সরকারি ভাবে মৃতের সংখ্যা ৬০ ছুঁইছুঁই। আসলে সংখ্যাটা আরও খানিকটা বেশি বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। দশেরা উদযাপনের উচ্ছ্বাসের মাঝে ট্রেনের তলায় চাপা পড়ে গেল এতগুলো প্রাণ। ভারতীয় রেলের প্রতিমন্ত্রী মনোজ সিনহা শুক্রবার রাতে ঘটনাস্থলে পৌঁছে জানিয়েছেন স্থানীয় রেল আধিকারিকরা সময় থাকতে দশেরা উদযাপনের কথা রেল কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে রাখলে অমৃতসরে ট্রেন দুর্ঘটনা এড়ানো যেত। অমৃতসরের রেল কর্তৃপক্ষ তাদের বিবৃতিতে জানিয়েছে অমৃতসরে দশেরা উদযাপনের জন্য রেল লাইনের আশে পাশে বিপুল সমাগম হতে পারে, সে ব্যাপারে আগাম কোনো তথ্য ছিল না কর্তৃপক্ষের কাছে।
সূত্রের খবর অনুযায়ী রেলের প্রশাসনিক বিভাগ থেকে সাময়িক সাবধানতা সূচক কোনো নির্দেশ জারি করা হয়নি। দুর্ঘটনাস্থল উত্তর ভারতের ফিরোজপুর বিভাগের অধীনে পড়ে। এই অঞ্চলে রেল লাইনের পাশেই যে রাবণের কুশপুত্তলিকা পোড়ানো হবে সে ব্যাপারে আগাম কোনো সতর্কতা জারি করা হয়নি।
জলন্ধর থেকে অমৃতসরগামী ট্রেন এবং অমৃতসর-হাওড়া মেইল দুটি ট্রেনের একটিও এমারজেন্সি ব্রেকের ব্যবহার করেনি। অথচ সূত্র বলছে, রাবণ পোড়ানোর অনুষ্ঠানে প্রচুর আতসবাজি থাকায় বহুদূর থেকেও দরশনার্থীদের ভিড় দৃষ্টিগোচর হচ্ছিল। লেভেল ক্রসিং-এর ২০০ মিটারের মধ্যে ঘটনাটি ঘটেছে। অর্থাৎ যথাসময়ে লেভেল ক্রসিং-এর গেট বন্ধ করে ট্রেনকে সবুজ সংকেত পাঠিয়েছেন রক্ষী। অথচ সেই সময় বেশি জরুরি ছিল রেল লাইনের পাশে বিপুল মানুষের সমাগম নিয়ে ট্রেনচালককে অবগত করা।
আরও পড়ুন Amritsar Train Accident: পাঞ্জাব জুড়ে শোকের ছায়া, মৃত কমপক্ষে ৫৯
অমৃতসর স্টেশনের সুপারিন্টেন্ডেন্ট অলোক মেহরোত্রা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, "আমাদের কাছে আগে থেকে খবর পাঠানো হলে আমরা ট্রেন চালককে বিষয়টি সম্পর্কে অবগত রাখতাম। রেল আধিকারিকদের দিক থেকে গাফিলতি হয়নি। লেভেল ক্রসিং বন্ধ থাকায় নিজের গতিতেই ট্রেন ছুটছিল। দশেরা উদযাপনের জন্য মানুষের তো রেল লাইনের ধারে কাছে জমায়েত হওয়ার কথা নয়। একই সময় দুটি ট্রেন যাওয়ার কারণে মানুষ ভয় পেয়ে আরও ছোটাছুটি করায় বিপদ আরও বেড়ে যায়"।
অলোক মেহরোত্রা অভিযোগের আঙুল তুলেছেন দশেরা অনুষ্ঠান আয়জন করা উদ্যোক্তাদের দিকে। " অনুষ্ঠান আয়োজন করার আগে ওদের একবার অন্তত রেল কর্তৃপক্ষকে জানানো উচিৎ ছিল।
রাজধানীতে রেল নিরাপত্তা কমিশনার এই দুর্ঘটনায় কর্তৃপক্ষের ভূমিকা খতিয়ে দেখছেন। সূত্রের খবর, প্রশ্নের মুখে পড়তে পারে প্রশাসন। নিরাপত্তা, ব্যারিকেড ইত্যাদি পরিষেবা দেওয়ার দায়িত্ব প্রশাসনের ওপরেই বর্তায়।