ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির কবলে আসাম। এখনও ২৬টি জেলার ১০৮৯টির বেশি গ্রাম জলের তলায়। বন্যা এবং ভুমিধসের কারণে এখনও পর্যন্ত আটজনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। কাছাড়ের দুজন এবং উদালগুড়িতে একজন বন্যার কারণে প্রাণ হারিয়েছেন, ডিমা হাসাওতে চারজন এবং লখিমপুরে ভূমিধসে একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে রাজ্য প্রশাসন। পাশাপাশি ৫ জন এখনও নিখোঁজ রয়েছেন।
বন্যায় প্রায় ৪ লক্ষের বেশি মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছেন বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। সেনাবাহিনী, আধা-সামরিক বাহিনী, ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স, স্টেট ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্সকে বন্যা মোকাবিলায় নামানো হয়েছে। বন্যায় আটকে থাকা প্রায় ৩হাজার ৪২৭ জনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনের তরফে ১৪২টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। পাশাপাশি ১১৫টি আশ্রয় শিবিরে প্রায় ৪০ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। কামপুর ও ধরমতুলে কপিলি নদী, নাংলামুরাঘাটে ডিসাং নদী, এপি ঘাটে বরাক নদী এবং করিমগঞ্জে কুশিয়ারা নদীর জল বিপদ সীমার ওপর দিয়ে বইছে।
গুয়াহাটি আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে আগামী কয়েক দিন এই সকল অঞ্চলে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। শুক্রবার থেকে আবহাওয়ার কিছুটা উন্নতি হবে বলে আবহাওয়া দফতরের সর্বশেষ বুলেটিনে জানানো হয়েছে।
এদিকে মৃত্যুপুরী অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার সঙ্গে বন্যার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ। বন্যা মোকাবিলায় অসমকে সবরকমের সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। এবিষয়ে অমিত শাহ এক টুইট বার্তায় লিখেছেন, “অসমের বন্যা পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। ইতিমধ্যেই সেখানে এনডিআরএফ দল মোতায়েন করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে’।
আরও পড়ুন: ফের কোপ হেঁশেলে, আরও মহার্ঘ্য রান্নার গ্যাস
ভারী বৃষ্টি ও ব্যাপক ধসের জেরে অসমের ডিমা হাসাও জেলার হাফলংয়ে বিপর্যস্ত রেল পরিষেবা। ট্রেনে আটকে পড়া অধিকাংশ যাত্রীকে এয়ার লিফট করে নিরাপদ জায়গায় পৌঁছে দিয়েছে ভারতীয় বায়ুসেনা। নর্থইস্ট ফ্রন্টিয়ার রেলওয়ে জানিয়েছে, ভারী বৃষ্টি এবং ধসের জেরে গত শনিবার থেকে লামডিং-বদরপুর রুটে ১৮টি ট্রেন বাতিল হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় শুরু হয়েছে রেললাইন মেরামতির কাজ ।
ভাসছে বিশ্বনাথ, বোঙ্গাইগাঁও, কাছাড়, ধেমাজি, ধুবরি, ডিব্রুগড়, হোহাই, কার্বি আংলং, কোকরাঝাড়, লখিমপুর, নাবালগাঁও, জোড়হাট ও কামরুপ । ভূমিধসে ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলির মধ্যে রয়েছে ডিমা হাসাও, হাইলাকান্দি এবং করিমগঞ্জ।
ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে জাতীয়সড়ক এবং পাঁচটি রাজ্যসড়ক ক্ষতিগ্রস্ত । বিভিন্ন অঞ্চলে বিদ্যুৎ ও মোবাইল সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। লামডিং-বদরপুর এলাকায় ৫০টির বেশি স্থানে ভুমিধসের কারণে ত্রিপুরা, মণিপুর, মিজোরাম এবং দক্ষিণ আসামের বিস্তীর্ণ অংশে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা।
Read in English