প্রতিরক্ষা বাহিনীতে অগ্নিপথ প্রকল্প ঘিরে বিক্ষোভ শুক্রবার তৃতীয় দিনে পড়ল। উত্তাল বিহার, তেলেঙ্গানা, হরিয়ানা। এইসব রাজ্যে ট্রেন চলাচল অবরুদ্ধ। ট্রেনের বগিতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। বিক্ষোভকারীরা বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী রেনু দেবীর বেতিয়ার বাড়িকে নিশানা করেছে। সেখানে ভাঙচুর চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ। তবে, হামলার সময় পাটনায় ছিলেন উপমুখ্যমন্ত্রী। আক্রমণের শিকার বিহার বিজেপির সভাপতি এবং পশ্চিম চম্পারন সাংসদ ডঃ সঞ্জয় জয়ওয়ালের বাড়িও।
বাড়িতে হামলার পরে মুখ খুলেছেন বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী রেণু দেবী। বলেছেন, 'আমার বাড়িতে হামলার জন্য নয় নয়, পরীক্ষার্থীদের অগ্নিপথ সম্পর্কে ভুল তথ্য দেওয়া হচ্ছে। ফলে তাঁরা ভয়ে এসব করছে।'
হরিয়ানাতে আগে থেকেই অগ্নিপথ প্রকল্পকে কেন্দ্র করে হিংসার পূর্বাভাস ছিল। ফলে হরিয়ানা সরকার ফরিদাবাদ জেলার বল্লবগড়ে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছে। উত্তরপ্রদেশের বালিয়া জেলাতেও অগ্নিপথ বিরোধী বিক্ষোভ হয়। ট্রেনে আগুন দিয়েছে আন্দোলনকারীরা।
অগ্নিগর্ভ তেলেঙ্গানাও। অগ্নিপথ প্রকল্পের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ক্রমশ হিংসার আকার ধারণ করেছে। সেকেন্দ্রাবাদে তাণ্ডব চলে। পুলিশের দাবি, লাঠি, পাথর নিয়ে স্টেশনের দুটি প্ল্যাটফর্মে হুড়মুড়িয়ে একদল উন্মত্ত জনতা ঢুকে পড়ে। তারা স্টেশনের বিভিন্ন দোকান , অফিসে ভাঙচুর চালায়। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় ট্রেনে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রথমে লাঠিচার্জ ও পরে গুলি চালায় পুলিশ। এতে নিহত ১ জন। বেশ কয়েকজন আহত। হামলায় দক্ষিণ-মধ্য রেলওয়ের প্রায় ২০ কোটি টাকার সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি অনুমান করা হচ্ছে।
গুরগাঁওতে জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা।
অগ্নিপথ বিরোধী বিক্ষোভের আঁচ পড়েছে বাংলাতেও। এ দিন সকালে উত্তর ২৪ পরগনায় ঠাকুরনগরে ট্রেন অবরোধ করা হয়। শিয়ালদহ-ব্যাকারপুর শাখাতেও হয় ট্রেন অবরোধ।
যাত্রাপথ সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে ১৩টি ট্রেনের।
আরও পড়ুন- অগ্নিপথ আঁচে তপ্ত এরাজ্যও, প্রকল্প বাতিলের দাবিতে রেল অবরোধ
এসবের মধ্যেই কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী এবং প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরা শুক্রবার অগ্নিপথ প্রকল্প নিয়ে কেন্দ্রকে নিশানা করেছেন। রাহুল গান্ধী টুইটে লিখেছেন, 'প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বুঝতে পারছেন না দেশ কী চায়, কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্যোগগুলি জনগণ দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হয়েছিল। তিনি তাঁর বন্ধুদের কণ্ঠ ছাড়া আর কিছুই শুনতে পাচ্ছেন না।' প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরা অবিলম্বে প্রকল্পটি প্রত্যাহারের দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদীর কাছে। তাঁর কথায়, সরকার ২৪ ঘন্টারও কম সময়ের মধ্যে অগ্নিপথ প্রকল্পে নিয়োগের নিয়মের পরিবর্তন করেছে, যা ইঙ্গিত করছে যে এই প্রকল্প তাড়াহুড়ো করে যুবসম্প্রদায়ের উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে।