ভারতে থাকলে তাঁর পক্ষে নোবেল জয় সম্ভব ছিল না। এমনটাই মনে করেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। জয়পুর সাহিত্য উৎসবে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, ভারতে থাকলে কী এত বড় সম্মান অর্জন করতে পারতেন? জবাবে নোবেল জয়ী বলেন, 'না পারতাম না।' নিজের উত্তরের সপক্ষে যুক্তিও দিয়েছেন অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, 'ভারতে যোগ্যতার অভাব নেই। তবে, সঠিক কার্য প্রক্রিয়া দরকার। একার পক্ষে সমস্ত কাজ সব সময় করা সম্ভব হয় না। সকলের সঙ্গে কাজ করলে অনেক সুবিধা হয়।'
২০১৯ সালে অর্থনীতিতে নোবেল পান বাঙালি অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। বিশ্বব্যাপী দারিদ্র দূরীকরণের জন্য বিরল গবেষণা করে অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে যৌথভাবে এই পুরস্কার পেয়েছেন তাঁর স্ত্রী এস্থার ডুফলো ও মাইকেল ক্রেমার। গত দুদশক ধরে দারিদ্র দূরীকরণের জন্য নিরলস গবেষণা করছেন তাঁরা। তাদের পরীক্ষা-ভিত্তিক পদ্ধতির জন্য অনেক পরিবর্তন এসেছে উন্নয়নের অর্থনীতিতে। এর মাধ্যমে গবেষণার নতুন-নতুন দিকও খুলে গিয়েছে। বম্বেতে জন্মালেও নোবেল জয়ী অভিজিতের বেড়ে ওঠা কলকাতাতেই। স্কুল, কলেজ পাস করে তিনি দিল্লির জেএনইউতে যান। হার্ভাড থেকে পিএইচডি করেন। এরপর থেকেই এমআইটি-তে অধ্যাপনা করছেন তিনি।
সঠিক কার্যপ্রক্রিয়ার জন্য দেশের বিরোধী দলগুলোর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করেন নোবেল জয়ী। তাঁর কথায়, 'ভাল বিরোধী দলের প্রয়োজন। এরাই গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি। শাসক পক্ষকে কড়া নজরদারিতে রাখতে গণতন্ত্রে ভাল বিরোধী শিবিরের প্রয়োজনীয়তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।' দারিদ্রতা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে অভিজিৎ বলেন, 'যারা দারিদ্র সীমার নীচে রয়েছেন তাদেরকে কাজের ক্ষেত্রে উৎসাহীত করতে হবে।' তিনি বলেন, 'জমি দিয়ে নয়, উল্টে দরিদ্রদের গরু, ছাগল বা চাষের সরঞ্জাম সামগ্রী দিয়ে সাহাযয়তা করতে হবে। উন্নয়নের পথ দেখাতে হবে। আগামী ১০ বছরের মধ্যে দরিদ্র মানুষগুলোর আয় ২৫ শতাংশ বৃদ্ধই পাবে ও তারা খুশি হয়ে উঠবে। ফলে তারা আরও আগ্রহের সহ্গে কাজ করবে।'
আরও পড়ুন: ‘আর্থিক ঘাটতি যেন আর না বাড়ে’, বাজেট প্রসঙ্গে বললেন নোবেলজয়ী অভিজিৎ
লোকসভা ভোটে আগে কংগ্রেসের 'ন্যায় প্রকল্পের' স্রষ্টা ছিলেন এই নোবেল জয়ী। বলা হয়েছিল কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে এই প্রকল্প লাগু হবে। 'ন্যায় প্রকল্পে' বলা হয়েছিল দেশে দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারীদের জন্য মাসিক ২,৫০০-৩,০০০ টাকা দেওয়া হবে। বিজেপি সরকারের অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত, যেমন নোটবন্দির প্রতিবাদ করেছিলেন তিনি। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে একটি লেখায় অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় ও এস্থার সিএএ-এনআরসি-রও বিরোধিতা করেছিলেন।
Read the full story in English