Ayodhya land dispute case: অযোধ্যা মামলায় ঐতিহাসিক রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট। বিতর্কিত জমি দেওয়া হল হিন্দুদের। আর মসজিদ নির্মাণের জন্য অযোধ্যাতেই পাঁচ একর বিকল্প জমি দেওয়ার নির্দেশও দিল দেশের শীর্ষ আদালত। মন্দির নির্মাণের জন্য আগামী তিন মাসের ভেতর প্রকল্প তৈরি করে মন্দির নির্মাণ ট্রাস্ট গঠন করতে হবে বলেও জানিয়েছেন সাংবিধানিক বেঞ্চের পাঁচ বিচারপতি। কেন্দ্রকে এই নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। বিতর্কিত রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ জমি মামলার এই রায় দিতে গিয়ে একমত হয়েছেন পাঁচ বিচারপতিই।
অযোধ্যা মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় পড়ুন
আরও পড়ুন: অযোধ্যা অভিধান: এক নজরে
অযোধ্যা রায় দিতে গিয়ে সুপ্রিম কোর্ট শনিবার জানিয়েছে, এলাহাবাদ হাইকোর্ট সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড ও নির্মোহী আখড়ার আর্জি খারিজ করার পরও তাদের মধ্যে জমির অংশ সমানভাবে ভাগ করার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তা অযৌক্তিক। শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, গোটা জমিটিকে সামগ্রিকভাবে দেখে বিবেচনা করতে হবে। এদিন নির্মোহী আখড়ার দাবি খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। অযোধ্যা নিয়ে সুপ্রিম নির্দেশে 'অসন্তুষ্ট' সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড।
আরও পড়ুন: এক নজরে অযোধ্যা মামলার ইতিবৃত্ত
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সুপ্রিম কোর্টের রায় প্রকাশের আগেই সব পক্ষকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করার আবেদন জানিয়েছিলেন। শুক্রবার রাতেই নজিরবিহীনভাবে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যসচিব এবং পুলিশের ডিজি-কে ডেকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সুস্থিত রাখতে বলেছেন প্রধান বিচারপতি। এই রায়দানকে কেন্দ্র করে ‘খাকি সমুদ্রে’ পরিণত করা হয়েছে অযোধ্যা-কে। সম্পূর্ণ উত্তরপ্রদেশ পুলিশে পুলিশে ছয়লাপ। রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ, হনুমান মন্দির, বাস, গাড়ি, শহরের প্রতিটি কোণে কোণে মোতায়েন করা হয়েছে উর্দিধারী পুলিশ এবং র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স (র্যাফ)। এ মামলার গুরুত্ব বিশ্লেষণ করে অযোধ্যা ও উত্তরপ্রদেশের স্পর্শকাতর অঞ্চলগুলির সুরক্ষা নিশ্চিত করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে প্রায় ৪ হাজার আধা-সামরিক বাহিনী মোতায়েন রয়েছে। শনিবার থেকে সোমবার অবধি রাজ্যের সমস্ত স্কুল, কলেজ বন্ধ রাখার নির্দেশও দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন- মামলার রায় যাই হোক, উদযাপনে নেই অযোধ্যা
