একটানা বৃষ্টিতে বন্যা পরিস্থিতি অন্ধ্রপ্রদেশের বেশ কিছু জেলায়। জলের তলায় রাজ্যের বিস্তীর্ণ প্রান্ত। করোনাকালে প্রাকৃতিক এই বিপর্যয়ে তছনছ দক্ষিণ অন্ধ্রপ্রদেশের বেশ কয়েকটি জেলা। প্রাকৃতিক এই বিপর্যয়ের জেরে এখনও পর্যন্ত ১৫ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। ১৮ জন এখনও নিখোঁজ। দুর্গত এলাকাগুলি থেকে ২০ হাজারেরও বেশি মানুষকে ত্রাণ শিবিরে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। নেলোরে জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে রেললাইন।
দক্ষিণ অন্ধ্রপ্রদেশে লাগাতার বৃষ্টির জেরে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। চিত্তুর, কাডাপা, নেলোর, অনন্তপুর জেলার বিস্তার্ণ প্রান্ত জলের তলায়। প্রবল বৃষ্টিতে বহু বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে কাডাপা জেলায়। এই জেলার একশোরও বেশি বাড়ি জলের তোড়ে ভেঙে পড়েছে। এখনও পর্যন্ত জলমগ্ন এলাকাগুলি থেকে ২০ হাজার মানুষকে উদ্ধার করে ত্রাণ শিবিরগুলিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, অন্ধ্রপ্রদেশে প্রাকৃতিক এই বিপর্যয়ের জেরে এখনও পর্যন্ত ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। খোঁজ নেই আরও ১৮ জনের ।
অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ওয়াইএস জগনমোহন রেড্ডি ইতিমধ্যেই বন্যা পরিস্থিতির জেরে রাজ্যের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিয়ে একটি রিপোর্ট তৈরি করেছেন। পরিস্থিতি মোকাবিলা নিয়ে শনিবার মুখ্যমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট জেলার প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গেও আলোচনা করেছেন। এদিকে, অন্ধ্রপ্রদেশের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন কেন্দ্রীয় সরকারও। এর আগে শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মুখ্যমন্ত্রী ওয়াইএস জগনমোহন রেড্ডির সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। পরিস্থিতি মোকাবিলায় কেন্দ্রের তরফে অন্ধ্রপ্রদেশকে সবরকম সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার থেকে প্রবল বৃষ্টির জেরে চিত্তুর ও নেলোর জেলার বেশ কিছু নদী, খাল ও জলাশয় উপচে পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলিতে জল ঢুকতে শুরু করে। স্বর্ণমুখী, কলিঙ্গী নদীর জলও বিপদসীমা পেরিয়ে আশেপাশের এলাকায় ঢুকছে। নদীপাড়ের নিচু এলাকাগুলি জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। আবহাওয়ার পরিস্থিতি অনুকূল না হলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ৩২ হাজার হেক্টরের বেশি কৃষি ও বাগানের জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন- সেনা ঢুকতেই অতর্কিতে এলোপাথাড়ি গুলি, পাল্টা জবাবে নিহত জঙ্গি
বন্যা বিধ্বস্ত অন্ধ্রপ্রদেশের দুর্গত এলাকাগুলিতে উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দল। NDRF-এর সাতটি দল উদ্ধারকাজে সামিল রয়েছে। চারটি দল মোতায়েন রয়েছে কাডাপা জেলায়। এছাড়াও রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগের ৯টি দল উদ্ধারকাজের পাশাপাশি ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার কাজ করছে। হেলিকপ্টারের সাহায্যেও দুর্গত এলাকাগুলিতে উদ্ধারকাজ চালানো হচ্ছে। কাডাপা ও অনন্তপুর জেলায় দুটি হেলিকপ্টার রাখা হয়েছে।
রাজ্য সরকারের তরফে প্লাবিত এলাকাগুলিতে ২৩০টি ত্রাণ শিবির চালু করা হয়েছে। ত্রাণ শিবিরগুলিতে পানীয় জল ও খাবার দেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও রাজ্যের তরফে ত্রাণ শিবিরগুলিতে আসা প্রত্যেককে ১ হাজার টাকা বা প্রতি পরিবারকে ২ হাজা টাকা করে আর্থিক সাহায্যও দেওয়া হচ্ছে। বৃষ্টির জেরে ব্যহত হচ্ছে রেল পরিষেবাও। ভারী বৃষ্টির জেরে দক্ষিণ-মধ্য রেলওয়ে শনিবার চেন্নাই সেন্ট্রাল-তিরুপতি এবং গুন্টকাল-তিরুপতি ট্রেনটি বাতিল করেছে।
Read full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন