ভিডিও প্রকাশ করলেন পলাতক খালিস্তানপন্থী শিখনেতা অমৃতপাল সিং। ইতিমধ্যে অভিযোগ উঠেছে, পুলিশি নিষ্ক্রিয়তায় অবাধে দিল্লি এবং অন্যত্র ঘুরে বেড়াচ্ছেন এই দাঙ্গাবাজ শিখ নেতা। এবার, সেই অভিযোগ খণ্ডন করতে পালটা ভিডিও প্রকাশ করলেন অমৃতপাল। তিনি ভিডিওতে অভিযোগ করেছেন, পুলিশ ব্যাপকহারে তল্লাশি চালাচ্ছে। তাঁর বিরুদ্ধে নয়। এই তল্লাশি আসলে শিখ সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে চলছে বলেই অমৃতপালের অভিযোগ।
অমৃতপালের সংগঠনের নাম, 'ওয়ারিস পঞ্জাব দে'। সেই সংগঠনের সাহায্যে পঞ্জাবের বিভিন্ন প্রান্তে বেকার যুবক-যুবতীদের খালিস্তান গঠনের নামে উসকানি দেওয়া হচ্ছিল। শুধু তাই নয়, ওই সব বেকার যুবক-যুবতীদের অস্ত্র প্রশিক্ষণ চলছিল বহাল তবিয়তে। ইতিমধ্যে সেই তথ্য হাতে পেয়েছে পুলিশ। তাঁর প্রকাশিত লাইভ ভিডিওয় বুধবার সরকারের ইচ্ছা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অমৃতপাল। সরকার যদি তাঁকে গ্রেফতারই করতে চাইত, তবে বাড়ি থেকেই তাঁকে গ্রেফতার করতে পারত। তিনিও গ্রেফতার হতে ভয় পান না। এমনটাই জানিয়েছেন এই খালিস্তানপন্থী নেতা।
এরই মধ্যে সরকারের বিরুদ্ধে অশান্তি পাকাতে ভিডিওয় উসকানি দিতে ভোলেননি অমৃতপাল। তিনি লাইভ ভিডিওয় অকাল তখতের জাঠেদার জিয়ানি হরপ্রীত সিংকে বৈশাখী (শিখ নববর্ষের প্রথম দিন) উপলক্ষে তালওয়ান্দি সাবোতে সরবত খালসা (সভা) করার জন্য অনুরোধ করেছেন। অমৃতপালের দাবি, 'জনগণের মনে সরকারের দ্বারা তৈরি করা ভয় ভাঙতে এই সভা করা জরুরি।'
অমৃতপাল অবশ্য তাঁর বক্তব্যে পৃথক খালিস্তান সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। এর আগে দিনের শুরুতে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অমৃতপাল উত্তরাখণ্ড থেকে পঞ্জাবে ফিরেছেন। আর, রোপারে আনন্দপুর সাহিব ভ্রমণ করেছেন। পুলিশ একটি গাড়িও উদ্ধার করেছে। এই গাড়ি অমৃতপাল ব্যবহার করেছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে অমৃতপাল সেখানে পৌঁছে আত্মসমর্পণের চেষ্টা করতে পারে এমন জল্পনা ছড়িয়েছে। যার জেরে স্বর্ণ মন্দিরের চারপাশে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। তালওয়ান্দি সাবোর দমদমা সাহিবেও নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সেখানে অকাল তখতের জাঠেদার জিয়ানি হরপ্রীত সিং নিজে উপস্থিত রয়েছেন।
আরও পড়ুন- দলাই লামার উত্তরাধিকার বিশ্বে কতটা প্রভাব ফেলবে, কী বলছে তিব্বতের ঐতিহ্য?
মঙ্গলবার সন্ধ্যার আগে, অমৃতপাল পঞ্জাবে লুকিয়ে আছে, এই তথ্য পেয়ে পঞ্জাব পুলিশের একটি দল এসইউভির পিছনে ধাওয়া করেছিল। কিন্তু, এই গাড়ির সওয়ারিরা হোসিয়ারপুরের এক গুরুদ্বারের কাছে গাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ। পুলিশের সন্দেহ ওই এসইউভি টয়োটা ইনোভা গাড়িতে অমৃতপাল সিং তাঁর সঙ্গে পাপালপ্রীত সিং-সহ সহযোগীদের নিয়ে ভ্রমণ করছিলেন।
১৮ মার্চ থেকে অমৃতপাল এবং তাঁর সংগঠনের বিরুদ্ধে পুলিশের ধরপাকড় শুরু হয়েছে। তারপর থেকে অমৃতপাল পলাতক। যদিও পঞ্জাব পুলিশ তাঁর বেশ কয়েকজন সহযোগীকে আটক করেছে এবং গ্রেফতার করেছে। পাশাপাশি, অমৃতপাল-সহ অন্তত আট জনের বিরুদ্ধে কঠোর জাতীয় নিরাপত্তা আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানিয়েছে। পাশাপাশি, অমৃতপালের প্রচারক বাহিনির বিরুদ্ধেও ধরপাকড় চলছে। এরপর থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ কিছু ছবি এবং ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে যাতে দেখা যাচ্ছে পুলিশকে ফাঁকি দেওয়ার জন্য একাধিকবার গাড়ি ও চেহারায় বদল ঘটিয়েছেন অমৃতপাল।