প্রসঙ্গত, ২০১০ সালে এলাহাবাদ হাইকোর্ট রায় দিয়ে জানিয়েছিল, অযোধ্যায় বিতর্কিত ২.৭৭ একর জমি সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড, নির্মোহী আখড়া ও রামলালা বিরাজমানের মধ্যে সমান ভাবে ভাগ করতে হবে। এ রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে ১৪টি আবেদনপত্র জমা পড়ে। এরপর তিন সদস্যের মধ্যস্থতাকারী প্যানেল তৈরি করে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। কিন্তু মধ্যস্থতা ব্যর্থ হওয়ায় গত ৬ অগাস্ট থেকে এ মামলার দৈনিক শুনানি শুরু হয়েছিল। ৪০ দিন টানা শুনানির পর অবশেষে শনিবার প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ, বিচারপতি এস এ বোবদে, বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি অশোক ভূষণ, বিচারপতি এস আব্দুল নাজিরের সাংবিধানির বেঞ্চ অযোধ্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন।
Read the full story in English
Live Blog
Ayodhya Verdict: রামজন্মভূমি-বাবরি মসজিদ মামলার রায়দান আজ। এই সংক্রান্ত যাবতীয় খবরের আপডেটস-এর জন্য জন্য চোখ রাখুন এখানে
বিতর্কিত অযোধ্যা মামলার রায়দান আজ। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে উপত্যকার নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। কার্ফু জারি করা হয়েছে কিস্টওয়ার ও সংলগ্ন অঞ্চলে। কিস্টওয়ারের ডেপুটি কমিশনার আঙ্গরেজ সিং জানিয়েছেন অশান্তি এড়াতেই ১৪৪ ধারা জারির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এলাকার সহ স্কুল, কলেজ বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গোটা ভূস্বর্গেই সেনা টহল দিচ্ছে। প্রয়োজন ছাড়া স্থানীয়দের বাড়ি থেকে বের হতে নিষেধ করছে পুলিশ। তবে, কাঠুয়া-জম্মু, জম্মু-শ্রীনগর জাতীয় সড়কে যান চলাচল করছে স্বাভাবিকভাবেই।
শতাব্দীর প্রাচীন অযোধ্যা মামলা। টানা ৪০ দিন ধরে শুনানির পর প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন সাংবিধানিক বেঞ্চ আজ এই মামলার রায় দেবে। বেঞ্চের বাকি সদস্যরা হলেন এসএ বোবদে, বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি অশোক ভূষণ এবং বিচারপতি এস আব্দুল নাজির। চলতি মাসের ১৭ তারিখ প্রধান বিচারপতির পদ থেকে অবসর গ্রহণ করছেন গগৈ। তার আগে এই মামলার রায় দানের কথা ঘোষণা করেছিলেন প্রধান বিচারপতি গগৈ।
গত কয়েক শতকের এই মহা বিতর্কিত মামলার রায় প্রকাশ পেতে চলেছে আর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই। স্বাধীন ভারতে বহু বিতর্ক এবং রাজনৈতিক তরজার কেন্দ্র হয়ে থেকেছে এই বিতর্ক। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এ দেশের রাজনীতির একটা বড় অংশ আবর্তিত হয়েছে এই বিতর্ককে কেন্দ্র করেই। তবে এবার সেই ঐতিহাসিক মুহূর্ত, যখন দেশের সর্বোচ্চ আদালত এ বিষয়ে রায় দিতে চলেছে। এই অবসরে এক ঝলকে দেখে নেয়া যাক, ঠিক কোন পথে এগিয়েছে এই অতি বিতর্কিত মামলা-
শুক্রবার রাতেই জানা গিয়েছে আজ অযোধ্যা মামলার রায় দান করূে সুপ্রিম কোর্ট। ইতিমধ্যেই গোটা উত্তরপ্রদেশকে নিরাপত্তা বলয়ে মুড়ে ফেলা হয়েছে। মোতায়েন রয়েছে সেনা ও আধা সেনা। রাজ্যে জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা। রামজন্মভূমি-বাবরি মসজিদ মামলার রায় যাই হোক না কেন দেশবাসীকে সংযত থাকার আহ্বান করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি ট্যুইটে জানিয়েছেন, 'অযোধ্যা মামলায় সুপ্রিম কোর্ট যা রায় দেবে, তাতে কারও হার জিত হবে না। দেশবাসীর কাছে আবেদন, এই মামলায় যা রায়ই আসুক, দেশের পরম্পরা অনুযায়ী শান্তি বজায় রাখাটাই আমাদের মূল কর্তব্য হবে।'
