অযোধ্যা রায়ে দেশের শীর্ষ আদালতের দেওয়া আদেশ নিয়ে ফের বিবেচনা করার সিদ্ধান্ত নিল সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড। মসজিদ নির্মাণের জন্য কেন্দ্রকে পাঁচ একর জমি হস্তান্তর করার আদেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। সেই আদেশের একদিন পর সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড জানায়, আগামী ২৬ নভেম্বর অযোধ্যার রায়ের বরাদ্দ জমি তাঁরা গ্রহণ করবেন কি না সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। শুধু জমি নয় মন্দির নির্মাণের জন্য আগামী তিন মাসের মধ্যে মন্দির নির্মাণ ট্রাস্টও গঠন করতে হবে বলে কেন্দ্রকে জানিয়েছেন সাংবিধানিক বেঞ্চের পাঁচ বিচারপতি।
আরও পড়ুন- অযোধ্যা রায়ে আমি স্বীকৃতি পেলাম: এল কে আডবানি
অযোধ্যার এই বহু আলোচিত রায়ের পর ইউপি সুন্নি সেন্ট্রাল ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যান জাফর আহমেদ ফারুকি সংবাদসংস্থা পিটিআইকে বলেন, "জমি নেওয়া হবে কি না সে বিষয়ে আমি বিভিন্ন মতামত পাচ্ছি। আগামী ২৬ নভেম্বর বোর্ডের সাধারণ সভা। আশা করা হচ্ছে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশানুসারে ৫ একর জমি নেওয়া হবে কি না সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।" ফারুকি আরও বলেন, "এর আগে ঠিক বৈঠকটি হবে ১৩ তারিখ। তবে তা স্থগিত করা হয়েছে। আগামী বৈঠকটি হবে ২৬ নভেম্বর। জমি নিয়ে বিভিন্ন মন্তব্য আসছে আমার কাছে। তবে আমি মনে করি ইতিবাচকতাকে সঙ্গে নিয়েই জিততে পারে নেতিবাচকতা।"
আরও পড়ুন- অযোধ্যায় রাম মন্দির: অবশেষে সঙ্ঘ পরিবারের ইচ্ছা পূরণ
তবে কোনও বিরোধিতায় নয়, অযোধ্যা ইস্যু সমাধানের জন্য তিনি মধ্যস্থতার পক্ষে ছিলেন বলে উল্লেখ করে সুন্নি সেন্ট্রাল ওয়াকফ বোর্ড চেয়ারম্যান ফারুকির বক্তব্য, "যদিও মধ্যস্থতা অসফল হয়েছে, তবু আমার মত পরিষ্কার। বেশ কিছু ব্যক্তি পরামর্শ দিয়েছেন যে জমিটি ওয়াকফ বোর্ডের নেওয়া উচিত এবং একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গঠন করা উচিত, যেখানে একটি মসজিদও নির্মাণ করা যেতে পারে।" তবে অযোধ্যা মামলার রায়ের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ করবে না সুন্নি সেন্ট্রাল ওয়াকফ বোর্ড, তা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন বোর্ড চেয়ারম্যান জাফর আহমেদ ফারুকি। রামজন্মভূমি-বাবরি মসজিদ মামলার অন্যতম মামলাকারী ছিল সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড। যদিও সুপ্রিম কোর্টের রায় পরবর্তী পদক্ষেপ ঘিরে বিভিন্ন মুসলিম সংগঠনের নেতাদের মতভেদ স্পষ্ট হয়েছে।
আরও পড়ুন- অযোধ্যার বিতর্কিত জমির সবটাই কেন হিন্দুদের হাতে তুলে দিল সুপ্রিম কোর্ট?
এই প্রেক্ষিতে দিল্লির জামা মসজিদের শাহী ইমাম বলেন, ‘আদালতের রায় সবাইকেই মানতে হবে। এ নিয়ে বিতর্ক অপ্রয়োজনীয়।’ অন্যদিকে, মুসলিম মজলিস-এ-মুশওয়ারাতের সভাপতি নাভিদ হামিদ বলেন, ‘মুসলমানদের থেকে ৬৭ একর নিয়ে ৫ একর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এটা সান্ত্বনা, যা আমাদের নেওয়া উচিত নয়।’ জমিয়তে উলেমা-ই-হিন্দ সভাপতি আরশাদ মাদানি জানিয়েছেন ‘হতাশার কোনও জায়গা নেই।’
আরও পড়ুন- অযোধ্যা রায়: ক্ষুব্ধ পাকিস্তান
ভারতের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন বিচারপতি এসএ বোবদে, ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, অশোক ভূষণ এবং এস আব্দুল নাজিরের বেঞ্চের তরফে বলা হয়, রাম চবুতরায় “দীর্ঘ নিরবচ্ছিন্ন অব্যাহত পূজার্চনা” এবং অন্যান্য তাৎপর্যপূর্ণ ধর্মীয় ক্রিয়াকলাপ চালানোর মাধ্যমে বাইরের অংশে দখলিস্বত্ব প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছে হিন্দুরা। ষোড়শ শতাব্দীতে নির্মাণের সময়কাল থেকে ১৮৫৭ সালের আগে পর্যন্ত একমাত্র তারাই যে ভেতরের অংশের কর্তৃত্ব ভোগ করত, সে কথা প্রমাণ করতে পারেনি মুসলিম পক্ষ।
Read the full story in English