুন- হিজাব-ইস্যু: হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে করা আবেদন শুনবে সুপ্রিম কোর্ট
এদিকে, উপত্যকায় ফের কাশ্মীরি পণ্ডিতদের ফেরাতে সচেষ্ট মোদী সরকার। যদিও এব্যাপারে কেন্দ্রের স্পষ্ট কোনও পদক্ষেপ এখনও চোখে পড়েনি। তবে কাশ্মীরি উদ্বাস্তুদের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক প্রধানমন্ত্রীর পুনর্গঠন প্যাকেজ - ২০০৮-এর অধীনে জম্মু কাশ্মীর সরকারে ৩ হাজার চাকরির অনুমোদন দিয়েছে। একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়ন প্যাকেজ - ২০১৫-এর অধীনে অতিরিক্ত আরও ৩ হাজার চাকরির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এই ৬ হাজার কাশ্মীরি উদ্বাস্তু কর্মচারীদের উপত্যকায় থাকার জন্য ৯২০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬ হাজার ট্রানজিট আবাসন তৈরির কাজেরও অনুমোদন দেয় কেন্দ্র। সরকারি এই প্রকল্পের অধীনে ইতিমধ্যেই ১ হাজার ২৫টি ফ্ল্যাট তৈরির কাজ কোনওটা পুরোপরি বা কোনওটার অধিকাংশ কাজই শেষ হয়েছে। এছাড়া আরও ১ হাজার ৪৪৮টি ফ্ল্যাট তৈরি করা হবে।
Read full story in English