अयोध्या पर सुप्रीम कोर्ट का जो भी फैसला आएगा, वो किसी की हार-जीत नहीं होगा। देशवासियों से मेरी अपील है कि हम सब की यह प्राथमिकता रहे कि ये फैसला भारत की शांति, एकता और सद्भावना की महान परंपरा को और बल दे।
— Narendra Modi (@narendramodi) November 8, 2019
গত ২৭ অক্টোবর 'মন কি বাতে' প্রধানমন্ত্রী অযোধ্যা প্রসঙ্গ তোলেন। তিনি বলেন, ''২০১০ সালে যখন এলাহাবাদ হাইকোর্ট রাম জন্মভূমি নিয়ে রায় শুনিয়েছিল, সেই দিনগুলিকে একবার স্মরণ করুন। রায়ের আগে কোথা কোথা থেকে লোক চলে এসেছিল। বিভিন্ন গোষ্ঠী নিজেদের স্বার্থসিদ্ধার জন্য উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টা করছিল। পরিবেশ উত্তপ্ত করার জন্য কি কি ধরনের ভাষা বলা হচ্ছিল। কিছু বাক্যবাগীশ কী কী সব দায়িত্বজ্ঞানহীন কথা বলেছিল, আমাদের সব মনে আছে। এটা সাত থেকে ১০ দিন চলেছিল। কিন্তু যেই রায় হল, এক আশ্চর্য ও আনন্দদায়ক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। সরকার, রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন, বিদ্বজ্জন, বিভিন্ন সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি, সাধু সন্তরা অত্যন্ত সংযমী, সাবধানী ও পরিণত বক্তব্য পেশ করেছিলেন।আদালতের রায়কে অত্যন্ত গৌরবপূর্ণ সম্মান দিয়েছেন দেশবাসী এবং কোথাও উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হতে দেননি। এটা আমাদের শক্তি দেয়।''
এছাড়া, কলকাতা, বেঙ্গালুরু ও মুম্বাইতে বৈঠক করে দেশের সব প্রান্তের দলীয় কর্মকর্তাদের এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পদ্ম শিবিরের এক শীর্ষ নেতার কথায়, ‘অযোধ্যা রায়ের দিন দলের আচরণবিধি নিয়ে সজাগ করা হয়েছে। মন্ত্রীরা প্রধানমন্ত্রী বলা পর কথা বলতে পারবেন। আর দলের তরফে অমিত শাহের বলা পর কর্মকর্তাদের কথা বলতে বলা হয়েছে।’
কর্তারপুর করিডর ঘিরে আনন্দঘন পরিবেশ। তখনই অযোধ্যার বিতর্কিত জমি মামলার রায়দানকে ভালোভাবে দেখছে না পাকিস্তান। পাক বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি জানিয়েছেন, 'এই বিষয়টি অত্যন্ত অসংবেদশীল।' পুরো ঘটনায় মর্মাহত তিনি।
এদিনই অযোধ্যা মামলায় ঐতিহাসিক রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট। অযোধ্যার বিতর্কিত জমি দেওয়া হল হিন্দুদের। অন্যদিকে, মসজিদ নির্মাণের জন্য বিকল্প জমি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। অযোধ্যার ঐতিহাসিক রায়ে একমত সুপ্রিম কোর্টের ৫ বিচারপতিই। মন্দির নির্মাণের জন্য ৩ মাসের মধ্যে ট্রাস্ট তৈরি করতে কেন্দ্রকে নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের।
বিস্তারিত পড়ুন
অযোধ্যা রায়কে স্বাগত জানিয়ে দেশের সব ধর্ম-জাতির মানুষকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আবেদন জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। তাঁর মতে, 'এই রায় ভারতের একতা, অখণ্ডতা ও মহান সংস্কৃতিকে আরও শক্তিশালী করবে।'
