Advertisment

নোবেলজয়ী অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় 'বামপন্থী মতাদর্শের', বিতর্কিত মন্তব্য পীযূষ গোয়েলের

"আপনারা তো সবাই জানেন যে ওঁর চিন্তাভাবনা সম্পূর্ণই বামপন্থী মতাদর্শের। অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় কংগ্রেসের 'ন্যায়' প্রকল্পের অনেক গুণগান করেছিলেন।"

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

নোবলজয়ী অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর

অর্থনীতিতে নোবেলজয়ী অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করে শুক্রবার মন্তব্য করলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গোয়েল। ২০১৯ সালে অর্থনীতিতে নোবেলজয়ী প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, "আমি নোবেল জয়ের জন্য অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়কে অভিনন্দন জানাচ্ছি। কিন্তু আপনারা তো সবাই জানেন যে ওঁর চিন্তাভাবনা সম্পূর্ণই বামপন্থী মতাদর্শের। অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় কংগ্রেসের 'ন্যায়' প্রকল্পের অনেক গুণগান করেছিলেন। সেই ভাবনা পরবর্তীকালে ভারতের জনগণই খারিজ করে দিয়েছেন।"

Advertisment

দলের হয়ে বিধানসভা নির্বাচনের প্রচার করতে শুক্রবার মহারাষ্ট্রের পুনে শহরে যান গোয়েল। শহরের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এক বৈঠকে জিএসটি নিয়ে তাঁদের সমস্যার কথা শোনেন তিনি। পরে এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি জানান, রাজ্যের ২৮৮ টি আসন-বিশিষ্ট বিধানসভায় ২২০ টি আসন পাবে বিজেপি-শিবসেনা জোট।

বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারের অর্থনৈতিক নীতির যে সমালোচনা শোনা গেছে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং এবং নোবেলজয়ী অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে, সেই প্রসঙ্গ উঠতে গোয়েল তাঁদের বক্তব্যকে নস্যাৎ করে দেন। তাঁর কথায়, "আমি গর্বিত যে একজন ভারতীয় নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন, কিন্তু আমি তাঁর চিন্তাধারার সঙ্গে সহমত হব এমন কোনও কথা নেই। বিশেষ করে যখন দেশের মানুষ তাঁর চিন্তাভাবনা খারিজ করে দিয়েছেন, আমাদের বোধহয় ওঁর আইডিয়া গ্রহণ করার প্রয়োজন নেই।"

আরও পড়ুন- নোবেলজয়ী অভিজিতের নাম বিতর্কে মুখ খুললেন ‘মা’

মনমোহন সিংয়ের সমালোচনার জবাবে গোয়েল বলেন, "আমি অবাক হয়ে যাচ্ছি যে মনমোহন সিংয়ের মতন অর্থনীতিবিদ এটা বুঝলেন না যে ২০১৪ সালে কী বেহাল অবস্থায় তিনি অর্থনীতিকে রেখে গিয়েছিলেন, এবং কীভাবে সেই অবস্থার উন্নতি করেছে কেন্দ্র এবং বিভিন্ন রাজ্যের সরকার।" পাশাপাশি মনমোহনের পাল্টা সমালোচনা করে তিনি বলেন, নানাবিধ কেলেঙ্কারি, যেমন তথাকথিত টেলিকম কেলেঙ্কারি, কয়লা কেলেঙ্কারি, এবং মহারাষ্ট্রের সেচ কেলেঙ্কারি মনমোহনের আমলেই ঘটেছিল।

"যখন এই সমস্ত কেলেঙ্কারি তাঁর চোখের সামনে ঘটছিল, তখন তাঁর একটাই উত্তর ছিল, 'এই হলো জোট রাজনীতির বাধ্যবাধকতা'। এভাবে জোট রাজনীতির দোহাই দেওয়াটা একজন প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে কতটা লজ্জাজনক, যেখানে তাঁর উচিত ছিল দেশের এবং মানুষের স্বার্থে কাজ করা," বলেন গোয়েল।

আরও পড়ুন: ‘নোবেলজয়ী অভিষেকবাবু’, মমতার মন্তব্যে উত্তাল বঙ্গ রাজনীতি

রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সঞ্চয় থেকে ১.৭৬ লক্ষ কোটি টাকা সরকারকে হস্তান্তর করা প্রসঙ্গে গোয়েলের বক্তব্য, এই সিদ্ধান্ত সরকারের নয়, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নরের নেতৃত্বাধীন কমিটির ছিল। "আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হয় নি। টাকাটা উদ্দেশ্যহীন ভাবে পড়ে ছিল আরবিআই-এর কাছে। হস্তান্তরের পক্ষে সিদ্ধান্ত নেয় যে কমিটি, তাতে ছিলেন প্রাক্তন গভর্নর বিমল জালান, প্রাক্তন ডেপুটি গভর্নর রাকেশ মোহন এবং অন্যান্য বিশেষজ্ঞ। এবং আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি যে কিছুটা অর্থনীতি আমরাও বুঝি, যদিও মনমোহন সিংয়ের মতো অতটা বুঝি না। কিন্তু আরবিআই-এর কাছে বর্তমানে ১০-১১ লক্ষ কোটি টাকার সঞ্চয় রয়েছে। আমি দায়িত্ব নিয়ে বলতে পারি, এই পরিমাণ সঞ্চয়ের কোনও প্রয়োজন নেই। ব্যাঙ্কের ব্যালান্স শিটের সঙ্গে কোনও সঙ্গতি নেই এই পরিমাণ সঞ্চয়ের। এবং আরবিআই-এর এই অর্থের প্রয়োজন পড়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।"

উল্লেখ্য, অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাম্প্রতিক বক্তব্য ছিল, ভারতীয় অর্থনীতি এখন একটি টালমাটাল জায়গায় অবস্থান করছে। যেসব তথ্য তাঁদের হাতে এসেছে তা থেকে এটা স্পষ্ট যে অর্থনৈতিক পুনর্জাগরণের এখনই কোনও আশা নেই। ওয়াকিবহাল মহলের মত, নোবেলজয়ীর এই বক্তব্যেই পদ্ম শিবিরের অন্দরে বেড়েছে অস্বস্তি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযুষ গোয়েলের এহেন মন্তব্য সেই বিতর্কেই ঘি ঢালল বলে মনে করা হচ্ছে।

Read the full story in English

nobel prize
Advertisment