Advertisment

বিমানসেবিকাকে গণধর্ষণ, গ্রেফতার সহকর্মী

তরুণীর অভিযোগ ছিল, যে ঘরটিতে তিনি নিগ্রহের শিকার হয়েছেন সেখানে তিনজন পুরুষ ছাড়াও একজন মহিলাও উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু ঘটনাটি সম্পর্কে অভিযোগকারিনী জানতে চাইলে মহিলাটি প্রশ্নের জবাব দিতে অস্বীকার করেন।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

অভিযোগকারিনীর চোখে এবং পিঠে ছিল আঘাতের চিহ্ন। ঘটনাটি ঘটেছে মুম্বাইয়ের মালাদ এলাকায়

সোমবার মুম্বইয়ের একটি অ্যাপার্টমেন্টে গণধর্ষণের শিকার হলেন একটি বিমানসংস্থার বছর পঁচিশের এক কর্মী। ঘটনায় পুলিশ তাঁর এক সহকর্মীকে গ্রেফতার করেছে। তরুণীর অভিযোগ ছিল, যে ঘরটিতে তিনি নিগ্রহের শিকার হয়েছেন সেখানে তিনজন পুরুষ ছাড়াও একজন মহিলাও উপস্থিত ছিলেন। অভিযুক্তের নাম স্বপ্নীল বাদোনিয়া (২৩)। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত নিজেও ওই একই বিমান সংস্থায় নিরাপত্তা বিষয়ক দফতরে কাজ করতেন। কিন্তু এই ঘটনায় বাকিদের কী ভূমিকা ছিল তা এই মুহুর্তে তদন্ত সাপেক্ষ।

Advertisment

উল্লেখ্য, মহারাষ্ট্র শিল্প উন্নয়ন পুরসভা থানার উচ্চপদস্থ পুলিশ ইনস্পেক্টর নিতিন অলকনুরে ঘটনাটির সত্যতায় সীলমোহর দিয়ে বলেন, "এখনও পর্যন্ত আমরা জানতে পেরেছি এই ঘটনার জন্য মূলত দায়ী স্বপ্নীল বাদোনিয়া। সে ওই তরুণীকে জোর করেছিল। যদিও ঘটনায় উপস্থিত বাকীদের কী ভূমিকা ছিল সে বিষয়ে তদন্ত করছি আমরা।"

পুলিশের রিপোর্ট অনুযায়ী, অভিযোগকারিনী সোমবার হায়দ্রাবাদ থেকে মুম্বাই আসেন। সন্ধে ৭টায় তিনি মুম্বাইয়ের ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ ইন্টারন্যাশনাল বিমানবন্দরে নামেন। সেখানেই একই বিমানসংস্থার নিরাপত্তা দফতরের আধিকারিক স্বপ্নীলের সঙ্গে দেখা হয় তাঁর। পুলিশ এও জানায়, বিমানবন্দর থেকে তাঁরা একই গাড়িতে আসেন এবং অভিযুক্তকে মালাডের একটি শপিং মল এ নামিয়ে দিয়ে অভিযোগকারিনী নিজে তাঁর বাড়িতে গিয়ে লাগেজ রেখে আবার ওই শপিং মলের সামনে আসেন। সেখানে দাঁড়িয়ে ছিলেন অভিযুক্ত। এরপর দুজনে মিলে একটি বার -এ যান। থানার এক পুলিশ আধিকারিক জানান, "তাঁরা দুজন বার বন্ধ হওয়া অবধি সেখানে ছিলেন এবং আকন্ঠ মদ্যপান করেন। এতটাই, যে অভিযোগকারিনী যখন আমাদের কাছে বয়ান দেন তখন তাঁর শুধু এটাই মনে ছিল যে তাঁদের বার থেকে বের করে দেওয়া হয়। এছাড়া আর কিছুই মনে ছিল না।"

আরও পড়ুন: ভোটে জেতায় ধর্ষণে অভিযুক্তকে জেলে গিয়ে ধন্যবাদ দিলেন সাক্ষী মহারাজ

তবে পুলিশি জেরায় ঘটনাটি স্বীকার করেন অভিযুক্ত। তিনি পুলিশকে জানান, অভিযোগকারিনী এতোটাই মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন যে তাঁকে বাড়িতে না পাঠিয়ে একটি হোটেলে থাকার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। কিন্তু তাঁদের অবস্থা দেখে হোটেল কর্তৃপক্ষ তাঁদের থাকতে দিতে অস্বীকার করেন। তারপর তিনি অভিযোগকারিনীকে নিয়ে নিজের ফ্ল্যাটে চলে আসেন। যেখানে তাঁর সঙ্গে দুই রুমমেট ছাড়াও একজন মহিলাও থাকেন। অপরদিকে, পুলিশের কাছে নিগৃহিতার করা রিপোর্টে বলা হয়, "সেই অবস্থার সুযোগ নিয়ে অভিযুক্ত এবং তার বন্ধুরা একাধিকবার ধর্ষণ করেন তাঁকে"।

সূত্রের খবর, ঘুম থেকে ওঠার পর অভিযোগকারিনীর চোখের তলায় এবং পিঠে আঘাতের চিহ্ন ছিল। পুলিশ জানায়, অভিযুক্ত স্বপ্নীলকে নিগৃহিতা তরুণী এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন যে তিনিও সেই সময় মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন তাই কি ঘটেছে সে ব্যাপারে কিছুই মনে নেই। এমনকি ঘরে উপস্থিত মহিলাটিও কোনও প্রশ্নের জবাব দিতে অস্বীকার করেন।

আরও পড়ুন: ঈদে রক্তাক্ত কাশ্মীর, পুলওয়ামায় জঙ্গিদের গুলিতে হত মহিলা

পুলিশের পক্ষ থেকে এক আধিকারিক বলেন, "মেয়ের খোঁজ নিতে সারারাত ধরে মেয়ের ফোনে একাধিকবার ফোন করেন অভিযোগকারিনীর বাবা। কিন্তু ফোনে উত্তর মেলেনি। অভিযোগকারিনীর এক বন্ধু তাঁকে অভিযুক্তের সঙ্গে দেখতে পান যোগেশ্বরী এলাকার ম্যাকডোনাল্ডস-এর একটি বিপণীর সামনে। সেই বন্ধুটি তরুণীকে নিয়ে বাড়ি আসেন। আঘাতের চিহ্ন দেখে বাবার প্রশ্নের উত্তরে তরুণী জানান যে তাঁকে ধর্ষণ করা হয়েছে। তারপরেই তার বাবা তাঁকে নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুলিশে খবর দিলে পুলিশের কাছে সব ঘটনা খুলে বলেন অভিযোগকারিনী।

এরপরেই পুলিশ তৎপর হয়ে গণধর্ষণ ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হামলার মামলা দায়ের করে অভিযুক্তকে তাঁর বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে আদালতে চালান করে। ১০ জুন অবধি তাঁকে পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয় আদালত।

Read the full story in English

mumbai rape
Advertisment