'অযোধ্যা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায় প্রয়াত অটল বিহারী বাজপেয়ীর প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন। প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী রামজন্মভূমি নিয়ে ধর্ম নিরপেক্ষ রায় চেয়েছিলেন। বাজপেয়ীজীই প্রথম ব্য়ক্তি যিনি মসজিদ নির্মাণের জন্য পৃথক জমির কথা বলেছিলেন। বিজেপি কোনও দিনই মুসলিমদের অস্তিত্ব ও বিশ্বাসকে ভাঙতে রাজি ছিল না। কোর্ট আজ সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডকে পৃথক জমি দেওয়ার কথা বলেছে, যা প্রমাণ করে এক জাতি হিসাবে ভারতীয়রা কতটা মাহান। অমি এই রায়কে সমর্থন করি। আবেদন করছি মন্দির নির্মাণে সরকার দ্রুত উদ্যোগ নিক।' অযোধ্যা মামলার সুপ্রিম রায়ের পর এই বক্তব্যই জানান প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও বাজপেয়ীর ঘনিষ্ট বন্ধু কবিন্দ্র পুরকায়স্থ।
'অযোধ্যা রায় বিচারবিভাগের প্রতি মানুষের আস্থা নতুন করে সুদৃঢ় করবে।' সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরই ট্যুইটে জানালেন প্রধানমন্ত্রী।
অযোধ্যা মামলার সুপ্রিম রায়কে স্বাগত জানিয়েছে কংগ্রেস। ধর্মনিরপেক্ষ, সংবিধানের প্রতি আনুগত্য ও শান্তি-সম্প্রীতি বজায় রাখতে দলের নেতাদের এই রায় মান্য করার কথা বলেছে হাত শিবির। কংগ্রেসেরর তরফে বলা হয়য়েছে, ' আমাদের কর্তৃব্য দেশে শান্তি ও অহিংসা বজায় রাখা। হাজার বছরেরও বেশি সময়ের রীতি মেনে আমাদের একতা, সম্প্রীতি ও পারস্পরিক শ্রদ্ধা মেনে চলা প্রয়োজন।'
বহু বিতর্কিত অযোধ্যা মামলার রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট। কিছুক্ষণের মধ্যেই তা সর্বোচ্চ আদালতের ওয়েবসাইটে আপলোড করা হতে পারে। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানতে পেরেছে সুপ্রিম কোর্টের আযোধ্যা রায় লিপিবদ্ধ হয়েছে মোট ৯০৬ পাতায়।
অযোধ্যা মামলায় নির্মোহী আখড়ার দাবি খারিজ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। রায়দান শেষে সংগঠনের তরফে কার্তিক চোপড়া বলেন, 'সুপ্রিম কোর্ট আমাদের গত দেড়শো বছরের লড়াইকে স্বীকৃতি দিয়েছে। উপযুক্ত সংখ্যক প্রতিনিধিত্ব করতে দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রকে মন্দির নির্মাণেও ট্রাস্ট গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে সুপ্রিম কোর্টের প্রতি নির্মোহী আখড়া কৃতজ্ঞ।'
সুপ্রিম কোর্টের অযোধ্যা রায় নিয়ে 'সন্তুষ্ট নয়' সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড। পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে ভাবচিন্তা করা হবে বলে জানানো হয়েছে সংগঠনের তরফে। আদালতে সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডের তরফে প্রতিনিধিত্ব করা জেড জিলানির কথায়, 'আমরা সুপ্রিম কোর্টের রায়কে সম্মান করি। তবে, অযোধ্যা মামলার রায়ে আমরা সন্তুষ্ট নয়। পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে আমরা অবশ্যই ভাবনাচিন্তা করবো।'
* অযোধ্যার বিতর্কিত জমি দেওয়া হোক রাম জন্মভূমি ট্রাস্টকে।
* ২.৭৭ একর বিতর্কিত জমি রামলালাকে মঞ্জুর করেছে সর্বোচ্চ আদালত।
* মন্দির নির্মাণের জন্য আগামী তিন মাসের ভেতর প্রকল্প তৈরি করে মন্দির নির্মাণের জন্য ট্রাস্ট গঠন করা হোক। কেন্দ্রকে নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের।
*অযোধ্যায় এক উপযুক্ত জায়গায় পাঁচ একর জমির উপর মসজিদ নির্মাণ হোক।
* সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড বাইরের অংশের মালিকানা প্রমাণে ব্যর্থ
অযোধ্যার বিতর্কিত জমি দেওয়া হোক রাম জন্মভূমি ট্রাস্টকে। অযোধ্যায় মসজিদ নির্মাণের জন্য মুসলিমদের বিকল্প জমি দেওয়া হোক। ঐতিহাসিক রায় দিতে গিয়ে সর্বসম্মতিক্রমে জানাল সুপ্রিম কোর্টে ৫ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ।
বাবরি মসজিদের মধ্যে ১৯৪৯ এর ২২-২৩ ডিসেম্বর রাতে মূর্তি স্থাপণ করা হয়েছিল, নাকি, মূর্তি আগে থেকেই ছিল, এই প্রশ্নে এলাহাবাদ হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণকে স্বীকৃতি দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। সুপ্রিম কোর্ট এদিন জানায়, ২-২৩ ডিসেম্বর রাতেই মসজিদের কেন্দ্রীয় গম্বুজের ভিতর মূর্তি স্থাপণ করা হয়েছিল।
অযোধ্যা রায় দিতে গিয়ে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, এলাহাবাদ হাইকোর্ট সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড ও নির্মোহী আখড়ার আর্জি খারিজ করার পরও তাদের মধ্যে জমির অংশ সমানভাবে ভাগ করার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তা অযৌক্তিক। শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, গোটা জমিটিকে সামগ্রিকভাবে দেখে বিবেচনা করতে হবে।
সুপ্রিম কোর্ট বলে বিতর্কিত জমিতে তাদের মালিকানা প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছে। রায় পড়তে গিয়ে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি।
সুপ্রিম কোর্ট জানাচ্ছে বিকল্প জমি মুসলিমদের দেওয়া উচিত। মসজিদ জন্যই এই বিকল্প জমি দেওয়া হোক বলে জানিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত।
রায়দানের সময় বিচারপতিরা জানিয়েছেন, বিশ্বাস যে অযোধ্যায় রাম জন্মেছিলেন এবং তা 'অবিতর্কিত' (ইনডিসপুটেবেল)। শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, 'আস্থা বিশ্বাসকারীর ব্যক্তিগত বিষয়... হিন্দুদের এই আস্থা খারিজ করার মতো কোনও প্রামাণ সামনে আসেনি।
পাঁচ বিচারপতি একমত হয়েছেন অযোধ্যা মামলার রায়জানের জন্য। প্রধান বিচারপতি গগৈ একথা জানিয়েছেন। শিয়া সেন্ট্রাল ওয়াকফ বোর্ডের আবেদন খারিজ করে দেওয়া হয়। নির্মোহী আখড়ার দাবিও খারিজ করে দেওয়া হয় সুপ্রিম কোর্টের তরফে। আর্কিওসজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার রিপোর্ট অমান্য করা যাবে না বলে জানিয়েছেন বিচারপতিরা।
রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায় আজ। ২০১০ সালে এলাহাবাদ হাইকোর্টের তিন বেঞ্চের রায়ের বিরুদ্ধে আবেদনের ভিত্তিতে এই রায় দেবে শীর্ষ আদালত। বিচারপতি শিবগত উল্লা খান, বিচারপতি ধরমবীর শর্মা এবং বিচারপতি সুধীর আগরওয়াল রায় দিয়েছিলেন, অযোধ্যার বিতর্কিত ২.৭৭ একর জমি ভগবান রামলালা বিরাজমন, নির্মোহী আখড়া এবং সুন্নি সেন্ট্রাল ওয়াকফ বোর্ডের মধ্যে সমান তিন ভাগে ভাগ করে দেওয়া হোক।
এই রায় দেবার সময়ে এলাহাবাদ হাইকোর্ট এই মামলার সঙ্গে যুক্ত ৩০টি প্রশ্নের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ৮টি বিষয় দেখেছিল। যে আটটি বিষয়ে হাইকোর্ট আলোচনা করেছিল, যা সুপ্রিম কোর্টের আবেদনের কেন্দ্রীয় বিষয়ও বটে, সেগুলি একবার দেখে নেওয়া যাক। বিস্তারিত পড়ুন...
