অগ্নিমূল্য পেঁয়াজ। দাম চড়তে চড়তে যা মধ্যবিত্তের নাগালছাড়া হয়েছে। দেশজুড়ে পেঁয়াজ বিকোচ্ছে কেজি প্রতি ১৪০ থেকে ২০০ টাকা দরে। পরিস্থিতি সামল দিতে অবশেষে হস্তক্ষেপ করলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কেন এত দাম বাড়ছে পেঁয়াজের? বৃহস্পতিবার পর্যালোচনা বৈঠক করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। স্থির হয়েছে, পেঁয়াজের যোগান সচল করতে প্রয়োজনে তা আমদানি করা হবে ও মজুতদারদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।
মহারাষ্ট্রের নাসিকের লাসালগাঁও-তে দেশের সবথেকে বৃহৎ পেঁয়াজ পাইকারি বাজার অবস্থিত। এই বাজারে বুধবার প্রতি কুন্টাল পেঁয়াজের দাম ছিল ৫,০২৫ টাকা করে। ২৪ ঘন্টার মধ্যে বৃহস্পতিবার তা বেড়ে হয় ৭,৫০০ টাকা। ন্যাশনাল হর্টিকালচার বোর্ডের ওয়েবসাইট অনুশারে, চেন্নাইয়ে লক্ষ্মীবারে প্রতি কিলো পেঁয়াজের দাম ছিল গড়ে ১৬০ টাকা। পুনে, মুম্বাই, দিল্লিতে পেঁয়াজের দাম প্রতি কেজিতে পৌঁছে যায় যথাক্রমে ১৫০, ১৪০ ও ১০০ টাকায়। কলকাতার বিভিন্ন বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে কেজি প্রতি ১৪০-১৫০ টাকায়। নাভিশ্বাস অবস্থা সাধারণ মানুষের। দাম আরও বাড়তে পারে বলে প্রমাদ গুনছেন মানুষ। সরকার কেন কোনও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করছে না? প্রশ্ন দেশবাসীর।
আরও পড়ুন: পেঁয়াজের চিন্তায় উদ্বিগ্ন মমতা, দুষলেন কেন্দ্রকেই
এই অবস্থায় অমিত শাহের নেতৃত্বে পেঁয়াজ বৈঠকে বাণিজ্যমন্ত্রী পীয়ূষ গোয়েল, কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রী নরেন্দ্র সিং তোমার হাজির ছিলেন বলে সূত্রের খবর। তবে, শারীরিক অসুস্থতার কারণে বৈঠকে যোগ দেননি খাদ্য ও খাদ্য বন্টন, ক্রেতা উপভোক্তা মন্ত্রকের দায়িত্বাপ্রাপ্ত মন্ত্রী রাম বিলাস পাসোয়ান।
আরও পড়ুন: ‘পেঁয়াজ নিয়ে আমার পরিবারের তেমন মাথাব্যথা নেই’, জানালেন অর্থমন্ত্রী
দিন কুড়ি আগে কেন্দ্রীয় ক্রেতা উপভোক্তা মন্ত্রী জানিয়েছিলেন বাইরে থেকে ১০০,০০০ টন পেঁয়াজ আমদানি করা হচ্ছে। সেটা বাজারে ঢুকেও পড়েছে। কিন্তু তারপরেও দামে কোনও ফারাক হয়নি। উল্টে তা ঊর্ধ্বমুখি হয়েছে। পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি নিয়ে লোকসভায় সরব হয়েছিল বিরোধীরা। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণের দাবি ছিল, খারিফ মরসুমে পেঁয়াজের উৎপাদন এবার কম হওয়ার কারণেই বাজারে জোগান কমেছে। পেঁয়াজ সংরক্ষণ করে রাখার মত ব্যবস্থাও দেশে নেই, ফলে তীব্র সংকট তৈরি হয়েছে। পরিসংখ্যান তুলে ধরে মন্ত্রী জানান, '২০১৮-১৯ মরসুমে যেখানে ৫০.৬৪ মেট্রিক টন পেঁয়াজ মিলেছিল তখন এবার সেই হার ৩৮.৮৭ মেট্রিক টন ছঁতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।' রাজস্থান সহ বেশ কয়েকটি রাজ্য থেকে উদ্বৃত্ত পেঁয়াজ দেশের নানা প্রান্তে সরবরাহ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পাইকারি ও খুচরো বাজারে পেঁয়াজ মজুত নিয়ন্ত্রণ করার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। আগে পাইকারি ব্যবসায়ীরা ৫০০ কুইন্টাল পেঁয়াজ মজুত করতে পারলেও বর্তমানে সেই পরিমান ২৫০ কুইন্টাল করা হয়েছে। খুচরো বিক্রেতারা ১০০-র বদলে ৫০ কুইন্টাল পেঁয়াজ মজুত রাখতে পারবেন।
Read the full story in English