মসজিদে লাউডস্পিকার লাগানো ইস্যুতে আইনি অবস্থান স্পষ্ট করল এলাহাবাদ হাইকোর্ট। আদালত স্পষ্ট জানিয়েছে, ধর্মাচরণের স্বাধীনতা ভিন্ন বিষয়। কিন্তু, মসজিদে লাউডস্পিকার লাগানোর সঙ্গে ধর্মাচরণের স্বাধীনতার কোনও সম্পর্ক নেই। তাই মসজিদের গম্বুজে লাউডস্পিকার লাগানো মোটেও সাংবিধানিক মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে না। এর জন্য কোনও আইনি রক্ষাকবচও নেই।
সম্প্রতি মসজিদে লাউডস্পিকার লাগানো ইস্যুতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ মসজিদে লাউডস্পিকার লাগানোর বিরোধিতা করেছেন। মহারাষ্ট্র আবার মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা হুমকি দিয়েছে অবিলম্বে মসজিদগুলোর গম্বুজ থেকে লাউডস্পিকার খুলতে হবে। না-হলে মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনার কর্মী-সমর্থকরা মসজিদের বাইরে লাউডস্পিকারে জোরে হনুমান চালিশা শোনাবেন।
এই আবহে মসজিদে লাউডস্পিকার লাগানো ইস্যুতে আইনি অবস্থান স্পষ্ট করল এলাহাবাদ হাইকোর্ট। উত্তরপ্রদেশের বদায়ুন জেলার বাসিন্দা ইরফান। তিনি মসজিদে লাউডস্পিকার ইস্যুতে আদালতের কাছে আইনি রক্ষাকবচ চেয়েছিলেন। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে বিসৌলি মহকুমার ম্যাজিস্ট্রেট নির্দেশ দিয়েছেন যে আজানের সময় মসজিদে লাউডস্পিকার লাগানো যাবে না। সেই নির্দেশের বিরুদ্ধেই ইরফান উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। কিন্তু, হাইকোর্ট উলটে ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশ খারিজ না-করে বহাল রেখেছে। সঙ্গে স্পষ্ট করে দিয়েছে, মসজিদে লাউডস্পিকার লাগানোর কোনও সাংবিধানিক রক্ষাকবচই নেই।
আরও পড়ুন- একবার ভারতীয় ঘোষিত হলে তাঁকে বিদেশি বলা যাবে না: গৌহাটি হাইকোর্ট
এই ব্যাপারে বিচারপতি বিবেককুমার বিড়লা ও বিচারপতি বিকাশ বুধওয়ারের ডিভিশন বেঞ্চ স্পষ্ট জানিয়েছে, 'মসজিদে লাউডস্পিকার লাগানো সাংবিধানিক মৌলিক অধিকারে পড়ে না, এর আইনি নিষ্পত্তি হয়ে গিয়েছে। কোনও যুক্তিযুক্ত কারণে অনুমতি দেওয়া হয়ে থাকতে পারে। কিন্তু, এক্ষেত্রে আমরা দেখছি যে সম্পূর্ণ ভুল ধারণার বশবর্তী হয়ে আবেদনটি করা হয়েছে। তাই আবেদনটি খারিজ করা হল।' হাইকোর্টের এই নির্দেশের বিরুদ্ধে উচ্চতর বেঞ্চ অথবা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার কথা জানিয়েছেন আবেদনকারী ইরফান। পালটা, এলাহাবাদ হাইকোর্টের নির্দেশকে স্বাগত জানিয়েছে বিভিন্ন হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। এই নির্দেশে মসজিদে লাউডস্পিকার লাগানোর বিরুদ্ধে তাঁদের লড়াই আরও জোর পেল বলেই সংগঠনগুলো জানিয়েছে।
Read story in English