অযোধ্যা মামলার রায়দান ঘিরে উত্তেজনা বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে দেশবাসীকে মহাত্মা গান্ধীর আদর্শ স্মরণ করালেন কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। তিনি বলেন, 'ভারত মহাত্মী গান্ধীর দেশ। আমাদের কর্তৃব্য দেশে শান্তি ও অহিংসা বজায় রাখা। হাজার বছরেরও বেশি সময়ের রীতি মেনে আমাদের একতা, সম্প্রীতি ও পারস্পরিক শ্রদ্ধা মেনে চলা প্রয়োজন।'
অযোধ্যা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায় সবার মেনে চলা উচিত বলে জানিয়েছেন অযোধ্যা রাম মন্দিরের অস্থায়ী প্রধান পুরোহিত মহন্ত সত্যেন্দ্র দাস। তাঁর কথায়, 'প্রধানমন্ত্রী সঠিক বলেছেন, অযোধ্যা মামলায় সুপ্রিম কোর্ট যা রায় দেবে, তাতে কারও হার জিত হবে না।'
অযোধ্যা রায়ের আগে উত্তরপ্রদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেন দেশের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। শুক্রবার উত্তরপ্রদেশের মুখ্যসচিব ও ডিজিপির সঙ্গে এ নিয়ে বৈঠক করেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যসচিব রাজেন্দ্র তিওয়ারি ও ডিজিপি ওম প্রকাশ সিংকে নিজের চেম্বারে ডেকে পাঠিয়ে নিরাপত্তা ও আইন- শৃঙ্খলা নিয়ে আলোচনা করেন প্রধান বিচারপতি। উল্লেখ্য, এই মামলার গুরুত্ব বিশ্লেষণ করে অযোধ্যা ও উত্তরপ্রদেশের সংবেদনশীল অঞ্চলগুলির সুরক্ষা নিশ্চিত করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে প্রায় ৪ হাজার আধা-সামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়। উত্তরপ্রদেশজুড়ে জারি রয়েছে ১৪৪ ধারা। শনিবার থেকে সোমবার পর্যন্ত রাজ্যের সব স্কুল, কলেজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ, হনুমান মন্দির, বাস, গাড়ি, শহরের প্রতিটি কোণে কোণে মোতায়েন করা হয়েছে উর্দিধারী পুলিশ এবং র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স (র্যাফ)।
আরএসএস প্রধান মোহন ভগবত আজ দুপুর ১টায় সাংবাদিক বৈঠক করবেন। দিল্লির কেশব কুঞ্জে হবে এই বৈঠক। দুপুরেই সাংবাদিকক বৈঠকের ডাক দেওয়া হয়েছে অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল'বোর্ডের তরফেও। অযোধ্যা মামলার রায় নিয়ে সতর্ক বিজেপি। দল আগেই নেতাদের সংযত থাকার পরামর্শ দিয়েছে। রায় দেখে প্রধানমন্ত্রী ও বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ প্রথম বক্তব্য রাখবেন। তারপরই দলের নেতাদের কথা বলতে বলা হয়েছে। সঙ্ঘ পরিবারও সংগঠনের কার্যকর্তাদের চুপ থাকার নির্দেশ দিয়েছে। বাতিল করা হয়েছে সংগঠনের অন্যান্য সব কর্মসূচি। অযোধ্যা রায় যাই হোক না কেন প্রত্যেকের তা মেনে চলা উচিত বলে জানিয়েছেন মোহন ভগবত।