scorecardresearch

শর্টস পরে বসার অনুমতি নেই, পর্দা দিয়ে পা ঢেকে প্রবেশিকা পরীক্ষা দিলেন তরুণী

“এটা জীবনের অন্যতম অপমানজনক অভিজ্ঞতা”, লজ্জায় মাথা হেঁট পরীক্ষার্থীর।

শর্টস পরে বসার অনুমতি নেই, পর্দা দিয়ে পা ঢেকে প্রবেশিকা পরীক্ষা দিলেন তরুণী
উন্মুক্ত উরু দেখানো যাবে না, তাই পর্দা দিয়ে পা ঢেকে পরীক্ষা দিলেন অসমের তরুণী।

শর্টস পরে এসেছিলেন পরীক্ষা দিতে। তখনও জানতেন না, কী অপেক্ষা করছে তার জন্য। উন্মুক্ত উরু দেখানো যাবে না, তাই পর্দা দিয়ে পা ঢেকে পরীক্ষা দিলেন অসমের তরুণী। এই ঘটনায় রীতিমতো লজ্জিত অনুভব করছেন তেজপুরের জুবলি তামুলি। স্থানীয় বিশ্বনাথ চারিয়ালির বাসিন্দা ওই তরুণী টেলিফোনে গোটা ঘটনা জানিয়েছেন দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে।

জুবলি জানিয়েছেন, জোরহাটের প্রখ্যাত অসম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশিকা পরীক্ষা দিতে গিয়ে বিপত্তি হয়। গত কয়েক মাস ধরে পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তিনি। গত ১৫ সেপ্টেম্বর সকালে বাবার সঙ্গে দু ঘণ্টা সফর করে পরীক্ষাকেন্দ্র গিয়েছিলেন তিনি। সিট পড়েছিল গিরিজানন্দ চৌধুরি ফার্মাসিউটিক্যাল সায়েন্সেস ইনস্টিটিউটে। অসমের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন এই প্রতিষ্ঠান। যা জুবলির বাড়ি থেক প্রায় ৭০ কিমি দূরে।

কিন্তু পরীক্ষা দিতে গিয়ে লজ্জার মুখে পড়েন তিনি। তিনি এসেছিলেন শর্টস বা হাফ প্যান্ট পরে। তা নিয়েই বাধে বিতর্ক। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জুবলি জানিয়েছেন, “এটা জীবনের অন্যতম অপমানজনক অভিজ্ঞতা।” তিনি ঠিক করেছেন, শিক্ষামন্ত্রী রানোজ পেগুকে চিঠিতে অভিযোগ জানাবেন এই বিষয়ে। তরুণী জানিয়েছেন, “পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢোকার মুখে বার বার আমাকে আটকানো হয়। পরে যখন নিরাপত্তারক্ষীরা আমাকে ভিতরে ঢোকার অনুমতি দেন, তখন পরীক্ষক আমাকে আটকান। আমাকে বলেন, আমি শর্টস পরে পরীক্ষায় বসতে পারব না”।

জুবলির কথায়, “অ্যাডমিট কার্ডে কোনও পোশাক বিধির উল্লেখ ছিল না। কয়েক দিন আগে আমি নিট (NEET) দিয়েছি। একই শহরে একই পোশাকে আমি পরীক্ষা দিয়েছি। কিন্তু তখন কিছু হয়নি। এমনকী কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন কোনও পোশাক নিয়ে নিয়মও নেই। তাহলে আমি জানব কী করে!”

জুবলির কথায়, লজ্জায় লাল হয়ে যান তিনি। তাঁর প্রতিবাদে কেউ কর্ণপাত করেননি। “আমি কাঁদতে কাঁদতে আমার বাবার কাছে পরীক্ষা কেন্দ্রের বাইরে ছুটে যাই। শেষপর্যন্ত কন্ট্রোলার আমাকে বলেন, আমি পরীক্ষা দিতে পারব যদি কোথা থেকেও প্যান্টের বন্দোবস্ত করতে পারি। তখন আমার বাবা দৌড়ে বাজারে যান প্যান্ট আনার জন্য।”

আরও পড়ুন পুণ্যার্থীদের জন্য সুখবর! কোভিড প্রোটোকল মেনে চার ধাম যাত্রায় অনুমতি হাইকোর্টের

এদিকে, পরীক্ষার জন্য দেরি হয়ে যাচ্ছিল। অনেক পরে তাঁর বাবা বাবুল তামুলি আট কিমি দূরে গিয়ে একটি দোকান থেকে প্যান্টের ব্যবস্থা করেন। তবে ততক্ষণে জুবলিকে পায়ে পর্দা দিয়ে ঢেকে পরীক্ষা দিতে বলেন পরীক্ষক। বাবা এসে জানতে পারেন সমস্যার সমাধান হয়েছে। জুবলির ক্ষোভ, “ওঁরা কোভিড বিধি, মাস্ক পরেছি কি না, শরীরের তাপমাত্রা এসব কিছু পরীক্ষা না করে আমার শর্টস নিয়ে বেশি আগ্রহী ছিল।” পরীক্ষা দিতে পারলেও এই বিভীষিকাময় অভিজ্ঞতা জীবনেও ভুলবেন না বলে জানিয়েছেন ১৯ বছরের তরুণী।

এদিকে, প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ডা. আবদুল বাকি আহমেদ জানিয়েছেন. তিনি সেইসময় কলেজে ছিলেন না। তবে এমন ঘটনার কথা শুনেছেন। তিনি দাবি করেছেন, “পরীক্ষা নিয়ে আমাদের কিছু করার নেই। এটা ভেন্যু হিসাবে বেছে নেওয়া হয়েছে। পরীক্ষক থেকে প্রশ্নপত্র, সবই বাইরে থেকে আনা। তাই শর্টস নিয়ে কোনও নিয়ম নেই। তবে পরীক্ষার সময় শালীনতা মানতে হবে। অভিভাবকরা এটা ভাল জানবেন।”

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

Stay updated with the latest news headlines and all the latest General news download Indian Express Bengali App.

Web Title: Assam 19 year old in shorts made to take exam wrapped in curtain