শান্তিপূর্ণ পথে সিএএ বিরোধী আন্দোলনকারীদের 'বিশ্বাসঘাতক' বা 'দেশবিরোধী' তকমা দেওয়া যাবে না। এমনই জানাল বম্বে হাইকোর্টের অওরঙ্গাবাদ বেঞ্চ। মহারাষ্ট্রের বিডে সিএএ বিরোধী আন্দোলনের অনুমতি সংক্রান্ত একটি শুনানিতে এই নির্দেশ দেওয়া হয়।
Advertisment
সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হচ্ছে বলেই সেই আন্দোলনকে দমানো যাবে না বলে জানিয়েছে আদালত। আমলাদের উদ্দেশ্যেও এদিন কড়া নির্দেশ দিয়েছে বম্বে হাইকোর্টের অওরঙ্গাবাদ বেঞ্চ। আদালত জানিয়েছে, 'কোনও নির্দিষ্ট আইন তাদের অধিকারের উপর হস্তক্ষেপ- যদি কোনও সম্প্রদায় এমনটা মনে করে তাহলে তারা আন্দোলন করতে বাধ্য। আমলারা যেন এটা মাথা রাখেন।' এছাড়াও নির্দেশে বলা হয়েছে, 'এই অধিকারের অনুশীলন আইন-শৃঙ্খলাজনিত সমস্যা সৃষ্টি করবে কিনা তা নির্ধারণ করা আদালতের পক্ষে সম্ভব নয়'। আদালত আরও বলে যে, 'আমাদের ভুললে চলবে না যে অহিংস আন্দোলনের মাধ্যমেই এই দেশ স্বাধীনতা অর্জন করে। আমরা ভাগ্যবান যে এই এখনও পর্যন্ত এই দেশের বেশিরভাগ মানুষ অহিংস আন্দোলনে বিশ্বাসী।'
মহারাষ্ট্রের বিডে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদ আন্দোলনের জন্য পুলিশ প্রশাসনের থেকে অনুমতি চাওয়া হয়। কিন্তু অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের রিপোর্টের ভিত্তিতে তা নাকচ করে দেয় প্রশাসন। তারপরই প্রশাসনের বিরুদ্ধে বম্বে হাইকোর্টে আবেদন জানান ৪৫ বছরের ইফতিকার শেখ। সেই মামলারই শুনানিতে বম্বে হাইকোর্ট জানিয়েছে, সিএএ বিরোধী আন্দোলনকারীদের 'বিশ্বাসঘাতক' বা 'দেশবিরোধী' তকমা দেওয়া যাবে না। দেশ বিরোধী, কোনও সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে এমন কোনও স্লোগান দেওয়া হবে না যা ভারতের ঐক্য ও অখণ্ডতার পরিপন্থী। আন্দোলনকারীদের তরফে এই বিষয়টি লিখিত দেওয়া হয়েছিল পুলিশের কাছে। কোর্ট এদিন এই বিষয়টিকেও তুলে ধরে।
বম্বে হাইকোর্ট জানিয়েছে, দেশের বিভিন্নপ্রান্তে সিএএ বিরোধী আন্দোলন হচ্ছে। কিন্তু, এখানে 'দেশ বিরোধী' তকমা দিয়ে তা বন্ধ করার চেষ্ঠা হচ্ছে। এক্ষেত্রে প্রশাসনের নির্দেশ 'ন্যায্য নয়' ও 'সততার' সঙ্গে করা হয়নি। আদালত এও জানিয়েছে যে, সিএএ-এর সাংবিধানিক বৈধতা রয়েছে কিনা তা আদালতে বিচারাধীন। এছাড়া, এই ধরনের আন্দোলনে ছাড়পত্রের ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে যে দেশে আইনের শাসন রয়েছে। সংখ্যা গরিষ্ঠের শাসন দিয়ে দেশ পরিচালিত হয় না। সরকারের উচিত আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলা।
সিএএ প্রতিবাদ
প্রশাসনের তরফে আদালতে জানানো হয় যে, যারা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করবে তাদেরই বিক্ষোভের ছাড়পত্র দেওয়া হোক। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত জানায়, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার বিষয়টি আদালতের বিবেচ্য হতে পারে না। যারা আন্দোলন করছে তারা কোনও আইনভঙ্গকারী কিনা তা আদালতের বিচার্য বিষয়।