বয়স তাঁর কাছে সংখ্যা মাত্র। মোটে ৮৩। এখনও কত কী করার আছে। এই বয়সে পৌঁছনোর আগে কে অক্কা পেল! কে-ই বিছানায় শয্যাশায়ী হয়ে পড়ল, সেসব দেখার মত সময় তাঁর কাছে নেই। তিনি আছেন খোশমেজাজে। কেনিচি হোরি, শনিবারই দেশে ফিরেছেন। আমেরিকার সান ফ্রান্সিসকো থেকে একটা বোট নিয়ে রওনা দিয়েছিলেন। প্রায় ২ মাস ১০ দিন ধরে উত্তাল প্রশান্ত মহাসাগর পেরিয়ে কিই স্টেইট অতিক্রম করে জাপানের পশ্চিম উপকূলে বোটটাকে ভিড়িয়েছেন।
লোকজন, যাঁরাই দেখছেন বা শুনছেন, হতভম্ব হয়ে যাচ্ছেন। কেউ কেউ আবার হাততালি দিচ্ছেন। পিঠ চাপড়ে দিচ্ছেন। পশ্চিম জাপানের নিশিনোমিয়ার লোকজন তো বিশ্ব পরিবেশ দিবসে সংবর্ধনাই দিয়ে দিলেন। আর কেনিচি সেখানে বললেন, 'এই তো বয়স। যৌবন থাকতে থাকতেই এসব ঘুরে নেওয়া ভালো। এখন না-করলে আর কখন করব?' বুঝুন ঠ্যালা! ৮৩-র যুবকের কথা শুনে তো স্থানীয় লোকজন বুঝতেই পারছেন না, হাসবেন না-কাঁদবেন।
সংবর্ধনা সভায় যাঁরা ছিলেন, তাঁদের অনেকেই তাঁর হাঁটুর বয়সি। এর মধ্যেই কারও পায়ে ব্যথা। কারও হাতে ব্যথা। তো কারও স্পন্ডিলাইসিস। আর, সেখানে সম্পূর্ণ সাদা চুলের কেনিচি বলছেন, তিনি নাকি যুবক! এই বয়সেই তাঁর ঘোরার কথা। একা বোট নিয়ে উত্তাল সমুদ্রে ২ মাসের বেশি কাটানো। সান ফ্রান্সিসকো থেকে কী নিয়ে এলেন? স্থানীয় অনেকেই প্রশ্ন করেছিলেন। কেনেচি বোট থেকে বের করে এনে দেখালেন কিছু ওষুধ আর ব্যান্ডেড। যদিও এর মধ্যে ব্যান্ডেড আর আই ড্রপ ছাড়া কিছুই কাজে লাগেনি।
আরও পড়ুন- কবিগুরুকে অনন্য সম্মান, এবার ব্যাংক নোটে থাকতে পারেন রবীন্দ্রনাথও
এটা অবশ্য এই অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় মানুষটার প্রথম সমুদ্র সফর না। ১৯৬২ সালে একবার জাপান থেকে এভাবেই বোট নিয়ে সমুদ্র পেরিয়ে সান ফ্রান্সিসকো চলে গেছিলেন। এবার ২০২২ সালে উলটো পথে ফিরলেন একইভাবে। ওইটুকু ছোট্ট বোট। সমুদ্রে তিমি, হাঙর, অশান্ত প্রশান্ত মহাসাগরের বড় বড় ঢেউ। যেখানে বিশাল আকারের জাহাজ পর্যন্ত উলটে যায়। সেই পথ দিয়ে জাপান আর সানফ্রান্সিসকো যাতায়াত। সত্যিই! তিনিই পারেন। কেনেচি অবশ্য এখানেই থামতে চান না। হাজার হোক, যুবক তো! এই বয়সে না-ঘুরলে আর কবে ঘুরবেন? তাই শিগগিরি বোট নিয়ে বেরোতে চান। এবার অন্য কোথাও। অন্য কোনও পথে।
Read full story in English