আবহাওয়াবিদরা কয়েকদিন আগে থেকেই সতর্ক করেছিলেন। সেই সতর্কবার্তা বাস্তবে পরিণত হওয়ার ঝলক দেখাল মঙ্গলবার। দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরের নিম্নচাপ 'অশনি' ইতিমধ্যেই ঘনীভূত হয়েছে। তা গভীর নিম্নচাপের আকার ধারণ করেছে। যার জেরে সোমবার ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গের একাধিক জেলায় বৃষ্টিপাত হয়েছে। এমনটাই জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। ইতিমধ্যেই সাইক্লোনের গতিপ্রকৃতি সম্পর্কে একটা তথ্য প্রকাশ করেছে আবহাওয়া দফতর। আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার ঘূর্ণিঝড় অন্ধ্র-ওড়িশা উপকূলের কাছে পৌঁছবে। আগামী দু'দিনে তা উপকূলবর্তী জেলাগুলোয় আছড়ে পড়তে পারে।
বর্তমানে বিশাখাপত্তনম থেকে ৫৫০ কিলোমিটার, পুরী থেকে ৬৮০ কিলোমিটার অবস্থান করছে এই ঘূর্ণিঝড়। আবহাওয়াবিদরা মনে করছেন, 'অশনি' ঘূর্ণিঝড় 'জাওয়াদ'-এর মতোই ধ্বংসলীলা চালাতে পারে। ঘূর্ণিঝড় 'জাওয়াদ' বঙ্গোপসাগরে ঘনীভূত হয়েছিল। গত ডিসেম্বরে আছড়ে পড়েছিল দক্ষিণ ওড়িশা উপকূলে। আবহাওয়াবিদরা জানাচ্ছেন, গত দু'দিন ধরেই ঘূর্ণিঝড় 'অশনি' ঘনীভূত হচ্ছিল। মঙ্গলবার থেকেই বাড়বে তার গতিবেগ। 'ইয়াস'-এর বর্ষপূর্তিতে 'অশনি'র এই আগমনে শঙ্কিত প্রশাসন। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস পাওয়ামাত্রই উপকূলবর্তী জেলাগুলোকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। মত্স্যজীবীদের অবিলম্বে ফিরে আসতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী দু'দিন মত্স্যজীবীরা সমুদ্রে মাছ ধরতে যেতে পারবেন না-বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। ট্রলারগুলোকে ঝড় থেকে বাঁচাতে নদী ও সমুদ্রতটে মোটা শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন- শক্তি বাড়াচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’, টানা ৩ দিন ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা একাধিক জেলায়
তবে আবহাওয়াবিদদের অনুমান, অশনি মূলত আছড়ে পড়বে ওড়িশা উপকূলেই। ক্ষয়ক্ষতিও মূলত ওড়িশা উপকূলেই হবে। তবে, এই ঘূর্ণিঝড়ের জেরে বিহার, ঝাড়খণ্ড, পশ্চিমবঙ্গ এবং সিকিমে ১২ মে পর্যন্ত দুর্যোগ চলবে। ঝড়-বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে এর প্রত্যক্ষ প্রভাব মূলত পড়বে উপকূলবর্তী জেলাগুলোয়। প্রশাসনের তরফে উপকূলবর্তী এলাকায় লাগাতায় সতর্কতামূলক প্রচার চলছে। পর্যটকদের সমুদ্রের আশপাশে যেতে মানা করা হয়েছে। উপকূলরক্ষী, জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, নৌবাহিনী-সহ সংশ্লিষ্ট সবপক্ষকেই সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ এবং ওড়িশায় খোলা হয়েছে বিশেষ কন্ট্রোল রুম। সেই সব কন্ট্রোল রুম থেকে জেলা প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।
Read story in English