রাম জন্মভূমি অযোধ্যায় রমরমিয়ে জমির হাতবদল। রাম মন্দির গড়ায় সুপ্রিম রায়ের পরেই জমি কেনা-বেচা তুঙ্গে ওঠে। অযোধ্যা উন্নয়ন পর্ষদ সম্প্রতি শহরে অবৈধভাবে জমি কেনা ৪০ জনের নাম প্রকাশ্যে এনেছে। যাঁদের মধ্যে রয়েছেন মেয়র থেকে শুরু করে বর্তমান ও প্রাক্তন বিধায়করাও। যা নিয়ে রাম জন্মভূমির শহরে রীতিমতো হুলস্থূল পড়ে গিয়েছে। অযোধ্যায় এই অবৈধভাবে এই জমির মালিক হওয়া ব্যক্তিদের তালিকায় নাম মেয়র ঋষিকেশ উপাধ্যায়, জেলা সদরের বিধায়ক বেদ প্রকাশ গুপ্তা এবং মিলকিপুরের প্রাক্তন বিধায়ক গোরক্ষনাথ বাবার।
অযোধ্যা উন্নয়ন পর্ষদের ভাইস চেয়ারম্যান বিশাল সিং রবিবার সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে বলেছেন, "শনিবার রাতে ৪০ জনের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। যাঁরা বেআইনিভাবে জমি কিনেছেন। বেশ কয়েকজন এডিএ-র এলাকায় নির্মাণ কাজও করেছেন।" পরে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের তরফে বিশাল সিংয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। তিনি বলেছেন, ''এঁদের পিছনে কারা আছেন সেব্যাপারে তদন্ত হবে। নামের এই তালিকাটি উদ্দেশ্যমূলকভাবে ফাঁস করা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। এটা ভুল।"
উল্লেখ্য, গত বছরের ২২ ডিসেম্বর দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস অযোধ্যায় এই জমি কেলেঙ্কারি নিয়ে প্রতিবেদন সামনে আনতে এনেছিল। খোঁজখবর নিয়ে দেখা গেছে এক ডজনেরও বেশি জমি ক্রেতাদের মধ্যে বিধায়ক বেদ প্রকাশ গুপ্তা এবং ঋষিকেশ উপাধ্যায়ও ছিলেন। অযোধ্যার স্থানীয় বিধায়ক ও তাঁদের ঘনিষ্ঠ, সরকারি আমলা ও তাঁদেরও আত্মীয়রা জমি কিনেছেন।
আরও পড়ুন- বাস না পেয়ে টার্মিনালের দিকে হাঁটলেন যাত্রীরা, ফের বিতর্কে SpiceJet, তদন্তর নির্দেশ DGCA-র
অযোধ্যায় রাম মন্দির তৈরির সুপ্রিম রায়ের পরেই সেখানে জমি কেনা-বেচার হিড়িক পড়ে যায়। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রসে তদন্ত করে দেখেছে, সুপ্রিম কোর্টের অযোধ্যার জমি নিয়ে রায়ের পরেই ওই এলাকায় রাজনীতিবিদ, আমলা, সরকারি উচ্চপদস্থ আধিকারিক ও তাঁদের ঘনিষ্ঠদের মধ্যে জমি কেনার ব্যাপারে তুমুল উৎসাহ চোখে পড়ে। জানা গিয়েছে, বিধায়ক বেদপ্রকাশ গুপ্তার ভাগ্নে তরুণ মিত্তল ২০১৯-এর ২১ নভেম্বর বারহাটা মাঞ্জায় ৫ হাজার ১৭৪ বর্গ মিটার কিনেছিলেন ১ কোটি ১৫ লক্ষ টাকায়।
এরপর ২০২০-এর ২৯ ডিসেম্বর পাশেই মহেশপুরে তিনি ১৪ হাজার ৮৬০ বর্গ মিটার জমি কিনেছিলেন। প্রস্তাবিত রাম মন্দিরের খুব কাছেই ওই জমি তিনি ৪ কোটি টাকায় কিনেছিলেন বলে জানা গিয়েছে। অন্যদিকে, অযোধ্যার মেয়র ঋষিকেশ উপাধ্যায় ২০১৯-এর ১৮ সেপ্টেম্বর ৩০ লক্ষ টাকায় অযোধ্যায় ১ হাজার ৪৮০ বর্গ মিটার জমি কেনেন।
অযোধ্যায় জমি নিয়ে এই কারবারের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই নড়েচড়ে বসে উত্তরপ্রদেশ সরকারও। জনপ্রতিনিধি এবং সরকারি কর্মকর্তাদের একাংশের জমি কেনায় নাম উঠে আসার ঘটনার তদন্তের জন্য এক সদস্যের কমিটিও গঠন করেছিল যোগী আদিত্যনাথ সরকার। চলতি বছরের জানুয়ারিতে সরকারের কাছে জমা দেওয়া পড়ে কমিটির রিপোর্ট। যদিও সেই রিপোর্ট এখনও পাবলিক ডোমেনে নেই।