ভূমিকম্পের জেরে আফগানিস্তানে লাফিয়ে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যাটা ঠিক কত, তা এখনও স্পষ্ট জানাতে পারছে না তালিবান প্রশাসন। তার মধ্যেই চলছে গণহারে কবর দেওয়ার কাজ। আফগানিস্তানের পাকতিকা প্রদেশজুড়ে এখন শুধুই ধ্বংসের চিহ্ন। প্রতিটি বাড়িই ধ্বংসের চিহ্ন নিয়ে টিকে রয়েছে। যেগুলো এখনও টিকে আছে, যেভাবে বাড়িগুলো ভেঙেছে, তাতে আর কতদিন টিকে থাকবে, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে বাসিন্দাদের।
Advertisment
ইউরোপীয় সিসমোলজিক্যাল এজেন্সি বা ইএমএসসি জানিয়েছে, ৫০০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে কম্পন অনুভূত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ওই বিস্তীর্ণ অঞ্চলের বাসিন্দারা। সব মিলিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা লক্ষাধিক। তালিবানশাসিত আফগানিস্তানের সরকারি সংবাদ সংস্থা বখতার নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে মৃতের সংখ্যা ইতিমধ্যেই হাজার ছাড়িয়েছে। আহতও অন্ততপক্ষে হাজার দেড়েক। তার মধ্যে বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত। ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেই আশঙ্কা করছে প্রশাসন।
পাখতিকা প্রদেশের তালিবান মন্ত্রী সালাউদ্দিন আয়ুবি জানিয়েছেন, কোনও হাসপাতালে ২০০ তো কোনও হাসপাতালে শতাধিক আহত চিকিত্সাধীন। এখনও বহু আহতকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এজন্য হেলিকপ্টারের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে বলেই বখতার জানিয়েছেন। বখতার এজেন্সির ডিরেক্টর জেনারেল আবদুল ওয়াহিদ রায়ান জানিয়েছেন, আহত ও নিহতদের দেহ উদ্ধারের সঙ্গেই চলছে ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ।
ধ্বংসস্তূপের নীচে বহু জায়গায় মানুষ চাপা পড়ে রয়েছেন। ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে তাঁদের এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। সম্ভবত ওই সব ব্যক্তিরা মারা গিয়েছেন বলেই আশঙ্কা করছেন বাসিন্দারা। গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মত এই পরিস্থিতিতে আফগানিস্তানের বাসিন্দাদের বড় সমস্যা হয়ে উঠেছে হাসপাতালগুলোয় উপযুক্ত চিকিত্সার পরিকাঠামোর নেই। বেশিরভাগ জায়গাতেই হয় চিকিত্সক বা নার্স নেই।
অথবা ওষুধ এবং অন্যান্য সরঞ্জাম নেই। ফলে, মৃত্যুর সংখ্যা শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে ঠেকবে, তা আন্দাজ করতে পারছে না প্রশাসন। সবটাই এখন হয়ে উঠেছে আল্লাহর ভরসার ব্যাপার। এই পরিস্থিতি দেখে সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছে রাশিয়া। সম্প্রতি রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে কাবুলে তালিবানের বৈঠক হয়েছে। সেই বৈঠকের ভিত্তিতে আফগানিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় করতে চায় রাশিয়া। আর, সেই কারণেই সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছে রুশ প্রশাসন।