অসমের ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের ডানা ছাঁটল গৌহাটি হাইকোর্ট। আদালত রায় দিয়েছে, ' রেস জুডিকাটা' নীতি অনুযায়ী, একজন ব্যক্তিকে একবার ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে ভারতীয় ঘোষণা করা হলে, তাঁকে ট্রাইব্যুনাল দ্বিতীয়বার বিদেশি ঘোষণা করতে পারবে না। আদালতের দুই সদস্যের বেঞ্চ এই রায় দিয়েছে। এনআরসি লাগু হওয়ার পর থেকে অসমের ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে আকছার এমন ঘটনা ঘটে চলছিল।
একজন ব্যক্তিকে ভারতীয় নাগরিক ঘোষণার পর তাঁকে ফের বিদেশি ঘোষণা করেছে ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল। এই মামলায় গৌহাটি আদালত রায় দিয়েছিল, ' রেস জুডিকাটা' নীতিটি ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে প্রযোজ্য নয়। কারণ, ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল পূর্ণাঙ্গ আদালত নয়। গৌহাটি হাইকোর্ট, তার সাম্প্রতিকতম রায়ে ২০১৮ সালের সেই নির্দেশকেও খারিজ করেছে। একইসঙ্গে জানিয়েছে, ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের ওপর আর ভরসা রাখা যাচ্ছে না।
আদালত জানিয়েছে, নতুন নির্দেশ অনুসারে ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালকে প্রথমে ঠিক করতে হবে যে আবেদনকারী সেই একই ব্যক্তি কি না, যাঁর পূর্বে বিচার হয়ে গিয়েছিল। এইভাবে, পরীক্ষার সুযোগ শুধুমাত্র সেই আবেদনকারীই পাবেন, যিনি আগে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। একবার যদি দেখা যায়, তিনি সেই ব্যক্তি যাঁকে ট্রাইব্যুনাল আগেই ভারতীয় ঘোষণা করেছিল, তাঁকে ট্রাইব্যুনালের কাছে আর নতুন করে কিছু প্রমাণ করার দরকার নেই।
আরও পড়ুন- কর্মরত মহিলারাই আধুনিক গর্ভনিরোধক বেশি ব্যবহার করেন, জানাল স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সমীক্ষা
গত বছর, ২০২১ সালের ডিসেম্বরে, গৌহাটি হাইকোর্ট ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের একটি নির্দেশ বাতিল করে দিয়েছিল। সেই সময় ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল এক ব্যক্তিকে আগে ভারতীয় নাগরিক হিসাবে ঘোষণা করেছিল। পরে আবার দারাং জেলার ওই বাসিন্দার বিরুদ্ধে স্থানীয় এক ব্যক্তি অভিযোগ দায়ের করে। তার ভিত্তিতে ওই ব্যক্তিকে বিদেশি হিসাবে ঘোষণা করেছিল। সেই সময়ও ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের নির্দেশ বাতিল করতে গিয়ে ' রেস জুডিকাটা' নীতিরই উল্লেখ করেছিল গৌহাটি আদালত।
এনআরসিকে হাতিয়ার করে অসমের বাঙালি বিদ্বেষ দীর্ঘদিনই হল চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। সাধারণ বাঙালিদের বিদেশি ঘোষণা করে তাদের সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠছে। এক্ষেত্রে ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালকে আকছার ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে অসমের বাসিন্দাদের একাংশের বিরুদ্ধে।
Read story in English